এইমাত্র
  • 'চাপাবাজীর অস্কার অনন্য মামুন পাবেন', বলছেন শাকিব ভক্তরা
  • রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল
  • ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা প্রকাশ
  • শেখ হাসিনার পদত্যাগ মীমাংসিত, বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
  • শেখ হাসিনা কীভাবে পদত্যাগ করেছেন, জানালেন আসিফ মাহমুদ
  • শুরু হলো বরবাদ'র শুটিং, শাকিব খান যোগ দেবেন কবে?
  • মিয়ানমার উপকূলে নৌকাডুবি, ১১ মরদেহ উদ্ধার
  • রাষ্ট্রায়ত্ত ১০ ব্যাংকে নতুন এমডি নিয়োগ
  • কারাগারে ইমরানকে দেওয়া হয় মাটন মুরগি দই জুস আঙ্গুর
  • ঘুষের টাকা নিয়েও কাজ না করে উল্টো হুমকি যত ইচ্ছে নিউজ করেন : ভূমি সহায়ক শাহানুর
  • আজ মঙ্গলবার, ৭ কার্তিক, ১৪৩১ | ২২ অক্টোবর, ২০২৪

    ফিচার

    আজ আপেল খাওয়ার দিন
    ক্যালেন্ডারের পাতায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো দিবস থাকে। সেই দিবসের কোনটি খুব অদ্ভুত, কোনোটি মজার, আবার কোনোটি দরকারি। তেমনই একটি দিন আজ। আজ আপেল খাওয়ার দিন। তাই প্রিয় জনকে আজ উপহার হিসাবে আপেল দিয়ে পারেন, আর আপেল খেতে কিন্তু কম বেশি সবাই পছন্দ করে। সেটা হতে পারে হলুদ, সবুজ, গোলাপি বা লাল রঙের আপেল। প্রচুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও সহজলভ্য একটি ফল এই আপেল। এই ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে।  প্রতি বছরের ২১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র আপেল দিবস পালন করে। ন্যাশনাল টুডে বলছে, গবেষণায় দেখা গেছে-১০ থেকে ২০ বছর আগে প্রাচীন বন্য আপেল গাছের সন্ধান পাওয়া যায় মধ্য এশিয়াতে। তবে শুরুর দিকে সেই আপেলগুলো স্বাদ কিছুটা টক ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ১৭তম শতাব্দীর প্রথম দিকে আপেল ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন, এই সময়েই রোমান জনগোষ্ঠী আপেলের আকার বড়, মিষ্টি ও বৃহৎ পরিসরে চাষাবাদ শুরু করে। আমরা এখন যে আপেল খাই, এই আপেলের বিকাশ তখনই হয়েছিল। তারপর আপেল যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে।আপেল দিবস যুক্তরাষ্ট্রে পালন করা হলেও দিবসের শিকড় আসলে ইউরোপে। ১৯৯০ সালের ২১শে অক্টোবর যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা কমন গ্রাউন্ড আপেলের বিভিন্ন প্রজাতির গুরুত্ব বোঝাতে দিবসটির প্রচলন করেছিল। বর্তমানে আপেলপ্রেমীরা এখনো বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত সাড়ে সাত হাজারের বেশি জাতের আপেলের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে আপেল দিবস পালন করে।তবে গবেষকরা বলছেন, আপেল খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। কখন আপেল খেলে উপকার হবে বা অবেলাতে আপেল খেলে কি হবে তা জেনে নিন-খাওয়ার উপযুক্ত সময়: প্রতিদিন যদি একটি করে আপেল খাওয়া যায় তবে আর ডাক্তারের কাছে যেতে হয় না। আয়ুবের্দীয় শাস্ত্র মতে, প্রতিটি ফল খাওয়া একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। এতে তা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তাই আপেল খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। পুষ্টিবিজ্ঞানিদের রীতিতে, সকালবেলা আপেল খেতে পারলে সেটা খুবই উপকারি। কারণ আপেলের খোসা ও আঁশ পেকটিন সমৃদ্ধ। অনেকেরই অপর্যাপ্ত ঘুম, দেরিতে ঘুম ইত্যাদির কারণে হজমজনিত সমস্যা দেখা দেয় ও বদ হজম হয়ে থাকে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে আপেল খাওয়া সব থেকে ভালো।সকালবেলায় আপেল খেলে অন্ত্রের ক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। পেকটিন ল্যাকটিক এসিড সুরক্ষিত রাখতে এবং কোলনে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া ভালোভাবে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। যা পরবর্তিতে পাঁচন তন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভীষণভাবে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও পেকটিন টকসিনের পরিমাণ কমাতে এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান কারসিনোজাসিস দূর করতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। তাই সকালবেলা আপেল খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি।এবি 
    আজ প্রাক্তনকে ক্ষমা করার দিন
    জীবনে সবারই প্রেম আসে। তবে কয়জনেরই বা প্রেমে সফল হয়। তবে ভালোবাসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে আমরা কমবেশি সবাই বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি। অনেক সময় আমাদের সেই চেষ্টা কাজে আসে। আবার কিছু সময় বিভিন্ন কারণে তা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। মুহূর্তের ভেঙে যায় একসঙ্গে দেখা স্বপ্নগুলো। আর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর অধিকাংশেরই প্রাক্তনের প্রতি থাকে হাজারটা অভিযোগ। তবে সব ভুলে গিয়ে প্রাক্তনকে ক্ষমা করে দেয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ। আর যদি না করে থাকেন, তাহলে আজকে করে দিন।কেননা আজ ১৭ অক্টোবর, প্রাক্তনকে ক্ষমা করার দিন। আর এই বিচিত্র দিবসের যাত্রা শুরু ২০১৮ সালে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী এই দিনটি পালিত হয়। অবশ্য প্রাক্তনকে ক্ষমা করার এই দিবসের কোন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। তবুও দিবসটি পালনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এ বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্য পোস্ট করেন। প্রেমের সম্পর্ক যে কারণেই ভাঙে না কেন, সবারই প্রাক্তনকে ঘিরে রাগ, ক্ষোভ, অভিমান কমবেশি থেকেই যায়। এসব মনে রেখে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে এ অভিযোগ ও ঘৃণা মন থেকে দ্রুত মুছে ফেলা জরুরি। সহজ নয়, তবে ক্ষমা করার জন্যই দিবসটির আবির্ভাব। জানা যায়, দিবসটির জন্ম হয়েছে ইন্টারনেট থেকেই। ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ফরগিভ অ্যান এক্স ডে’।ক্ষমা একটি মহৎ গুণ'। এই গুণটির মাধ্যমেই সবাই বুঝতে পারবেন আপনি কীভাবে মানুষকে উপলব্ধি করেন। তাছাড়া আপনাকে দেখে অন্যরাও উত্সাহি হবে। মানে আপনার ক্ষমা করে দেখে অন্যরাও তাদের প্রাক্তনকে ক্ষমা করে দেবে। এভাবে ছড়িয়ে পড়বে ক্ষমা করার গুণ। তাহলেই তো জীবন আরও সুন্দর হবে।এবি 
    আজ বন্ধুকে টাকা ফেরত দেওয়ার দিন
    মানব জীবনে টাকা এবং বন্ধু দুইটারই গুরুত্ব অনেক। আমরা যা কিছু করি, সবটাই টাকাকে ঘিরে। কেননা টাকা ছাড়া সবকিছু অচল। আবার বন্ধু ছাড়া একাকী জীবন পার করাও কঠিন। বন্ধুর সংজ্ঞা এক-একজনের কাছে এক-একরকম। যে সবসময় বিপদে-আপদে পাশে থাকে, যার কাছে সবকিছু শেয়ার করা যায়, বিশ্বাসের জায়গা বজায় রাখে তাকেই বন্ধু বলে। আর প্রিয় বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নেন না এমন মানুষ কমই আছেন। তবে বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে যদি তা ফেরত না দেওয়া হয় তখন এই সুন্দর সম্পর্কটা মলিন হয়ে যায়। এমন অনেকেই রয়েছেন যে সময় মতো ধারের টাকা পরিশোধ না করায় বন্ধুত্বের মধ্যে দূরত্ব বা ভুল-বোঝাবুঝির তৈরি হয়েছে।  আবার দেখা যায় ছোটবেলায় বা বড় হওয়ার পর বন্ধুর কাছ থেকে হয়তো কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন কিন্তু তা শোধ দেওয়ার আগেই বন্ধুত্ব ভেঙে গেছে। সেই টাকা আর শোধ করা হয়নি। তাহলে আজ কিন্তু শোধ করে দিতে পারেন। জীবনে যত বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলেন তাদের সবার টাকা শোধ করে দিন। কারণ আজ পে ব্যাক অ্যা ফ্রেন্ড ডে। আসলে আজ ১৭ অক্টোবর, আর এই দিনটিকে ‘ন্যাশনাল পে ব্যাক এ ফ্রেন্ড’ বা ‘বন্ধুকে টাকা ফেরতের দিন’ হিসেবে বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতি বছর আমেরিকায় এই দিনটি পালিত হয় বেশ ঘটা করে। এটিকে বন্ধু দিবসও বলেন আমেরিকানরা। হয়তো পুরোনো অনেক বন্ধুর সঙ্গে তাদের এদিন আবার যোগাযোগ হয়। ভুল বোঝাবুঝি, অভিমান কিংবা দূরত্বের অবসান ঘটে।   মূলত ব্যাংক অব আমেরিকা ১৭ অক্টোবরকে বন্ধুর ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার দিন হিসেবে উদযাপন করার প্রথম উদ্যোগ নেয়।   ব্যাংক অব আমেরিকা এটিকে মূলত তাদের মুনাফা লাভের একটি পদ্ধতি হিসেবেই নিয়েছিল। তাদের পরিকল্পনাও কাজে দিয়েছে বেশ ভালোি। আমেরিকায় এদিনে টাকা পাঠানোর জন্য একাধিক অনলাইন অ্যাপ রয়েছে। যেগুলোতে হাজার হাজার ডলার বিনিময় হয় এই দিবসে।এবি 
    শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে এলো হেমন্ত
    পালা বদল করে এক ঋতু যায় আরেকটি আসে। ষড় ঋতুর বাংলায় আজ থেকে কার্তিকের ঋতু শুরু হলো হেমন্ত। শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে ধীর পায়ে প্রকৃতিতে আসে হেমন্ত। তাই তো একে বলা হয় শীতের বাহন। পঞ্জিকার পাতায় আজ থেকে হেমন্ত শুরু হলেও প্রকৃতিতে অনুভূত হচ্ছে ঈষত্ শীতের আমেজ। চারদিকে কুয়াশার মৃদু আবরণ আর নতুন ধানের মিষ্টি গন্ধ জানান দিচ্ছে হেমন্তের উপস্থিতি। শরৎ-এর শেষ দিন ছিল গতকাল।কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস জুড়েই বাংলাদেশে হেমন্তের বিস্তৃতি। শরতের কাশফুল মাটিতে নুইয়ে পড়ার পরপরই বাংলার রূপবৈচিত্র্যে হাজির হয় হেমন্ত।বসন্তের মতো তার নিজস্ব কোনো বর্ণ গন্ধ কিংবা গরিমা নেই। হেমন্ত মৌন শীতল ও অন্তর্মূখী। হেমন্তে ফোঁটা শিউলী, কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেবকাঞ্চন, হিমঝুরি, রাজ অশোক প্রভৃতি ফুলের সৌরভ বাঙ্গালির প্রাণে সঞ্চার করে নতুন আমেজ। ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে ছড়িয়ে থাকা মুক্ত দানা আর ফসলের সোনালি সমুদ্র সবমিলিয়ে যেন পূর্ণতা পায় প্রকৃতি। হেমন্তের সকালে শিউলীর সৌরভে বাঙালির প্রাণে আসে উৎসবের আমেজ।এক সময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। সম্রাট আকবর অগ্রহায়ণ মাসকেই বছরের প্রথম মাস বা খাজনা তোলার মাস ঘোষণা দিয়েছিলেন। কারণ, ধান উৎপাদনের ঋতু হলো এই হেমন্ত। হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধানে পাক ধরে। কার্তিকের শেষ দিকে গ্রামের মাঠে মাঠে ধান কাটার ধুম পড়ে যায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পাকা ধানের গন্ধে মৌ মৌ গন্ধ। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশের ষড়ঋতুতে। ঋতুর উপস্থিতিতে ঘটছে তারতম্য।তবে এরই মধ্যে প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে উত্তুরে বাতাসের হালকা কাঁপুনি। যে কাঁপুনি একসময় তীব্র হয়ে জানান দিবে শীতের উপস্থিতি। তবে শহরে এখনও উত্তুরে বাতাসের তীব্র কাঁপুনি না হলেও উত্তরবঙ্গে কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। হেমন্তে কুয়াশা ভেদ করে লাল আভা বেয়ে পূর্ব আকাশে উঁকি দিতে খানিকটা বেগ পেতে হলেও মায়াবী আলোয় ভরে থাকা চারপাশে সজিবতা ফিরে মনে। দৃষ্টিসীমায় কুয়াশার প্রলেপ জমলেও সূর্যের আলো ফোটার আগেই আড়মোড়া ভেঙে ঘরের বাইরে বেরিয়ে পড়েন গ্রামের মানুষজন।  অপরদিকে গ্রামবাংলার মানুষের জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসবের আমেজ। হেমন্ত এলেই এই জনপদের মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করে। হেমন্তের আগমনে গ্রামের মেঠোপথে সকালে হাঠলেই পা ভিজে যাই শিশির কণাতে।  হেমন্তের আগমনে মাঠে মাঠে হেসে উঠে সোনালী ধান। পাকাধানের মৌ মৌ সুমৃষ্ট সুভাসে মুখরিত চারিপাশ। আর কয়দিন পরেই কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে রক্তজলকরা সোনালী রোপা ধান আর এই নতুন ধানের চাউল থেকে বাংলার গৃহবধুরা গুরা তৈরী করে নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরী করবে হরেক রকমের বাঙ্গালী পিঠা-পুলি। আসতে শুরু করবে মেয়ে-জামাই।   আসছে শীত, ইতিমধ্যে কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। সকালের আকাশ অনেকটাই ঘোলাটে থাকে। শেষরাতের দিকে অথবা খুব সকালে হালকা ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। শেষরাতে একটা কিছু গায়ে না জড়িয়ে আরামে ঘুমানো যাচ্ছে না। উষ্ণতম এলাকার রাজশাহীতে এমন অবস্থা। তবে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরও বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে।শীত অনুভূত হচ্ছে পঞ্চগড় জেলায়। ইতিমধ্যে তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। খুব শিগগিরই নিম্ন তাপমাত্রা আরও নিচে নামার পূর্বাভাস রয়েছে। তবে শীত যে পড়ছে তা রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন ফুটপাথের গরম কাপড়ের দোকান দেখলেই বোঝা যায়। সেখানে বাহারি রঙের এবং বিভিন্ন ডিজাইনের নতুন ও পুরনো গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। তাই অচিরেই আর বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা নেই।এবি 
    বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ
    বিশ্ব খাদ্য দিবস ১৬ অক্টোবর। কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে দিবসটি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার’। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে পালন করা হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য দিবস। এ উপলক্ষে দেশে আন্তর্জাতিক সেমিনার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমসহ কৃষি মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৪ উদযাপিত হয়েছে। কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। খাদ্য সচিব মাসুদুল হাসান এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি Dr. Jiaoqun Shi বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।এদিকে, দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে অবহিতকরণের জন্য মোবাইলে সচেতনতামূলক খুদেবার্তা পাঠানো, জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৪-এর প্রতিপাদ্য তাৎপর্য পোস্টার/বিলবোর্ড/ভিডিও/মেসেজ/ডকুমেন্টেশনে প্রচার করা হয়েছে। এবি 
    বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাছ
    মাছ একটি শীতল রক্তবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী প্রাণী। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র মাছ মানুষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মাছ মানবদেহে অন্যতম আমিষ যোগানদাতা। বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আবার মাছকে অ্যাকুয়ারিয়ামে প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। কয়েকটি প্রাণী মাছ না হলেও এগুলো মাছ হিসাবে প্রচলিত। পৃথিবীতে প্রায় ৩০-৪০ হাজার মাছের প্রজাতি পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু মাছ এতোটাই দামি যে চোখ কপালে ওঠার মতো। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাছটির দাম দিয়ে বাড়ি কিংবা গাড়িও কিনে ফেলা যাবে। দাম শুনলে চোখ কপালে উঠতে পারে আপনার। মাছটির নাম প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা। বিশেষ ক্ষেত্রে, একটি প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা ৫০ হাজার ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা হলো এক ধরনের মিষ্টি পানির মাছ যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ে পাওয়া যায়। এটি বিশেষ করে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডে প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। এই মাছটি তার মনোমুগ্ধকর রং, সোনালি রিফ্লেকশন এবং বিশেষ আকৃতির জন্য পরিচিত, যা এটিকে শখের মাছ পালনকারীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তুলেছে।প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা তার রঙের জন্য পরিচিত। এই মাছটির শরীর হয় একেবারে সাদা। তবে কিছু কিছু আবার ধূসর এবং তার গায়ে সোনালি বা রূপালি দাগ থাকে, যা এটিকে এক অনন্য চেহারা প্রদান করে। মাছটির শরীরের গঠনও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। দীর্ঘ, সরল এবং শক্তিশালী শরীরের কারণে এটি সাঁতার কাটতে খুবই দক্ষ। প্ল্যাটিনাম আরওয়ানার উজ্জ্বল রং এবং সুন্দর গঠনের জন্য এটি বিদেশি মৎস্য চাষিদের কাছে অনেক দামি।প্ল্যাটিনাম আরওয়ানার দাম অত্যন্ত বেশি। একটি প্ল্যাটিনাম আরওয়ানার দাম সাধারণত হাজার হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এর মূল কারণ হলো মাছটির বিরলতা এবং সঠিক যত্ন নেওয়া হলে এটি যে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে। এই মাছের চাহিদা এবং দাম ক্রমাগত বাড়ছে, যা মাছটির শখের বাজারকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে।তবে প্ল্যাটিনাম আরওয়ানার প্রজনন অনেক কঠিন। এদের প্রজনন সাধারণত সহজ নয় এবং সঠিক পরিবেশ এবং যত্নের প্রয়োজন। এই মাছের জন্য বিশাল অ্যাকোয়ারিয়াম প্রয়োজন, যাতে তারা যথাযথভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। পানির গুণগত মান, তাপমাত্রা এবং অন্যান্য পরিবেশগত উপাদানগুলো মাছটির স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।প্রাকৃতিক আবাসস্থল হারানোর কারণে প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা এখন বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় রয়েছে। জলাশয়গুলোর দূষণ এবং অবৈধ মৎস্য শিকার মাছটির সংখ্যা হ্রাস করছে। এই কারণে বিভিন্ন সংস্থা প্ল্যাটিনাম আরওয়ানাকে সংরক্ষণের জন্য কাজ করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য মাছটির সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইএউসিএন এবং সিএআইটিইএসের মতো সংগঠনগুলো কাজ করছে।প্ল্যাটিনাম আরওয়ানা কেবল একটি মাছ নয়; এটি অনেকের জন্য একটি সাংস্কৃতিক প্রতীক। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, এই মাছকে সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। অনেক পরিবার তাদের বাড়িতে প্লাটিনাম আরওয়ানা রেখে তাদের ভাগ্য ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির আশা করে। এর ফলে এই মাছটির চারপাশে একটি আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তৈরি হয়েছে। সূত্র: সিএনবিসিএইচএ
    আজ বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস
    আজ ১৫ অক্টোবর, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছরের মতো এবারও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘পরিচ্ছন্ন হাত কেন এখনো গুরুত্বপূর্ণ?’  দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্টে মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’-অর্জনে এবং সুষ্ঠু স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন।এদিকে এক বাণীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ যথাযথভাবে পালন ও হাইজিন প্রসারের সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।জানা যায়, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের সূচনা হয় ২০০৮ সাল থেকে। ওই বছর ১৫ অক্টোবর সুইডেনের স্টোকহোমে বিশ্ব পানি সপ্তাহে জিএইচপি বিশ্বব্যাপী আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম এ দিবসটি পালন করা হয়। পরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দিবসটি প্রতি বছর পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি ও উদ্বুদ্ধকরণের জন্য চালানো এটি একটি প্রচারণামূলক দিবস। বিশ্ব হাতধোয়া দিবসের মূল লক্ষ্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার একটি সাধারণ সংস্কৃতির সমর্থন ও প্রচলন করা, প্রতিটি দেশে হাত ধোয়ার বিষয়ের নজর দেওয়া ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।এবি 
    প্রিয়জনকে নিয়ে আজ শর্মা খাওয়ার দিন
    সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে সব চাইতে প্রথমে যে খাবারের কথা মাথায় আসে তা হলো শর্মা। বিফ/ চিকেন যে শর্মাটিই পছন্দ করুন না কেন স্বাদের দিক দিয়ে দুটিই অসাধারণ, এবং একই সাথে বেশ স্বাস্থ্যকরও বটে। শর্মার উদ্ভব হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। এটি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। তুলনামূলকভাবে ইউরোপে এর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।সুস্বাদু মাংস ধীর আঁচে আগুনের পাশে রান্না হলে পাতলা করে কাটা হয়। মূলত শর্মা তৈরি হতো ভেড়া বা খাসির মাংস দিয়ে, তবে বর্তমানে শর্মা মুরগি, টার্কি, গরু বা বাছুরের মাংস দিয়ে তৈরি করা হয়। শর্মা এমন একটি খাবার যা অন্তত কয়েক শতাব্দী আগে অটোমান সাম্রাজ্যে শুরু হয়েছিল, যা বর্তমানে আধুনিক তুরস্ক।তুর্কিদের প্রস্তুত করা শর্মার প্রাথমিক নাম ছিল ‘সেভারেম’, যার অর্থ ‘আগুনের সামনে শিক ঘোরানো’। শব্দটি তুর্কি শব্দ সেভির্মে থেকে আসা। চতুর্দশ শতাব্দীর একটি লেখায় প্রথম এই মাংসের রেসিপির উল্লেখ পাওয়া যায়, যদিও এর উৎস নিশ্চিত নয়।জানা যায়, একসময় মধ্য এশিয়ার যাযাবর লোকেরা ব্রোচ বা তরবারিতে গেঁথে মাংস রান্না করতেন। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ওই মিট রেসিপি ভারতীয় রাজদরবারের সুলতানদের কাছে বিলাসবহুল খাবারের মর্যাদা পেয়েছিল। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শর্মার যাত্রা শুরুর গল্পও।অবশ্য, স্যান্ডউইচ হিসেবে এ খাবারের প্রসার ঘটার জন্য ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ঐতিহ্যগতভাবে অটোমান সাম্রাজ্যের শহুরে রাস্তায় যেসব শর্মা পাওয়া যেত, সেগুলোর মাংস স্কিওয়ার বা শিকে গেথে হরাইজন্টালি রেখে প্রস্তুত করা হতো। একই সময়ে ভার্টিক্যাল বা খাড়া করে রাখা তরবারিতে গেঁথে মাংস রান্নার ধারণা সমাদর পায়।শর্মার ইউরোপযাত্রায় ফ্রান্স ও জার্মানির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ওই মহাদেশে জার্মানিতেই এটি প্রথম রপ্তানি করা হয়েছিল। ইউরোপের যেসব দেশে খাবারটির চল রয়েছে, দেশভেদে রয়েছে আলাদা নামও।অবশ্য, ফ্রান্সের শর্মার ইতিহাস একটু বিভ্রান্তিকর! তুর্কি খাবার হলেও প্যারিসে এটি প্রথম পরিবেশন করা হয় এক গ্রিক রেস্তোরাঁয়। তাই স্থানীয় ভোক্তারা সহসাই এই নতুন খাবারের নাম রাখেন ‘গ্রিক স্যান্ডউইচ’। এই ত্রুটিপূর্ণ নাম দ্রুতই দেশটির বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে।গ্রিকের অধিবাসীরা অবশ্য শর্মাকে ‘গ্রিক স্যান্ডউইচ’ বলে ডাকেন না। রাতের এই প্রিয় খাবারকে এথেন্সের রাস্তায় বলা হয় ‘সুভলাকি’। তা ছাড়া নানা জায়গায় শর্মার আরও কিছু নাম রয়েছে; যেমন বান মি, আরব টাকোস, কেবাবনরস্ক, শিশ তাওক বা ডানার। মজার ব্যাপার হলো, দুনিয়ার প্রায় সব দেশেই এমন স্যান্ডউইচ খুঁজে পাবেন, যেটি সারা দিন কাজের পর আপনার বিরস বদনের সন্ধ্যাকে নিমেষেই ভালো করে দিতে সক্ষম!অসমো শর্মার প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০২০ সালে ন্যাশনাল শর্মা দিবসটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। এই রেস্তোরাঁর শাখাগুলোর বেশিরভাগ-ই কানাডার টরন্টোর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত। তবে, এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই রেস্তোরাঁর একটি শাখা রয়েছে।প্রতি বছর এই ইভেন্টের সময়, জনপ্রিয় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম এই স্ট্রিট ফুডের মাধ্যমে ভিন্ন ধরনের লোকজনকে একত্রিত করা হয়!আজ তো শর্মা দিবস! তাই, প্রিয়জন, বন্ধু, পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন। আর আনন্দ করে স্বাদ নিন এই খাবারের।এবি 
    মোটরসাইকেল চালানোর দিন আজ
    অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শনিবার, সে হিসাবে আজ ১২ অক্টোবর, মোটরসাইকেল চালানোর দিবস। দিবসটি ২০১৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়ে আসছে।মোটরসাইকেল, দুই চাকার এই যানবাহনটি যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে যা কমবেশি সবার কাছেই প্রিয়। কেউ কেউ শখ করে ব্যবহার করেন। আবার কারও কাছে মোটরসাইকেল চালানো নেহাত কোনো শখ নয়, রীতিমতো জীবনযাপন। বিশেষ করে ঢাকায় যারা থাকেন, নিত্যদিনের যানজটে মোটরসাইকেল কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়।  ডানলপ মোটরসাইকেল কোম্পানির পণ্য ব্যবস্থাপক চ্যাড গিয়ার এই দিবসের উদ্যোক্তা। ১৮৮৭ সালের অক্টোবরে জন বয়েড ডানলপ উদ্ভাবন করেন বায়ু ভরা টায়ার, যা মোটরসাইকেল জগতে নিয়ে আসে যুগান্তকারী পরিবর্তন।সারা বিশ্বে মোটরসাইকেল দিবস উদযাপন করা হয় নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে। বিশেষ করে আমাদের দেশে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন করা উচিত। আজকের এই দিনে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো রাস্তায় বের হওয়া, তারপর স্বাধীনভাবে মোটরসাইকেল চালানো। মাথায় অবশ্যই হেলমেট পরে নিবেন। আর পকেটে রাখবেন ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটরসাইকেলের নিবন্ধন সনদসহ যাবতীয় কাগজ।কেবল সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য দিলেই মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার গুরুত্ব বুঝতে পারবেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে ৩৯২টি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৪২৬ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১৬৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, যা মোট দুর্ঘটনায় ৪১.৮৩%। আর নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৭৯ জন, যা মোট মৃত্যুর ৪২%।এইচএ
    শিক্ষাগ্রহণ করে বাধা ভাঙতে প্রস্তুত হিজড়া সম্প্রদায়
    দেশে প্রথাগত লিঙ্গের ভূমিকা গভীরভাবে প্রোথিত। কিন্তু হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনে অস্বাভাবিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত একটি গবেষণায় হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের লড়াইয়ে যেসব গুরুতর বাধার মুখোমুখি হন সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে।শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাদিকুল ইসলাম, বৃহন্নলা, মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় হিজড়া শিক্ষার্থীদের অব্যক্ত অভিজ্ঞতার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে। এটি অধ্যবসায়, আকাঙ্ক্ষা এবং পদ্ধতিগত ব্যর্থতার গল্পগুলোকে তুলে ধরেছে।বাধাটিচার্স ওয়ার্ল্ড: জার্নাল অব এডুকেশনে প্রকাশিত এই গবেষণাটি আটজন প্রাপ্তবয়স্ক হিজড়া অংশগ্রহণকারীর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। হিজড়া একটি লিঙ্গ পরিচয়, যা শতাব্দী ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যমান।গবেষণায় উঠে এসেছে শিক্ষার প্রতি অদম্য তৃষ্ণা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ব্যক্তিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হন।সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে তাদের যৌন পরিচয় গোপন রাখতে বাধ্য হওয়া। এছাড়াও সহপাঠীদের কাছ থেকে হয়রানি এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে অজ্ঞতা বা উদাসীনতা।এই বাধাগুলো তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে বাধা দেয়, যার ফলে তাদের শিক্ষাগত আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।গবেষকরা সমস্যার মাত্রা নির্ধারণের জন্য গভীরতর সাক্ষাৎকার এবং ব্যাখ্যামূলক ঘটনানির্ভর বিশ্লেষণ ব্যবহার করেছেন।আর্থিক কষ্ট এবং দারিদ্র্য হিজড়া ব্যক্তিদের মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলোকে আরও বাড়ায়। এর ফলে অকালে তাদের অনেককে পড়াশোনা ত্যাগ করতে বাধ্য করে।যদিও বাংলাদেশ ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ২০২০ সালে তাদের একটি পৃথক বিভাগে ভোট দেওয়ার অধিকার দিয়েছে। তবে এই আইনি স্বীকৃতিগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থবহ পরিবর্তনে রূপান্তিরিত হয়নি।গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক কলঙ্কগুলো গভীরভাবে প্রোথিত রয়েছে, যা হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য বর্জনের একটি চক্রকে স্থায়ী করে।পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাগবেষণায় হিজড়াদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন বা হ্রাস করার ক্ষেত্রে পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উভয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্ত অভিজ্ঞতাগুলো ইঙ্গিত দেয় যে পরিবারগুলোর কাছ থেকে গ্রহণযোগ্যতার অভাব স্কুলগুলোতে বর্জনের মুখোমুখি হওয়ার মতোই ক্ষতিকারক হতে পারে।পরিবারের সমর্থন ছাড়াই অনেক হিজড়া ব্যক্তি সামাজিক বাধাগুলো অতিক্রম করতে লড়াই করে, যা তাদের শিক্ষা অর্জনে বাধা দেয়।গবেষকদের মতে, প্রান্তিকতার চক্র ভাঙার জন্য সামাজিক ও শিক্ষাগত উভয় পরিমণ্ডলের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য।তারা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, কেবল শিক্ষাগত সংস্কারই যথেষ্ট হবে না, বরং হিজড়া শিক্ষার্থীরা নিরাপদ, সহায়ক শিক্ষার পরিবেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হিজড়াদের অধিকারের বৃহত্তর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা প্রয়োজন।গবেষকরা এমন একটি ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করার জন্য বৃহত্তর বোঝাপড়া, সহানুভূতি এবং নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে হিজড়া ব্যক্তিরা বৈষম্যের ধ্রুবক হুমকি ছাড়াই সাফল্য অর্জন করতে পারে।কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ‘এমপ্লয়াবিলিটি অব ট্রান্সজেন্ডার ইন বাংলাদেশ: প্রবলেমস অ্যান্ড প্রসপেক্টস' নামে ফারিহা আবেদিন এবং মো. আতিকুর রহমান সরকারের আরেকটি গবেষণা নির্ভর বইয়ে বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে।হিজড়াদের যারা তাদের শিক্ষা এবং পেশাদার দক্ষতার অভাবের কারণে আনুষ্ঠানিক চাকরির বাজার থেকে মূলত বাদ পড়ে যায় তাদের জন্য সম্ভাব্য সীমিত কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ওই গবেষণায়।প্রতিকূলতার মধ্যেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (এসএমই ফাউন্ডেশন) এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিলের মতো সংস্থাগুলো হিজড়া ব্যক্তিদের দক্ষতা ও কর্মসংস্থান উন্নয়নের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাসহ এসব উদ্যোগ হিজড়াদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের পথ তৈরিতে সহায়তা করছে।এসব উদ্যোগ কিছুটা আশার আলো দেখালেও সামগ্রিক চিত্র এখনও ভয়াবহ। বাংলাদেশে হিজড়াদের অধিকাংশই অশিক্ষিত, বেকার ও প্রান্তিক রয়ে গেছে।গবেষকরা উল্লেখ করেছেন হিজড়াদের মধ্যে যারা চাকরি পেতে সক্ষম হন তারা প্রায়শই ক্যারিয়ারের অগ্রগতির সীমিত সম্ভাবনাসহ শ্রুমিক শ্রেণিতে নিযুক্ত থাকেন।অন্তর্নিহিত সমস্যাটি হলো হিজড়াদের সম্পর্কে সামাজিক ধারণাগুলো এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়নি এবং ফলস্বরূপ, আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে তাদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা হয়।অন্তর্ভুক্তির পদক্ষেপউভয় গবেষণার লেখকরা যুক্তি দিয়েছেন যে হিজড়া ব্যক্তিরা যাতে তাদের জন্মগতভাবে নারী কিংবা পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান লাভের সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য আরও কিছু করা দরকার।উদাহরণস্বরূপ, যদিও কিছু হিজড়া মানুষ সৌন্দর্য শিল্প, আতিথেয়তা এবং তৈরি পোশাকের মতো খাতে কাজ শুরু করেছে, তবে এগুলো নিয়মের বাইরে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।এমপ্লয়াবিলিটি স্টাডিতে অংশগ্রহণকারীরা একটি সাধারণ আবেদন জানানো হয়েছে। আর তা হলো- তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক আচরণ করা, সুযোগ দেওয়া এবং সমাজের পূর্ণ সদস্য হিসেবে বসবাস ও কাজ করার অনুমতি দেওয়া।তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে পরিচিত একজন উত্তরদাতা মর্মস্পর্শীভাবে বলেছিলেন, ‘দয়া করে, আমাদের সুযোগ দিন, আমাদের আশা এবং সম্মান দিন। আমাদের আলোকিত হতে দিন। আমরা আপনার মতোই স্বাভাবিক এবং আমরা অবশ্যই কাজ করতে পারি এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারি।’গবেষণাটি শিক্ষা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান পর্যন্ত হিজড়া সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট প্রয়োজনকে তুলে ধরে এমন লক্ষ্যযুক্ত নীতি তৈরির গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।বাংলাদেশে হিজড়াদের আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও গবেষকরা জোর দিয়ে বলছেন, প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য শুধু আইনি স্বীকৃতিই যথেষ্ট নয়।তারা হিজড়াদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে সরকার, নীতিনির্ধারক এবং নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে।পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘ পথগবেষণায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনের দীর্ঘ পথটি তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে হিজড়া সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা শিক্ষা ও অর্থনৈতিক জীবনে পুরোপুরি অংশগ্রহণ করতে পারে।বিদ্যমান উদ্যোগগুলো উৎসাহব্যঞ্জক হলেও তা এখনও যথেষ্ট নয়। সত্যিকারের পরিবর্তন সাধনের জন্য, সমাজকে অবশ্যই বিদ্যমান পক্ষপাতিত্বকে মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নে হিজড়াদের অবদান রাখার সুযোগ করে দিতে হবে।
    এম. আজিজুর রহমানের চলে যাওয়ার এক বছর আজ
    প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক সাবেক সচিব ও দেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনার এম. আজিজুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২৩ সালের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে বার্ধক্যজনিত কারণে চিরবিদায় নেন তিনি। দেখতে দেখতে আজ তাঁর চলে যাওয়ার এক বছর হলো।গুণী এ মানুষটি দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'সময়ের কন্ঠস্বর' এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৩ সালের ১৪ জুন 'প্রজন্মের সংবাদ মাধ্যম' স্লোগান নিয়ে যার যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর কীর্তিধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে আজ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে কোটি পাঠকদের মন জয় করেছে।মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায় মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনে অবস্থিত জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও সময়ের কণ্ঠস্বর কার্যালয়ের হলরুমে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও নানা আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বরেণ্য এই মানুষটি মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের ইটখোলা বাজিতপুর গ্রামে ১৯৪৩ সালের ১০ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আঃ মান্নান ও মা শিরিন জাহান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উপরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের কুইন ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অফ ম্যানচেস্টারেও পড়াশোনা শেষ করেন।প্রচারবিমুখ এই মানুষটি মাদারীপুরে মায়ের নামে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ মানুষটি সাহিত্য জগতে আজিজুর রহমান আজিজ নামে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে তিনি তার প্রজম্ন এবং বন্ধু, অণুসারী ও পরিচিত সম্প্রদায়ের মাঝে 'এই শহরের জীবন্ত কবি' নামেই পরিচিত।শৈশবে কবিতা ও ছড়া লেখা দিয়ে তার লেখালেখির যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে তিনি কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, গান রচনা করে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন।তিনি ছিলেন একাধারে সাবেক সচিব ও দেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনার, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রধান উপদেষ্টা, রবীন্দ্র একাডেমির সভাপতি, কবি, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক, সুরকার, এবং গীতিকার। এ পর্যন্ত আজিজুর রহমান আজিজ ৬৫ গ্রন্থ; উপন্যাস, অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ, শিশুতোষ গ্রন্থ লিখেছেন এবং তাঁর লেখা নিয়ে চলচ্চিত্র হয়েছে। পেশাগত জীবনে এম. আজিজুর রহমান জনপ্রশাসনের একজন সদস্য ছিলেন। এবং ২০০১ সালে সচিবের পদ থেকে অবসর জীবন গ্রহণ করেন। ২০১০ তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন এবং এই কমিশনকে কাঙ্খিত পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বাের্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাের্ড অফ গর্ভনরস এর অন্যতম গৰ্ভরনস, পিস এ্যান্ড হারমনি ট্রাস্টের চেয়ারম্যানসহ বহু সাহিত্য সংস্কৃতি সামাজিক, দাতব্য সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। সর্বশেষ ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাের্ড অফ গর্ভনরস এর অন্যতম গৰ্ভরনস হিসেবেও নিজেকে অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে লেখালেখি করেছেন, সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে এছাড়াও তিনি স্বনির্ভর প্রকল্প কর্তৃক ব্রোঞ্জ পদক, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার ঢাকা, শের-ই-বাংলা সাহিত্য পদক ঢাকা, যুক্তরাষ্ট্র ক্যামব্রিজ ভিত্তিক গ্রন্থাগারিক কেন্দ্র, ১৯৯৮ সালের 'বর্ষসেরা ব্যক্তি' পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন।এম. আজিজুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করছে সময়ের কণ্ঠস্বর পরিবার।এবি 
    পরমাণু জ্বালানীর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে রূপপুরে বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ
    রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক দল বিশেষজ্ঞ ভিভিইআর চুল্লীতে কম্পিউটার বিশ্লেষণ ট্যুল ব্যবহারের মাধ্যমে পরমাণু জ্বালানীর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।রাশিয়ার ত্রয়িতস্কে রসাটম গবেষণা ইন্সটিটিউটে রসাটম জ্বালানী বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সটি পরিচালনা করেন তাত্ত্বিক পদার্থ বিদ্যা, কম্পিউটেশনাল গণিত এবং আধুনিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞবৃন্দ।মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রসাটম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের বিশেষ করে রিয়্যাক্টর ফুয়েল-কুল্যান্ট একটিভিটি (RTOP-CA) কোড বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই কোডের মাধ্যমে পরমাণু জ্বালানী রডের অখন্ডতা এবং ভিভিইআর চুল্লীর প্রাইমারি সার্কিটে ইউরেনিয়ামের বিভাজনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন পদার্থের নির্গমন করা সম্ভব হয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা অস্বাভাবিক কোনও অবস্থায় পরমাণু জ্বালানীর আচরণ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করেন।রসাটম গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক কিরিল ইলিন বলেন, “আন্তর্জাতিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ। কম্পিউটার স্টিমুলেশন ট্যুলের ব্যবহার আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের একটি অংশ। আমাদের এই প্রোগ্রামে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত ছিল লেকচার, টেকনিক্যাল ডকুমেন্টের পর্যালোচনা এবং জ্বালানী রডের অখন্ডতা নিয়ন্ত্রনে ব্যবহারিক কার্যক্রম”।রূপপুর এনপিপি’র ফুয়েল রড জ্যাকেট স্পেকট্রোমেট্রি এবং মনিটরিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শরিফুদ্দীন তার মন্তব্যে বলেন, “আমাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণটি ছিল একটি বড় সুযোগ। প্রোগ্রামের সকল লেকচার, এসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়ালগুলো ছিল যথাযথ, সহজবোধ্য এবং আমাদের কাজের সাথে সম্পর্কিত”।প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা একটি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন এবং সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাদেরকে RTOP-CA  ব্যবহারকারী সনদ প্রদান করা হয়।জ্বালানী রড জ্যাকেটের ইন-প্রসেস মনিটরিং এর জন্য RTOP-CA কোড প্রবর্তন করা হয়। এর সাহায্যে ফিশন বিক্রিয়ার ফলে ভিভিইআর পরমাণু চুল্লীর প্রাইমারী সার্কিটের কুল্যান্টের (শীতলকারী মাধ্যম) মধ্যে নির্গত বিভিন্ন পদার্থের কার্যক্রম এবং অখন্ডতা ক্ষুণ্ণ হওয়ার ফলে জ্বালানী রডের আচরণ সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বানী করা সম্ভব।রসাটম নিয়মিতভাবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। চুক্তি অনুযায়ী ১,৫০০ বাংলাদেশী প্রকৌশলী রাশিয়ায় রসাটমের বিভিন্ন স্থাপনায় প্রশিক্ষণ এবং ইন্টার্নশীপ সম্পন্ন করার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে রসাটম টেকনিক্যাল একাডেমীর অধীনে প্রায় ৮০০ জন এ জাতীয় প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।উল্লেখ্য, রাশিয়ার কারিগরী ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট থাকবে এবং এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২,৪০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে স্থাপিত হবে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর যা সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পুরনে সক্ষম। রসাটম প্রকৌশল শাখা জেনারেল ডিজাইনার এবং কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।পিএম
    ইতিহাস গড়লেন দেশের প্রথম নারী রেসিং ড্রাইভার কাশফিয়া আরফা
    বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র নারী রেসিং ড্রাইভার হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন কাশফিয়া আরফা। তিনি এশিয়ান অটো জিমখানা চ্যাম্পিয়নশিপে ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন।সম্প্রতি এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অরফা জানিয়েছেন, এশিয়ান অটো জিমখানা চ্যাম্পিয়নশিপে মিক্সড-ডাবল ক্যাটাগরিতে সেকেন্ড রাউন্ডে ষষ্ঠ স্থান জিতে নিয়েছেন। তিনি তার এই অদম্য যাত্রা অব্যাহত রাখতে চান।আরফা এফআইএ (ফিয়া) এএসএন জাতীয় রেসিং লাইসেন্সের অধিকারী।ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন কাশফিয়া আরফা। যেখানে তিনি হ্যান্ডবল টিমেও ছিলেন। বর্তমানে অটোমোবাইল এসোসিয়েশন বাংলাদেশে কাজ করছেন।এসএফ 
    আজ ক্ষমা করে মানসিক চাপ কমানোর দিন
    দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেছে। যাওয়ার আগে প্রিয় মানুষটি দিয়ে গেলেন একরাশ অপবাদ। রাগে, দুঃখে, অপমানে শরীরের রক্ত টগবগ করছে। কিংবা নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা নিয়ে আপনার সঙ্গে চূড়ান্ত অন্যায় করলেছেন ওই প্রিয় মানুষটি বা পরিবারের মানুষজন। অথবা ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আত্মীয়-পরিজন বা কোনো সহকর্মী বড় কোনো ক্ষতি করেছেন; চলতিপথে রিকশাচালক, পথচারী কিংবা গণপরিবহনের হেলপারের কাছে অযথাই দুর্ব্যবহার পেলেন; এসব পরিস্থিতিতে কী করেন বা কী করবেন? তাহলে আজ ক্ষমা করে দিন কেননা আজ ক্ষমা করে মানসিক চাপ কমানোর দিন। তাছাড়া মানুষের মধ্যে মহৎ গুণের অন্যতম একটি গুণ হচ্ছে ‘ক্ষমাশীলতা’ সর্বোৎকৃষ্ট এ গুণ মানুষকে মহৎ বানায়। সম্মান বাড়ায়। পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় করে।ব্যক্তিভেদে প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হবে, এটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ মানুষই হয়তো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠবেন। আর যারা একটু অন্যরকম, মানবিক, ক্ষমাশীল হৃদয়ের মানুষ, তারা কিন্তু সে পথ মাড়াবেন না। তারা দুঃখ পাবেন, আড়ালে মুখ লুকিয়ে বিষাদ লুকাবেন হয়তো। মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে ছোট্ট করে হাসি ফুটিয়ে তুলবেন মুখে। তারপর মনে মনে বলবেন, ‘ব্যাপার না, ক্ষমা করে দিলাম।’ক্ষমা করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত এক স্বর্গীয় সুখে তার মন ভরে উঠবে। মার্কিন মনোবিজ্ঞানী এভারেট অর্থিংটন সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে অন্যকে ক্ষমা করলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ৫টি দেশের ৪ হাজার ৫০০ জনের ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। অনেক গবেষণাপত্রেই এমন ফলাফল উঠে এসেছে। ক্ষমার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে গড়ে ওঠে সুস্থ ও সুন্দর সম্পর্ক। হতাশা, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমে যায়। শত্রুতা হ্রাস পায়। গবেষকরা জানান, ক্ষমার সঙ্গে মানুষের দৈহিক সুস্থতাও অনেকাংশে সম্পর্কিত। ক্ষমা করার গুণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে, এমনকি দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মোদ্দাকথা, বিদ্বেষ, রাগ বা প্রতিশোধপরায়ণতার মতো নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো ক্ষমার মতো মহৎ গুণ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে পারলে অপার সুখে ভরে ওঠে মানবজীবন।আজ ৭ অক্টোবর, ক্ষমা করে সুখী হওয়ার দিন (ফরগিভনেস অ্যান্ড হ্যাপিনেস ডে)। যুক্তরাষ্ট্রে এটি পালিত হয়। রবার্ট ময়ার্স নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফরগিভনেস অ্যালায়েন্স দিনটি চালু করে। দারুণ এই দিবস কিন্তু পালন করা যেতে পারে। যারা ভুল বা অন্যায় করেছেন আপনার সঙ্গে, ক্ষতি করেছেন, আপনাকে অপমান–অপদস্থ করার চেষ্টা করেছেন, তাদের ক্ষমা করে দিন। দেখবেন ঘৃণা, অভিযোগ, দোষারোপ, অভিশাপ, প্রতিশোধের মানসিকতামুক্ত জীবন সুখে ভরপর! এবি 
    ঐতিহ্যবাহী পানাম নগর
    সোনারগাঁ বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জল প্রাচীন জনপদ। সোনারগাঁ জাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি ও শিল্পকলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁর একাংশে রয়েছে পানাম নগর। পানাম নগর বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে পানাম সিটি অবস্থিত। বর্তমানে পর্যটনের নগরী হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। এখনে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজারো পযর্টক ঘুরতে আসেন। পানাম নগরকে সরকার ২০০৩ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে গেজেটভুক্ত করে ২০১৫ সালে ৬ অক্টোবর পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়।জানা গেছে, সোনারগাঁ ছিল বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীন পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র।তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সোনারগাঁ ছিল বাংলার মুসলিম শাসকদের রাজধানী। এখানে রয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহাসিক নানান সব নিদর্শন।এখনো পানাম নগরে দেখা যায় অপূর্ব ও নিপুণ কারুকাজখচিত প্রাচীন সব ইমারত। সরু রাস্তার দুই পাশে অট্টালিকা, সরাইখানা, মসজিদ, মন্দির, মঠ, ঠাকুর ঘর, গোসলখানা, কূপ, নাচঘর, খাজাঞ্চিখানা, টাঁকশাল, দরবার কক্ষ, গুপ্তপথ, প্রশস্ত দেয়াল, প্রমোদালয় জানান দেয় এ নগরের প্রাচীন সমৃদ্ধির কথা।পানাম নগরের বিভাশিত বর্নাঢ্য-ইমারত সমূহ স্বাক্ষ্য দেয় একসময় সোনারগাঁয়ের অভিজাত নাগরিকদের বসবাসের কেন্দ্র ছিল। ১২৮১ খ্রিষ্টাব্দে এই অঞ্চলে মুসলিম আধিপত্যের সূচনার পর আওরঙ্গজেবের আমলে বাংলার রাজধানী ঢাকা ঘোষণা হওয়ার আগপর্যন্ত মুসলিম সুলতানদের রাজধানী ছিল সোনারগাঁও। যদিও তখন প্রাচীন এই রাজধানী পানাম নামেই পরিচিত ছিল। ঈশা খাঁ ও তার বংশধরদের শাসনামলে সোনারগাঁ ছিল পূর্ববঙ্গের রাজধানী।সরেজমিনে দেখা গেছে,কোনো রকম টিকে আছে ঈশা খাঁর শাসনামলে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক পানাম নগর।পানাম নগরের প্রত্যেকটি ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ।পানাম নগর হারাতে বসেছে তার ঐতিহাসিক রূপ, সোন্দর্য ও জৌলুস। এই নগরের অনেক প্রাচীন স্থাপনাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকার এ শহরের মাঝে দিয়ে চলে যাওয়া সড়কের দুই পাশে ছোট-বড় ১০২টি ইমারত একসময় শোভা পেলেও বর্তমানে কোনো রকম টিকে আছে মাত্র ৫২টি ভবন।পানাম সিটির মাঝে দিয়ে যে সড়কটি রয়েছে, তার একপাশে ৩১টি আর অপর পাশে ২১টি ভবন রয়েছে। এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়েছে মাত্র দুটি (৪ নম্বর ও ১৩ নম্বর) ভবন।এক সময়কার ঐশ্বর্যমণ্ডিত আজকের জীর্ণ-পরিত্যক্ত পানাম নগরী তার অন্যতম স্মৃতি স্মারক। সোনারগাঁয়ে আকাশে-বাতাসে, জরাজীর্ণ প্রতিটি অট্টালিকার ইটের পরতে পরতে আজও যেন ধ্বনিত স্পন্দিত হয় বাংলার গৌরবময় রোমাঞ্চকর ইতিহাসের চাপা দীর্ঘশ্বাস।পানাম নগর একসময় সন্ধ্যা নামার পর নাচ, গান, সুর ও সাকির আয়োজনে মেতে উঠত; নৃত্যের তালে তালে ঝুমুরের শব্দ ও তানপুরার সুরে মুখর হয়ে উঠত সোনারগাঁর বাতাস। আজ সেই নগরে সন্ধ্যা নামলে নেমে আসে গা-ছমছমে নীরবতা।যে নাচঘরে সারা রাত চলত জলসা, নর্তকীর পায়ের ঘুঙুরের শব্দে মুখরিত থাকত; সেই নাচঘর এখন আর আলোকিত হয় না। নামিদামি বণিক ও পর্যটকদের ডিঙি নৌকা ভেড়ে না নগরের ময়ূরপঙ্খি ঘাটে। এখন যেন পানাম নগরের দেয়ালে কান পাতলে শোনা যায় নগরের হাহাকার আর আর্তনাদ।স্থানীয় ইতিহাসবিদ, লেখক ও বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকেও পানাম নগরীর রাস্তার দুই পাশে প্রাচীনকালের প্রায় একই আদলে তৈরি একতলা ও দ্বিতলবিশিষ্ট ১০২টি ইমারত ছিল। ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বছরের বিভিন্ন সময় প্রায় অর্ধেক ভবন ধ্বংস হয়। ধসে যাওয়া ভবনগুলোর বেশির ভাগই ধ্বংস করা হয়েছে ব্যক্তিগত লোভ-লালসার কারণে। আর কিছু ধ্বংস হয় প্রকৃতগতভাবে বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে।ঐতিহাসিকদের মতে, প্রাচীন সুবর্ণ গ্রাম থেকে সোনারগাঁ নামের উদ্ভব। ১৩ শতকের স্থানীয় হিন্দু রাজা দনুজ মাধব দশরথদেব সুবর্ণ গ্রামকে তাঁর শাসনকেন্দ্রে পরিণত করেন। বঙ্গ অঞ্চল মুসলিম শাসনে আসার পর থেকে ঢাকা সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগপর্যন্ত সোনারগাঁ ছিল স্বাধীন সুলতানি বাংলার অন্যতম রাজধানী ও প্রশাসনকেন্দ্র। হাজার বছরের প্রাচীন। শহর সোনারগাঁ কেমন ছিল, তা আর আজ জানা যায় না। সেই অজানা নগরের কথা বলতেই যেন সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পানাম নগর। স্থানীয় লোকজনের কাছে যা 'মৃত নগরী' বা 'রহস্য নগরী'। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সূত্রমতে পানাম নগরের স্থাপনাগুলোয় ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতির সঙ্গে মোগল ও সুলতানি স্থাপত্যরীতির মিশ্রণ রয়েছে। নিখুঁত নকশায় গড়া একটি সমৃদ্ধ নগর ছিল পানাম। এর সঠিক বয়স জানা যায় না। তবে ধারণা করা যায় যে শত শত বছর ধরে পানাম মূলত সমৃদ্ধ ব্যবসানগরী হিসেবে গড়ে উঠেছিল। ঐতিহ্যের মসলিন ও পরবর্তীকালে নীল কেনাবেচার কেন্দ্র হিসেবে এই নগরকে ব্যবহার করা হয়েছে।ঐতিহ্যমণ্ডিত এবং ঐতিহাসিক এই স্থাপনাগুলো অনতিবিলম্বে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে সচেতন সুধীমহল মনে করেন। সেই সঙ্গে এই পুরাকীর্তিগুলো তার পুরোনো কাঠামো এবং আদলেই সংস্কার ও সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন, নয়তো যে কয়েকটি স্থাপনা এখনো অবশিষ্ট আছে, একসময় তার শেষ চিহ্নটুকুও কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাবে এক ঐতিহ্যবাহী সমৃদ্ধ নগরীর গর্বিত ইতিহাস।এইচএ

    Loading…