‘বাংলাদেশে নির্বাচিত প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মাসিক সমতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন
৭ ডিসেম্বর, শনিবার সকাল ১১টায় গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (জিবিএফ) এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে নির্বাচিত প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মাসিক সমতা: নীতি ও কর্মসূচির আলোকে’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠক এবং ন্যাশনাল পলিসি ডায়লগ অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকার আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রকল্প “আনচার্টেড রেড ওয়াটারস”-এর আওতায়, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নীতি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা।প্রকল্পটি মাসিক সমতাকে এমন একটি নীতি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে, যা মাসিক সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় জ্ঞান, ব্যবহারের উপযুক্ত পণ্যের সহজলভ্যতা, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্য ছাড়াই সমতা নিশ্চিত করে। গোলটেবিল বৈঠকটি প্রধানত প্রান্তিক সম্প্রদায়ের জন্য যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার (এসআরএইচআর)-এর চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো অন্বেষণ এবং এসআরএইচআর নীতিমালা উন্নয়নে কার্যকর সুপারিশ প্রদান করার লক্ষ্যে আয়োজন করা হয়।গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পরিচালিত এই প্রকল্পটি শেয়ার-নেট ইন্টারন্যাশনালের ‘নলেজ এক্টিভিশন গ্র্যান্ট ২০২৪’ অর্জন করেছে এবং এটি বিশেষ করে বাংলাদেশের যৌনপল্লীভিত্তিক যৌনকর্মী, বেদে (যাযাবর সম্প্রদায়), চা শ্রমিক এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীদের মতো উপেক্ষিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা আনার জন্য কাজ করছে।এ প্রকল্পটি দুটি পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়েছে—প্রথম পর্যায়ে প্রান্তিক নারীদের মাসিক সমস্যা এবং সচেতনতার অবস্থা নিয়ে সমীক্ষা পরিচালিত হয়, আর দ্বিতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের সাথে সংলাপের মাধ্যমে কার্যকর অন্তর্দৃষ্টিগুলো নিরূপণ করা হয়।অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন—ডা. মইনুল আহসান (ডিজি হেলথ, বাংলাদেশ সরকার), ড. ফারহানা হক (শেয়ার-নেট বাংলাদেশ), আতাউর রহমান মঞ্জু (এমএমএস), সাদিয়া তাসনিম (হাউজ অব ভলেন্টিয়ারস), সালমা মাহবুব (বি-স্ক্যান), ডা. মেহবুবা নূর প্রথা (ইউএনএফপিএ), এবং সালমা আহমেদ (সাজিদা ফাউন্ডেশন)। এছাড়া, চারটি প্রান্তিক সম্প্রদায় থেকে একজন করে প্রতিনিধি সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।গোলটেবিল বৈঠকটির উদ্দেশ্য ছিল, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তাদের জন্য সঠিক স্বাস্থ্যসেবা, পণ্য এবং তথ্য সরবরাহের জন্য কার্যকর নীতি প্রণয়ন করা। এই বৈঠকটি আশা করা হচ্ছে, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের নারীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের অজ্ঞতা ও অপ্রাপ্যতা দূর করবে।গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তিক জনগণের জন্য বিভিন্ন দাতব্য প্রকল্প পরিচালনা করছে। তাদের অন্যান্য প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে ‘প্রজেক্ট অম্বু’ (পানীয় জল), ‘প্রজেক্ট ফলন’ (কৃষকদের জন্য), ‘প্রজেক্ট পথচলা’ (যৌনকর্মীদের সন্তানদের মূলধারায় সংযুক্ত করা), ‘প্রজেক্ট কন্যা’ (মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা), এবং ‘প্রজেক্ট লড়াই’ (প্রান্তিক নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন)।এসএফ