এইমাত্র
  • ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন ২ ফায়ার ফাইটার: মহাপরিচালক
  • চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ১৮ নভেম্বর
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে উপহারের চাল পাঠাল অন্তর্বর্তী সরকার
  • দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম সোনার
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫
  • নিজ গ্রামেই পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৩০
  • আবারও আইসিসির কাছে নালিশ করল পাকিস্তান
  • রাকসু নির্বাচন পেছাল
  • জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার হলেন ‘ছাগল-কাণ্ডের’ ইমরান
  • টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
  • আজ মঙ্গলবার, ৮ আশ্বিন, ১৪৩২ | ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    তরমুজের শহর গলাচিপা, খ্যাতি ছড়িয়েছে দেশজুড়ে

    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

    তরমুজের শহর গলাচিপা, খ্যাতি ছড়িয়েছে দেশজুড়ে

    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

    পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা গলাচিপা ধীরে ধীরে "তরমুজের শহর" হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নদী ও চরাঞ্চলবেষ্টিত এ উপজেলার উর্বর মাটিতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ তরমুজ উৎপাদিত হয়। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগবালাই কম থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাপারীরা গলাচিপার তরমুজ কিনতে ছুটে আসছেন। ফলে কৃষকদের আশা, এবার তরমুজের বেচাকেনা সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

    গলাচিপার বিভিন্ন চরাঞ্চলের কৃষকরা এবার আগাম জাতের তরমুজ চাষ করে ভালো লাভের আশা করছেন। উপজেলার গোলখালী, পানপট্টি, রতনদী তালতলী, চর কাজল, চর বিশ্বাস, চর কুকরী-মুকরীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর তরমুজ চাষ হয়েছে। আগাম তরমুজ চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। কৃষক মো. খোকন (৪৭) জানান, তিনি ১২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন, যেখানে প্রতি বিঘায় ৮৫ হাজার টাকা খরচ হলেও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন। কৃষক জহিরুল ইসলাম (৫৫) জানান, তার সাত বিঘা জমিতে ভালো ফলন হলেও এক অজানা রোগে কিছু গাছ মরে গেছে। অপরদিকে, কৃষক কামাল হোসেন (৩৬) জানান, তিনি দেরিতে তরমুজ চাষ করেছেন, যাতে বাজারে ভালো দাম পান। তবে তিনি সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা উদ্বিগ্ন।

    তরমুজ মৌসুমে গলাচিপার পরিবহন খাতে বিশাল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়। ট্রলার চালক, ট্রাক শ্রমিক, এজেন্ট, হেলপার-সব মিলিয়ে হাজারো মানুষ এ সময় সরাসরি কাজের সুযোগ পান।

    পটুয়াখালী জেলার সবচেয়ে বড় তরমুজ ঘাট গলাচিপার আমখোলা-মুশুরীকাঠি। এ ঘাট থেকে ব্যবসায়ীরা তরমুজ কিনে রাজধানী সহ বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠায়। এখান থেকেই জেলার অধিকাংশ তরমুজ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মুশুরীকাঠি থেকে হরিদেপুর পর্যন্ত সাতটি ঘাট করা হয়েছে, যেখান থেকে প্রতিদিন ১৫০-২০০ ট্রাক তরমুজ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। পুরো গলাচিপা উপজেলা থেকে প্রতিদিন ২০০-৩০০ট্রাক তরমুজ রওনা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারের উদ্দেশ্যে।

    ঘাট পরিচালক মো. নাসির গাজী জানান, প্রতিদিন ঘাটে ১৫০০ শ্রমিক কাজ করেন। তরমুজের মৌসুমজুড়ে এ ঘাটগুলোতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নদীপথে তরমুজ বোঝাই করা ট্রলার এসে নোঙর করে এই ঘাট গুলোতে। ট্রলার থেকে তরমুজ ট্রাকে উঠানোর কাজ করে ঘাট শ্রমিকরা। প্রতিপিচ তরমুজ ট্রলার থেকে ট্রাকে তুলতে নেয়া হয় ১ টাকা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই কর্মযজ্ঞ। এ কাজে সবচেয়ে বেশি অংশ নেয় স্থানীয় যুবকরা।

    তরমুজ মৌসুম ঘিরে গলাচিপার তরমুজ ঘাটগুলোতে অস্থায়ী দোকানের ছড়াছড়ি। বিভিন্ন চর থেকে আসা কৃষক, শ্রমিক ও ব্যাপারীদের কথা মাথায় রেখে স্থানীয়রা গড়ে তুলেছেন অস্থায়ী হোটেল, চায়ের টং দোকান ও খাবারের দোকান।

    ভাসমান হোটেল ব্যবসায়ী মোসামাৎ আকলিমা বেগম (৩৬) জানান, তরমুজের মৌসুম শুরু হলে তিনি তার ছোট্ট খাবারের হোটেলটি চালু করেন। প্রতিদিন ২০-২৫ কেজি চালের ভাত বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে কোহিনুর (৪০), সেফালি (৪৩) সহ আরও অনেকে হোটেল, চায়ের দোকান এবং অন্যান্য পণ্য বিক্রির জন্য অস্থায়ী দোকান খুলেছেন।খাবারের পাশাপাশি পান-সিগারেটের দোকান, ঠান্ডা পানীয় ও বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানও বসে ঘাটের আশপাশে। শ্রমিকরা কাজের ফাঁকে এসব দোকান থেকেই চা ও হালকা খাবার সংগ্রহ করেন। রাতে থাকার জন্য রয়েছে ব্যবস্থা। ফলে শুধু তরমুজ নয়, এ মৌসুমে গলাচিপার ঘাটগুলো একটি ছোটখাটো বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

    ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারী রাজু আহমেদ (৪৮) জানান, তিনি চর কাজল থেকে তরমুজ কিনছেন। ক্ষেত থেকে ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি তরমুজে ৩২-৩৫ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে আগাম তরমুজ বেশি আসায় বাজার কিছুটা কমে গেছে। তার মতে, গলাচিপায় কোথাও কোনো চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়নি, যা ব্যবসার জন্য ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, তরমুজ ঘাটগুলোতে এই মৌসুমে উৎসব লেগে থাকে।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরজু আক্তার বলেন, “গলাচিপার বিভিন্ন এলাকায় তরমুজ চাষ হয় এবং এখানকার ভূমি এ চাষের জন্য উপযোগী। তবে গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা কম জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এ বছর ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম। এক জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করলে রোগবালাই বেশি হয় এবং ফলন কমে যায়। কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিচ্ছেন, একই জমিতে বারবার তরমুজ চাষ না করে ফসলের রোটেশন (ফসল পরিবর্তন) করে বছরে একটা ডাল ফসল দিলে বা এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলন আরও ভালো হবে।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় গত বছর ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হলেও এ বছর তা বেড়ে ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর হয়েছে, যা ৫,০০০ হেক্টর বেশি। তরমুজের বাণিজ্যিক মূল্য এবার ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। এ বছর গ্রেট ওয়ান, বিগ ফ্যামেলি, আনন্দ, আনন্দ সুপার, সুইট ফ্যামিলি, লাকী ড্রাগন, এশিয়ান-৩ ও ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ বেশি হয়েছে। কৃষক যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি রয়েছে।

    এদিকে গলাচিপার কৃষকরা জানিয়েছেন, তরমুজ চাষে বিনিয়োগ বেশি হলেও লাভও ভালো। যদি সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যায়, তবে আরও বড় পরিসরে চাষ সম্ভব হবে।

    গলাচিপা শুধু তরমুজ চাষের জন্য নয়, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমেও ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তা পেলে গলাচিপা হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় তরমুজ উৎপাদন ও সরবরাহ কেন্দ্র। এবারের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি।

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    রাতের আঁধারে বিএসএফের বেড়া নির্মাণ, প্রতিবাদে বিজিবির পতাকা বৈঠক

    দিনাজপুরের বিরামপুরের কাটলা ইউনিয়নের খিয়ারমাহমুদপুর সীমান্তে রাতের আঁধারে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় বাঁশের বেড়া নির্মাণ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এদিকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে সীমান্ত থেকে বেড়া সড়ানোর কথা জানিয়েছে বিজিবি।রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে জয়পুরহাট ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন বিরামপুর সীমান্তের ২৯১ মেইন পিলার ২৯ নং সাব পিলার এলাকা থেকে ১০ গজ দূরে বাঁশ দিয়ে বেড়া নির্মাণ করে বিএসএফ। এ ঘটনায় সীমান্তে আজ বিকাল ৫টা নাগাদ দু’বাহিনীর মাঝে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য শুকুর আলী সরকার বলেন, সীমান্তের খেয়ারমাহমুদপুর গ্রামে রাতের অন্ধকারে বিএসএফ সদস্যরা আমাদের জমির ওপর দিয়ে বেড়া দিয়েছে বলে শুনেছি। সারা রাত ধরে সীমান্তে তারা বেড়া দিল কিন্তু তাদেরকে কোনো বাধা দেয়া হয়নি। আজকে এই গ্রামে বেড়া দিয়েছে কালকে আরেক গ্রামে বেড়া দিবে। সেই বেড়া যেন দ্রুত উঠিয়ে নেয়া হয় সে ব্যবস্থা নিতে বিজিবিকে আহ্বান জানাচ্ছি।জয়পুরহাট ২০বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুর দৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তের ভারতীয় অংশের কৃষকরা তাদের জমির ধান রক্ষায় রাতের আঁধারে বাঁশের বেড়া নির্মাণ করেছে। এটি উঠিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করছি সেই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এনআই

    যবিপ্রবি শিক্ষার্থী অন্তু অনলাইন জুয়ার অভিযোগে ডিবি পুলিশের হাতে আটক

    যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আশিকুল হক অন্তুকে ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ আটক করেছে।অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিবি পুলিশের এএসআই আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। আশিকুল হক অন্তু ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া আমতলী গ্রামের বাসিন্দা ও যবিপ্রবি ২০১৮-১৯ সেশনের সিএসই বিভাগের ছাত্র।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে আটকের সময় অন্তুসহ আরও ৩/৪ জন ডিভাইসের মাধ্যমে অবৈধ অনলাইন জুয়ায় লিপ্ত ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও অন্তুকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২৫ আল্ট্রা মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে মোবাইলের বিভিন্ন লেনদেন ও ট্রানজেকশন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তিনি একজন অবৈধ এজেন্ট হিসেবে জুয়া পরিচালনা করতেন এবং ‘আরমান খান’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিতেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, আশিকুল হক অন্তু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী ছিলেন। এর আগে মাদকের সঙ্গেও জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে শহিদ মশিউর রহমান হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।এনআই

    কিশোরগঞ্জে টাকার বিনিময়ে যুবশক্তির কমিটি গঠন করার অভিযোগ

    ‘গণঅভ্যুত্থানের আহত ও শহীদদের আত্মত্যাগের সাথে বেইমানি করে টাকার বিনিময়ে যুবশক্তির কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন নবগঠিত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াজ ইবনে জসিম। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা শহরে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাকে যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হলেও পুরো কমিটিই বিতর্কিত। আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি, অথচ বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের এনে বড় পদে বসানো হয়েছে। মুখ্য সংগঠক আলিমুল হক দীর্ঘদিন সেচ্ছাসেবক দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। টাকার বিনিময়ে এবং কিছু প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় হঠাৎ করে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। হুঁশিয়ারি দিয়ে ইয়াজ ইবনে জসিম বলেন, ‘অবিলম্বে এই কমিটি স্থগিত না করা হলে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হব।’ নবগঠিত কমিটির শীর্ষ দুই পদে থাকা আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ও মুখ্য সংগঠক আলিমুল হক আলিমের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ উঠেছে, তারা অতীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকারও অভিযোগ তোলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আইনুল ইসলাম ঝলক, জাতীয় যুবশক্তি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক এস. এম. রাজিব, ওয়ারিয়র্স অফ জুলাই সদস্য মামুন মিয়া, যুগ্ম সদস্য সচিব শুভসহ কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা। আইনুল ইসলাম ঝলক বলেন, ‘এই কমিটিতে আওয়ামী লীগের বড় বড় নামধারী ও আত্মীয়-স্বজনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। কমপক্ষে ৭-৮ জন আওয়ামী লীগপন্থি এতে অন্তর্ভুক্ত। এমনকি আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন যে আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এভাবে যুবশক্তিকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।’ এদিকে একই দিনে বিকেল জেলা শহরের শেরাটন হোটেলের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় নবগঠিত জাতীয় যুবশক্তি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা কমিটির পরিচিতি সভা। এসময় অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমার চাচাতো ভাই মাহমুদ পারভেজ কিশোরগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র ছিলেন। আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তবে কখনো কোনো পদে ছিলাম না। ২০০৭ সাল থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে দূরে ছিলাম। বটতলা বাজার কমিটির পদে থাকার কারণে সাবেক সাংসদ রেজওয়ান আহমেদ তৌফিকের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছে। সেটাকেই এখন ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে।” মুখ্য সংগঠক আলিমুল হক জানান, ‘তিনি দীর্ঘদিন ধরে মহিনন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারের ইজারাদার। এ কারণে বহু অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তার ছবি তুলতে হয়েছে। আর সেই ছবিগুলো দিয়েই এখন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ জাতীয় যুবশক্তি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মানিক মিয়া এবং সিনিয়র সদস্য সচিব কাউসার মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মো. রুবেল আব্দুল্লাহর পিতা মো. আজহারুল ইসলাম। এ ছাড়া জাতীয় যুবশক্তির জেলার নেতৃবৃন্দও অংশ নেন।এনআই

    বরিশালে থানা থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি এখনও গ্রেপ্তার হয়নি!

    মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত জয় সাহা নামে এক আসামি বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা হেফাজতে থাকা হাজত থেকে পলায়নের ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেও ঘটনাটি লুকিয়ে রাখতে পারেনি। পালিয়ে যাওয়া আসামি জয়কে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বরিশালের সচেতন মহল জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, দায়িত্বে থাকা পুলিশের যে সদস্যের কাছ থেকে আসামি পালাবে, তাকেই বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। পুলিশ হেফাজত থেকে যাতে আসামি পালানোর ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্কতার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন বরিশালের সচেতন মহল। শুধু তাই নয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ২০১৪ সালের মে ও আগস্ট মাসে জারি করা হয়েছিল একটি পরিপত্র। সেখানে আরো উল্লেখ ছিল- আসামি গ্রেপ্তারের পর আদালতে আনা-নেওয়া, কারাগারে নেওয়া বা হাজতে থাকার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন ও তদারকি কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বরিশালে তার কোনটাই বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়নি। জানা গেছে, রোববার বিকেলে জয় সাহাকে গ্রেফতার করে থানার হাজতে রাখা হয়। রাতের খাবার বিতরণের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কনস্টেবল হাজতের গেট খোলেন। সে সুযোগে জয় সাহা কনস্টেবলকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকার পরও হাজতখানা থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এতে জনগণের মাঝে নিরাপত্তাহীনতার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সুমন আইচ বলেন, ‘কনস্টেবলের অসতর্কতার কারণে জয় সাহা পালিয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। শীঘ্রই জয় সাহাকে আটক করা হবে।’ তবে সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি জয় সাহাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় হাজতখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পুলিশি তদারকির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আশপাশের এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেছে পুলিশ। তবে এই বিষয়ে জানতে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এফএস

    চকরিয়ায় পুলিশের অভিযানে আটক ৩

    চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালায় ডাকাতির সময় উখিয়া বালুখালীর যুবক ২ সন্তানের জনক মাহমুদুল হককে হত্যার ঘটনায় অবশেষে চকরিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এ সময় দায়িত্বরত ওসি তৌহিদুল আনোয়ার আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাহাড়ের গহীন জঙ্গলের ভিতরে সিনিয়র সহকারী (চকরিয়া সার্কেল) পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার ও উপ-পরিদর্শক আরকানুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ৩ জনকে আটক করা হয়।এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি রশি, ২টি স্মার্ট ফোন, ২টি বাটন ফোন, ১টি কালো রঙয়ের মানিব্যাগ এবং ১টি হেলমেট তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।এদিকে আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় সম্প্রতি মহাসড়কে রশি টানিয়ে ডাকাতিকালে খুনের ঘটনাসহ সার্বিক বিষয়ে প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।এ সময় চকরিয়া থানার আওতাধীন যেকোন ধরনের অপরাধের তথ্য দিতে সাংবাদিক ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) অভিজিৎ দাশ এবং চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার। এছাড়া আটককৃত ৩ জনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।এফএস

    গজারিয়ায় অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় চালক নিহত, হেলপার আহত

    ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশে অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় চালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গাড়ির হেলপার গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মহাসড়কের গজারিয়ার মধ্যমকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাউশিয়া এলাকার নিউহোপ ফিড ইন্ডাস্ট্রির একটি নসিমন গাড়িতে করে মুরগির খাবার নিয়ে ঢাকা মুখী লেনে উল্টো পথে চরচাষি যাচ্ছিলেন চালক ও তার সহযোগী। এ সময় কুমিল্লা থেকে ছেড়ে আসা একটি অজ্ঞাত গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে নসিমনে থাকা দুইজনই গুরুতর আহত হন।স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকা নেওয়ার পথে চালক মো. রুবেল (২৫) মারা যান। রুবেল ভবেরচর ইউনিয়নের চরপাথালিয়া গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে। আহত হেলপার মো. সুমন (৩০) বাউশিয়া ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের আ. বাতেনের ছেলে, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ শওকত হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাত্ক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ঘাতক গাড়ি শনাক্তে কাজ চলছে।এসআর
    Loading…