দরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর আওতায় ওএমএসের চালের বস্তায় এখনো লেখা আছে “ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ”।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে পৌর শহরের কেরানীবাড়ী মোড় এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরন করা খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর আওতায় ওএমএসের ভ্যানভর্তি চালের বস্তা আটক হয় স্থানীয় জনতার হাতে।
স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দিয়ে ঘন্টাখানেক ওই চাল আটকে রাখেন তারা। কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় চাল নিয়ে যায় অবৈধ চক্রটি।
জানা যায়, উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর আওতায় ২৪৫৩৯ হাজার উপকারভোগীর জন্য ৬৭৬ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ২৩ টি পয়েন্টের মধ্যে ১০টি পয়েন্টে ১৫ টাকা মুল্যে এ চাল বিক্রি শুরু হয়েছে।
দুপুরের দিকে ত্রিশাল পৌরসভার কেরানীবাড়ী মোড় এলাকায় স্থানীয় এলাকাবাসী ১৪ বস্তা সরকারী চালসহ একটি ভ্যানগাড়ী আটক করেন। পরে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালেও ঘন্টাখানেকের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হননি কোন কর্মকর্তা। পরে ওই কালোবাজারী আবুল স্থানীয়দের হুমকি ধামকি দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে চাল তার গোডাউনে নিয়ে যান বলে জানান স্থানীয়রা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় জনতার হাতে আটক ওএমএস এর সরকারি চালের বস্তাগুলোতে লেখা রয়েছে “ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ"। চাল বহনকারী ভ্যানচালক জানান, ত্রিশাল ইউনিয়নের পাঁচপাড়া চাল বিতরন কেন্দ্র থেকে এ চাল সংগ্রহ করেছে অবৈধ ওএমএসের চাল বেপারি আবুল হোসেন।
ঘন্টাখানেকের মধ্যে স্থানীয়রা কোন কর্মকর্তার উপস্থিতি টের না পেলেও এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ইলিয়াস আহমেদের ভাষ্য, সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক লাইলী আক্তারকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর দাবি করেন। শেখ হাসিনার শ্লোগান সম্বলিত বস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ওসিএলএসডিকে নির্দেশ দিয়েছিলাম লেখাটি মুছে ফেলে সরবরাহের জন্য। বাস্তবায়নের দায়িত্ব তিনি পালন করার কথা।
ধানীখোলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, শেখ হাসিনার লগো সম্বলিত কোন বস্তা আমার গোডাউন থেকে যায়নি। প্রতিটি বস্তার লেখা নিজ হাতে মুছে দিয়েছি।
তার বক্তব্য নেওয়ার পরপরই গোডাউনের লেবার আবুল কাশেমকে দিয়ে ফোন করানো হয় সংবাদ প্রকাশ না করতে এবং দেখা করতে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, আমি বিষয়টি শুনার পর খাদ্য কর্মকর্তাকে ব্যবস্থার নেয়া নির্দেশ দিয়েছি। যদি ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। শেখ হাসিনার শ্লোগানের ইউএনও বলেন, পুরাতন বস্তাগুলোর গায়ে ওই লেখাগুলো মুছে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। যদি মুছা না হয়ে থাকে তাহলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমআর