ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের সাদা রঙের সলিড লাইনের পাশে প্রায় সময় ফ্ল্যাশলাইট জ্বলে থাকা মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখা যায়। সরলমনে বা লোভে পড়ে গাড়ী থামালেই পরতে হয় ডাকাতের খপ্পরে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর এলাকার মা সিএনজি পাম্পের অপর পাশে সাংবাদিকদের নজরে আসে, রাস্তার পাশে ফ্ল্যাশলাইট জ্বলা অবস্থায় একটি মোবাইল ফোন পড়ে আছে। মোটরসাইকেল এর গতি কমিয়ে দেখা যায় ডাকাত চক্রের ৩ জন সদস্য রাস্তার পাশে অবস্থান করছে। দুজন বসে আছে এবং একজন দাড়িয়ে। সাংবাদিকরা তৎক্ষণাৎ দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন এবং মির্জাপুর থানা পুলিশকে অবগত করেন।
পরে দেওহাটা ব্রীজের সামনে থাকা টহল পুলিশের টিমকে সঙ্গে নিয়ে ফাঁদপাতা স্থানে যান সাংবাদিকরা। পরে থানা থেকে আরো একটি পুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায়। ততোক্ষণে টের পেয়ে ডাকাত চক্রটি পালিয়ে যায়। আলামত হিসেবে রাস্তায় পরে থাকা মোবাইল ফোন পুলিশ উদ্ধার করেন। উদ্ধার এর পর দেখা যায় মোবাইল ফোনের একটি ডেমু বানিয়ে রাখা হয়েছে। মোবাইল ব্যাককভারের ভিতর প্লাস্টিকের ফোম এবং নষ্ট ফোনের ডিসপ্লের সাথে রাবার দিয়ে গ্যাস ম্যাচের লাইট বেধে রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসীর তথ্যসূত্রে জানা যায়, রাত ১১ টা থেকে ২ টার মধ্যে পথিমধ্যে দু'দিন পরপরেই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এখানে প্রায় সময় এমন ভাবে মোবাইলের কাভার লাইট জ্বালিয়ে রাখে যা দেখে মনে হবে এটি সত্যিকারের মোবাইল ফোন। গাড়ী থামালেই চালানো হয় ডাকাতি।
উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর কুমারজানী এলাকায় ডাকাত দলের সদস্যরা রাস্তায় বস্তা ফেলে ফাঁদ পেতে বসে থাকে । ফাঁদে পা দিলে ট্রাক ড্রাইভার নাজমুলের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী আঘাত করে। এরপর ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা নাজমুলকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যান।
এ ঘটনার পর ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মির্জাপুর থানার ফোর্স দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলার দেওহাটা ব্রীজ ও ত্রিমোহন এলাকা থেকে ডাকাত দলের সদস্য নাদিম ও সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করে।
ওই আসামিদের তথ্যমতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অপর ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে নাদিম ও সাদ্দাম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং অপর ৪ ডাকাত দলের সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম জানান, এমন ঘটনা প্রায় সময় ঘটে আসছিলো। ইতিমধ্যে ডাকাত চক্রের ৬ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই চক্রের সাথে যারা জড়িত তারা মাদকাসক্তের সাথে সম্পৃক্ত । আরও কয়েকজন এই চক্রের সদস্য রয়েছে যারা বিভিন্ন যায়গায় এমন ফাঁদ তৈরি করছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এমআর