বরিশাল আদালতের প্রধান ফটকের মুখে প্রকাশ্যে দিনের বেলা পুলিশের সামনে বসে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে নাশকতা সৃষ্টির মতো ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে সচেতন মহল এবং সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দরা ।
অন্যদিকে সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের অপরাধীদের দায় দল নিবে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিএনপি নেতারা। পাশাপাশি তারা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহত দুই সাংবাদিকের খোঁজ খবরও নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি স্থানীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিক নুরুল আমিন রাসেল ও নুরুজ্জামানকে দেখতে যান বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন, সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, নুরুল আমিন প্রমুখ।
এসময় তারা আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং বলেন, সাংবাদিকরা কোন দলের হলে তাদের পাশে এসে আমরা দাঁড়াতাম না। আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার রয়েছি। কারও ব্যক্তিগত ঝামেলার দায় দল নিবে না। আর দলের নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ কোনো অন্যায় করে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরিশালের ঘটনা এরই মধ্যে কেন্দ্র অবগত হয়েছেন, তারাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে। তবে আপনারা (সাংবাদিকরা) গোটা দলকে দোষী করবেন না এটা আমাদের প্রত্যাশা। কারণ বিএনপি কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবে না।
এদিকে ঘটনার পরপরই বরিশাল মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন আহতদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। সেইসাথে সাংবাদিকদের ওপর হামলার এ ঘটনায় নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
মহানগর বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব এ্যাড. মীর জাহিদুল কবির জাহিদ ঘটনাস্থল এসে সাংবাদিকদের উপর হামলার দায় বিএনপি নিবে না বলে জানান এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থার জন্য সিনিয়র নেতাদের অবহিত করেছেন বলে জানান।
অপরদিকে আদালত প্রাঙ্গন ও তার সামনে দিনের বেলা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে নাশকতা সৃষ্টির মতো ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে সাংবাদিক মহল। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, সাংবাদিকরা কর্মক্ষেত্রে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মূখীন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আদালত প্রাঙ্গনে ও তার সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক একদল সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী ও ক্যামেরা ভাঙচুরের পর মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
দিনের বেলা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতির বিষয়টি দেখিয়ে দিয়েছে ছাত্রদলের ওইসকল নেতারা। পাশাপাশি আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সেইসাথে পুলিশের সামনে এ ঘটনা ঘটিয়ে সন্ত্রাসের জানান দিল হামলাকারীরা। পুলিশ এর দায় এড়াতে পারে না। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি যে সকল পুলিশ সদস্যের সামনে এমন নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
এনআই