সূর্য ডুবছে ধীরে, গোধূলির রঙে রাঙা আকাশ। আজানের সুর ভেসে আসে বাতাসে, আর পদ্মার পাড়ে জড়ো হয় বন্ধুত্বের স্রোত। নদীর মৃদু ঢেউয়ে ছলছল করে স্মৃতির আলো। ইফতারের টানেই শুধু নয়, মেলবন্ধনের আশাতেই জড়ো হয় প্রিয় মুখগুলো।
শনিবার (২৯ মার্চ) মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী এলাকায় ইফতারের সেই আনন্দঘন দৃশ্য ফুটে ওঠে। কেউ বসেছে সাদা চটের উপর, কেউ বা মাদুরে গা এলিয়ে দিয়ে উপভোগ করছে প্রকৃতির মাধুর্য। ছোটদের হাতে লাল টুকটুকে তরমুজ, পেয়ারা, আঙুর, জুস আর বিশুদ্ধ পানির বোতল। মুখে হাসির আভা, মনে একসাথে থাকার আনন্দ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব মাদবর, এই ইফতারের আয়োজক। তিনি বলেন, "এখানে যারা আছে, তারা সবাই আমার ভাই। কেউ বড়, কেউ ছোট, কিন্তু হৃদয়ের বন্ধন চিরকালীন। এক স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে জীবনের ভিন্ন পথে হাঁটছি, তবু ইফতার আমাদের এক সুতোয় গেঁথেছে।"
ইফতার করতে আসা ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন তন্ময় বলেন, "ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা মানেই শৈশবের স্মৃতিচারণ। আমি যে স্কুলে পড়েছি, সেখানকার অনেকেই এখন জীবনযুদ্ধে সফল। কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এই ইফতারের মাধ্যমে ওদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করাই আমার মূল উদ্দেশ্য।"
শরিয়তপুর জেলা তথ্য অফিসার জনাব শাহিন আলম বলেন, "সরকারি ছুটি কাটাতে বাড়িতে ফিরেছি। আমার প্রিয় স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আজ স্বপ্ন ছুঁয়েছে, কেউ কবি, কেউ সাহিত্যিক, কেউ বা দেশের গর্বিত নাগরিক। ইফতারের এই মহৎ আয়োজন শুধু খাবারের নয়, এটি ভালোবাসার, সম্মানের, অনুপ্রেরণার মেলবন্ধন।"
পদ্মার মায়াবী হাওয়ায়, সন্ধ্যার নরম আলোয়, ইফতারের প্রতিটি মুহূর্ত যেন ছিল স্মৃতির নতুন উপহার। কালের স্রোতে ভেসে গেলো সময়, কিন্তু স্নেহের ভাইদের এই ইফতার সন্ধ্যা থেকে যাবে হৃদয়ের আয়নায়, চিরকাল।
পিএম