নড়াইলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। কম খরচে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলের চাষে ঝুঁকছে জেলার কৃষকেরা। ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় দিন দিন এর চাষ বাড়ছে বলে মনে করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ক্ষেতজুড়ে সূর্যমুখী বাগানের হলুদ সবুজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভীড় করছে শত শত সৌন্দর্য পিপাসু। এছাড়া এসব বাগানকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র।
নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর চাঁচড়া মাঠে যেদিকে তাকাই শুধু হলুদ গালিচার মতো সূর্যমুখী ফুলের খেত। এ ফসলের মাঠে যেন চারিদিক হলুদের সমারোহ। দু-চোখ জুড়ানো মাঠে প্রতিদিন বিকালে ঘুরতে ও সেলফি নিতে ভিড় করছে তরুণ-তরুণীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫৬ মে.টন।
সূর্যমুখী খেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক মিতনা গ্রামের রসময় বিশ্বাস। তিনি ৭০ শতক জমিতে এ বছর সূর্যমূখীর আবাদ করেছেন। এ বছর তার খেতের ফলন খুব ভালো হয়েছে। সরিষার তুলনায় সূর্যমুখী চাষে তিন গুন লাভ করা যায়। স্থানীয় বাজারেই তেল ভাঙ্গানো মেশিন থাকায় নিজেদের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে ও অধিক মূল্য বিক্রি করতে পারছেন তিনি।
মিতনা গ্রামের কৃষক গোতম বিশ্বাস সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘গত বছর আমি ২৫ শতক জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করেছিলাম। চাষ করে ভাল ফলন ও লাভ হওয়ায় এ বছর ৪০ শতক জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। সূর্যমুখী চাষে বিঘা প্রতি জমিতে ১৩ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভালো হবে। সুর্যমূখীর বিচি প্রতি মণ ৩৫শ' টাকার ওপরে বিক্রি হবে।
তুলারামপুর চাঁচড়া এলাকার কৃষক বিল্লাল মোল্যা সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘আমি ৩৫ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। শুরুতে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তা ঠিক হয়ে গেছে। সঠিকভাবে সার ওষুধ ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ভালো ফলনের আশা করছি। তবে বৃষ্টি হলে আরও ভালো ফলন হতো।,
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘সূর্য মুখি আবাদে কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজ ও সার ছাড়াও প্রকল্পের মাধ্যমে বীজ সার ও পরিচর্যা বাবদ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিকল্প পদ্ধতি ও অধিক লাভের আশায় দিন দিন সূর্য মুখি চাষে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে।’
এআই