এম. আজিজুর রহমানের চলে যাওয়ার এক বছর আজ
প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক সাবেক সচিব ও দেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনার এম. আজিজুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২৩ সালের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে বার্ধক্যজনিত কারণে চিরবিদায় নেন তিনি। দেখতে দেখতে আজ তাঁর চলে যাওয়ার এক বছর হলো।গুণী এ মানুষটি দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'সময়ের কন্ঠস্বর' এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৩ সালের ১৪ জুন 'প্রজন্মের সংবাদ মাধ্যম' স্লোগান নিয়ে যার যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর কীর্তিধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে আজ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে কোটি পাঠকদের মন জয় করেছে।মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায় মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনে অবস্থিত জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও সময়ের কণ্ঠস্বর কার্যালয়ের হলরুমে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও নানা আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বরেণ্য এই মানুষটি মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের ইটখোলা বাজিতপুর গ্রামে ১৯৪৩ সালের ১০ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আঃ মান্নান ও মা শিরিন জাহান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উপরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের কুইন ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অফ ম্যানচেস্টারেও পড়াশোনা শেষ করেন।প্রচারবিমুখ এই মানুষটি মাদারীপুরে মায়ের নামে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ মানুষটি সাহিত্য জগতে আজিজুর রহমান আজিজ নামে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে তিনি তার প্রজম্ন এবং বন্ধু, অণুসারী ও পরিচিত সম্প্রদায়ের মাঝে 'এই শহরের জীবন্ত কবি' নামেই পরিচিত।শৈশবে কবিতা ও ছড়া লেখা দিয়ে তার লেখালেখির যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে তিনি কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, গান রচনা করে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন।তিনি ছিলেন একাধারে সাবেক সচিব ও দেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনার, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রধান উপদেষ্টা, রবীন্দ্র একাডেমির সভাপতি, কবি, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক, সুরকার, এবং গীতিকার। এ পর্যন্ত আজিজুর রহমান আজিজ ৬৫ গ্রন্থ; উপন্যাস, অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ, শিশুতোষ গ্রন্থ লিখেছেন এবং তাঁর লেখা নিয়ে চলচ্চিত্র হয়েছে। পেশাগত জীবনে এম. আজিজুর রহমান জনপ্রশাসনের একজন সদস্য ছিলেন। এবং ২০০১ সালে সচিবের পদ থেকে অবসর জীবন গ্রহণ করেন। ২০১০ তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন এবং এই কমিশনকে কাঙ্খিত পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বাের্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাের্ড অফ গর্ভনরস এর অন্যতম গৰ্ভরনস, পিস এ্যান্ড হারমনি ট্রাস্টের চেয়ারম্যানসহ বহু সাহিত্য সংস্কৃতি সামাজিক, দাতব্য সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। সর্বশেষ ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাের্ড অফ গর্ভনরস এর অন্যতম গৰ্ভরনস হিসেবেও নিজেকে অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে লেখালেখি করেছেন, সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে এছাড়াও তিনি স্বনির্ভর প্রকল্প কর্তৃক ব্রোঞ্জ পদক, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার ঢাকা, শের-ই-বাংলা সাহিত্য পদক ঢাকা, যুক্তরাষ্ট্র ক্যামব্রিজ ভিত্তিক গ্রন্থাগারিক কেন্দ্র, ১৯৯৮ সালের 'বর্ষসেরা ব্যক্তি' পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন।এম. আজিজুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করছে সময়ের কণ্ঠস্বর পরিবার।এবি