বিশ্বে সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় ১১ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। এ বছর জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে’ ১৪৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম; গত বছর ছিল ১১৮ এবং ২০২২ সালে ৯৪ নম্বরে। এবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সবচেয়ে অসুখী মানুষ মধ্যবয়সীরা (৩০-৫৯ বছর)। বয়স্কদের তুলনায় কম সুখী ৩০ বছরের কম বয়সীরা।
বুধবার জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত বিশ্বের সুখী দেশ নিয়ে বার্ষিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। টানা সপ্তমবারের মতো তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের নরডিক অঞ্চলের দেশ ফিনল্যান্ড। তালিকায় একেবারে তলানিতে আফগানিস্তান। এবারই প্রথম মানুষের বয়স বিবেচনায় দেশগুলোর আলাদা র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বেশ কিছু দেশের তরুণ খুবই অসুখী। এ কারণে ওই সব দেশ তালিকায় পিছিয়ে গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সবচেয়ে সুখী মানুষের মধ্যে রয়েছে ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণরা। তাদের পরে সুখী মানুষ ৬০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা। আর সবচেয়ে অসুখী মধ্যবয়সীরা (৩০-৫৯ বছর)। সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের ৩০ বছরের কম বয়সীরা আছে ১২৮ নম্বরে, মধ্যবয়সীরা ১২৯ নম্বরে এবং বয়স্করা (৬০ বছর থেকে এর বেশি) আছে ১২০ নম্বরে। সামগ্রিক সুখের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯ নম্বরে।
সুখী দেশের সূচক তৈরির বেশ কিছু মানদণ্ড রয়েছে। এর মধ্যে ওই দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা অন্যতম। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাব্যবস্থা, নাগরিকদের মাথাপিছু আয়, দুর্নীতির পরিস্থিতি, সামাজিক সম্প্রীতি ও ব্যক্তিস্বাধীনতার মতো বিষয় আমলে নেওয়া হয়। এগুলোতে যেসব দেশ ভালো ফল করে, তালিকায় শীর্ষে তাদের ঠাঁই হয়। এসবে ভালো ফল করা এবারও সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় প্রথমে রয়েছে ফিনল্যান্ড।
তালিকায় ফিনল্যান্ডের পর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড ও সুইডেন। এ ছাড়া সুখী দেশ হিসেবে পাঁচ নম্বরে রয়েছে ইসরায়েলের নাম। নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান তালিকার যথাক্রমে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম স্থানে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে নেপাল রয়েছে ৯৩তম, পাকিস্তান ১০৮তম, মিয়ানমার ১১৮তম, ভারত ১২৬তম ও শ্রীলঙ্কা ১২৮তম, আফগানিস্তান ১৪৩তম অবস্থানে। প্রায় এক দশক আগে থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ শুরুর পর এবারই প্রথম শীর্ষ ২০ সুখী দেশের তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্র (২৩) ও জার্মানি (২৪)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের সব বয়সীর মধ্যেই সুখী মানুষের সংখ্যা কমেছে। তবে তরুণরা অনেক কম সুখী। ২০১০ সালে তরুণরা মধ্যবয়সীদের তুলনায় বেশি সুখী ছিল। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ১০-১২ বছর বয়স থেকে ১৫-২৪ বছর বয়সীদের আর্থসামাজিক অবস্থান খুবই খারাপ। আলজেরিয়া, তুরস্ক, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এটি পরিলক্ষিত হয়েছে।
গবেষণার এক সম্পাদক অধ্যাপক জেন ইমানুয়েল ডি নেভে বলেন, উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের তরুণরা অনেক বেশি অসুখী।
এফএস