কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলা আগানগর ইউনিয়নের জগমোহনপুর এলাকা থেকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ওই এলাকার তোতা আলীর ছেলে আমির আলী (৬৫) ও তার সহধর্মিণী সমেলা (৫৫)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আগানগর ইউনিয়নের জগমোহন পুর এলাকার আমির আলীর ছেলে সাব্বিরের সাথে ৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ভুক্তভোগী গৃহবধুর। সংসারের তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। গত ২ বছর আগে পরিবারের স্বচ্ছতা ফেরাতে প্রবাসে চলে যায় সাব্বির। ছেলে প্রবাসে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তার উপর শারীরিক নির্যাতন। বিভিন্নভাবে চলে অত্যাচার অবিচার। গত তিন বছর আগে শ্বশুর আমির আলী তার পুত্রবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি স্থানীয়রা পারিবারিক শালিসির মাধ্যমে পুত্রবধূর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটমাট করে।
এদিকে ১২ মার্চ রাতে পুত্রবধূর শয়নক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে শ্বশুর আমির আলী। এসময় ডাকচিৎকার শুরু করলে শ্বশুর পালিয়ে যায়। বিষয়টি শাশুড়ি সমেলা বেগমকে অবগত করলে তিনি উল্টো পুত্রবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে। মারধর করে একপর্যায়ে চোখে মুখে জখম করে। পরবর্তী ১৬ মার্চ রাতে ভৈরব থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা ও মারধর করে জখমের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত গৃহবধূ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, আমার শ্বশুর আমার বিয়ের পর থেকেও আমার প্রতি কুদৃষ্টি দেয়। তিন বছর আগে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে কোন রকম প্রাণে বেঁচে যাই। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি মিমাংসা করে। এরপর থেকে আমাকে প্রায় সময় শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। ১২ মার্চ রাতে আমি নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ আমার শ্বশুর ঘরে ঢুকে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি শাশুড়িকে বিষয়টি জানালে তিনিও আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত করে। পরে আমি কোন রকম প্রাণে বেঁচে আমার বড় বোনের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেই ও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেই। আমি আমার লম্পট শ্বশুর ও তাকে সহায়তাকারী আমার শাশুড়ির বিচার চাই। কোন পুত্রবধূ যেন আমার মতো নির্যাতনের শিকার না হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে জানা যায় গৃহবধুর শ্বশুর আমির আলী লম্পট প্রকৃতির লোক। পরেই তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।