এইমাত্র
  • জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
  • ঈদের দিনেও গাজায় ই’রায়েলি হামলা, নিহত ৬৪
  • ঈদে মুসলিমদের শুভেচ্ছা জানাল পুতিন
  • বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত
  • আতশবা‌জি ফোটাতে গিয়ে মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যু
  • সাত বছর পর পরিবারের সঙ্গে খালেদা জিয়ার ঈদ
  • সৌদির সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা
  • লন্ডনের কিংসমেডাও খোলা মাঠে ঈদের নামাজ পড়লেন তারেক রহমান
  • ঝালকাঠিতে কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
  • কালিয়াকৈর চন্দ্রায় ১৬ বছর পর ঈদযাত্রায় স্বস্তি
  • আজ সোমবার, ১৭ চৈত্র, ১৪৩১ | ৩১ মার্চ, ২০২৫
    শিক্ষাঙ্গন

    প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও সমাবর্তন পায়নি পাবিপ্রবি

    ক্যাম্পাস প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১৬ পিএম
    ক্যাম্পাস প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১৬ পিএম

    প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও সমাবর্তন পায়নি পাবিপ্রবি

    ক্যাম্পাস প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১৬ পিএম

    ২০০৮ সালের ৫ জুন দেশের ২৯তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। শুরু থেকেই উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

    তবে দীর্ঘ ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো সমাবর্তন আয়োজন করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ প্রদানের জন্য সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পাবিপ্রবির গ্র্যাজুয়েটরা এখনো সেই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাননি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সমাবর্তনের আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছেন।

    শিক্ষার্থীদের মতে, সমাবর্তন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটি তাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি, আত্মবিশ্বাসের প্রতীক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাবিপ্রবি প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাবর্তনের তারিখ নির্ধারণ করা।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা সবাই সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন।

    সমাবর্তন না হওয়ায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এই অনুষ্ঠান কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি শিক্ষার্থীদের অর্জনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও সমাবর্তন না হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

    ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের গ্র্যাজুয়েট মো. শামীম হাসান বলেন, “প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হওয়া জরুরি। আমাদের শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি লাভের যে স্বীকৃতি বা সার্টিফিকেট প্রাপ্তি এবং এই মুহূর্তকে যে আমরা স্মৃতি হিসেবে রেখে দেব, সেইসাথে সমাপ্তিটা সুন্দর হবে-এই জন্যেই সমাবর্তন হওয়াটা জরুরি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও আমরা ১০ বছর আগে বের হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সমাবর্তনের মুখ দেখতে পাইনি। এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি এটাকে প্রশাসনিক ব্যর্থতাই বলব।”

    অন্যদিকে, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের গ্র্যাজুয়েট সুমাইয়া হক বলেন, “প্রত্যেক শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চায়। সমাবর্তন সেই সুযোগ দেয়। কিন্তু বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে, সমাবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি প্রশাসন থেকে একটি সুনির্দিষ্ট তারিখও ঘোষণা করা হচ্ছে না। আমরা কি চিরকাল অপেক্ষায় থাকব?”

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, চার বছরের স্নাতক শেষ করে একদিন গাউন ও টুপি পরে বন্ধুদের সঙ্গে স্মৃতিময় মুহূর্ত কাটানোর স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। আমাদের পরিচিত অনেকেই দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবর্তনের মাধ্যমে সনদ পেয়েছে, আমরা এখনও সেই স্বপ্নই দেখে যাচ্ছি। শুধু পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের কেন এভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে? আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

    শিক্ষকরাও মনে করেন, নিয়মিত সমাবর্তন আয়োজন না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দুর্বলতার পরিচায়ক। জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন, যা শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। আমি যতদূর জানি, এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত স্থাপনা, জায়গার সংকট ও নানা দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকায় সমাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। আশা করি, নবনির্মিত কনভেনশন হলসহ বিভিন্ন স্থাপনাগুলো চালু হয়ে গেলে খুব দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাবর্তন আয়োজন করতে পারবে। সেইসাথে অনেক ফ্যাকাল্টি মেম্বার এখন এই বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে আসছেন বলে জানি।

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. আবদুল আওয়াল নয়াদিগন্তকে বলেন, এর আগে বিভিন্ন কারণবশত হয়তো এতদিনেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হয়ে ওঠেনি। আমরা স্বল্প সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আসলেও এতটুকু বলতে পারি—আমরা অবশ্যই সমাবর্তনের উদ্যোগ নেব। যেহেতু সমাবর্তন একটি বড় আয়োজন, এ মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে সময় বলতে পারছি না। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা এই আয়োজন করতে পারব।

    শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও আশা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত সমাবর্তনের আয়োজন করবে এবং এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাবে।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…