রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের ডোখলপাড়া গ্রামে এক শিশুর খেলার ছলে পাওয়া একটি কষ্টিপাথর এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় শহিদুল ইসলামের ছেলে রাব্বি (১০) প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে খেলছিল। খেলার সময় হঠাৎ সে মাটির নিচে একটি ভারী কালো পাথরের সন্ধান পায়। বাড়িতে এনে ওজন করতেই দেখা যায়, এটি ১১ কেজি ৫৯০ গ্রাম ওজনের একটি কষ্টিপাথর!
পাথরটি পাওয়ার পরপরই শহিদুল ইসলাম এবং তাঁর পরিবার বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। পরে তারা ভাগনদী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে অবহিত করলে তদন্ত কেন্দ্রের ইনস্পেক্টর আব্দুল করিম ঘটনাস্থলে এসে কষ্টিপাথরটি উদ্ধার করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং সংরক্ষণের জন্য রাজশাহী জাদুঘরে পাঠানো হবে।
কষ্টিপাথর সাধারণত দুর্লভ কালো রঙের একটি কঠিন পাথর, যা প্রাচীন যুগে ব্যবহার্য কাজে ব্যবহৃত হতো এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সাধারণত দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য সামগ্রীর অংশ বা প্রাচীন স্থাপত্যে ব্যবহার হতো হয়তো। এর সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অনেক।
গ্রামবাসীরা মনে করছেন, পাথরটি কোনো প্রাচীন স্থাপত্যের অংশ হতে পারে যা হয়তো সময়ের সঙ্গে মাটির নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। তারা কষ্টিপাথরটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশা করছে, প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে আরও তথ্য জানা যাবে।
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক আইন অনুযায়ী, যেকোনো প্রাচীন নিদর্শন বা মূল্যবান প্রত্নসম্পদ সরকারের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হয় এবং তা ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষণ বা বিক্রি করা নিষিদ্ধ। রাজশাহী জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হলে এটি গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে এবং দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে নতুন তথ্য উন্মোচন করতে পারে।
শিশু রাব্বির খেলার ছলে পাওয়া এই কষ্টিপাথর শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো এলাকার জন্য এক বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি আমাদের অতীত ঐতিহ্যের একটি নিদর্শন হতে পারে, যা গবেষণা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে নতুন দিক উন্মোচন করবে। স্থানীয়রা আশা করছেন, সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত চালাবে এবং ইতিহাসের নতুন পাতা উন্মোচন করবে।
এসআর