রোজার জন্য শেষ রাতে সেহরি খেতে হয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের শেষভাগে সেহরি খেতে বলেছেন। রোজার জন্য সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। যে ব্যক্তি তা ইচ্ছাকৃত না খায়, এ জন্য সে গুনাহগার হবে না।
এ কারণে যদি কেউ ফজরের পর জাগে আর সেহরি খাওয়ার সময় না পায়, তাহলে তার জন্য রোজা রেখে নেয়া জরুরি। এতে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
রসুল সা. বলেন, مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (বুখারি ১৯০১)
সেহরি খাওয়ার সময় হল মাঝ রাতের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত। আর মুস্তাহাব হল, ফজর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না হলে শেষ সময়ে সেহরি খাওয়া।
মহানবী সা.এর সাহাবিগণ খুব তাড়াতাড়ি সময় হওয়া মাত্র ইফতার করতেন, খুব দেরি করে সেহরি খেতেন। (বায়হাকি)
নবী কারিম সা. সেহরিকে বরকতময় খাবার বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন,تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةً তোমরা সেহরি খাও। কারণ, সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি ১৯২৩)
হযরত ইরবাজ বিন সারিয়াহ রা. বলেন, একবার রমাজানে আল্লাহর রসুল সা. আমাকে সেহরি খেতে ডাকলেন, বললেন, বরকতময় খাবারের দিকে এসো। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
সেহরিতে বরকত থাকার অর্থ হলো, সেহরি রোজাদারকে সবল রাখে। রোজার কষ্ট তার জন্য হাল্কা করে। এটাই শারীরিক বরকত। শরয়ি বরকত হলো, রসুল সা.-এর আদেশ পালন ও তার অনুসরণ।
মহানবী সা. সেহরির গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মাঝে পার্থক্য হল সেহরি খাওয়া। (মুসলিম ১০৯৬)
রসুল সা.-এর সেহরি ছিল খুব সাদামাটা। সেহরিতে তিনি দুধ ও খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। সেহরি সম্পর্কে আল্লাহর রাসুলের হাদিসে আছে। রসুল সা. বলেছেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের সেহরিতে বরকত দিন। (এরপর বলেন) তোমরা সেহরি গ্রহণ কর এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও, একটি খেজুর দিয়ে হলেও, আঙুরের কিছু দানা দিয়ে হলেও। নিশ্চয়ই ফেরেশতারা তোমাদের জন্য শান্তির দোয়া করবে। (জামে সুয়ুতি ৫০৭০)
নিয়মিত খাবারই মহানবী সা. সেহরি ও ইফতারে খেতেন। তবে খেজুর দিয়ে সেহরি ও ইফতার করা তিনি পছন্দ করতেন।
খেজুর দিয়ে সেহরি খাওয়াকে সেরা সেহরি বলেছেন মহানবী সা.। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, মহানবী সা. বলেন, نِعْمَ سَحُورُ الْمُؤْمِنِ التَّمْرُ খেজুর কতই না উত্তম সেহরি! (আবু দাউদ ২৩৪৫)
মহান আল্লাহ রমজানের মাহাত্ম্য, গুরুত্ব ও মর্যাদা উপলব্ধি করে ইবাদতে কাটানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।
এফএস