যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকে জোনাকি (১১) নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের মুখ, হাতে, পা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই কিশোরীর সৎ মাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। নিহত জোনাকি যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পোড়াবাড়ি গ্রামের শাহীন তরফদারের মেয়ে।
বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, জোনাকি বেনাপোলে তার নানার বাড়িতে থাকতো। ৫ দিন আগে সে যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে বাবা ও সৎ মায়ের বাসায় বেড়াতে যায়। সোমবার সকাল ১০টা থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় সাধারণ
ডায়েরি করা হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তার বাবার বাসার পাশে পরিত্যক্ত পুকুর থেকে জোনাকির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
জোনাকির মেজো বোন চুমকি খাতুন বলেন, আমার ছোট বোন বেনাপোলে আমার দাদির কাছে থাকে এবং সেখানে তৃতীয় শ্রেনীতে পড়াশুনা করে। আমার আব্বুর (শাহিন তরফদারে) অনেক
সম্পত্তি আছে। আমার সৎ মা সেগুলো তার করে নিতে চায়। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে সৎ মা নাগিস বেগম আমার বোন জোনাকি খাতুনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।
নিহতের দাদি সুববান বেগম বলেন, আদর যত্নে আমার কাছে বড় হচ্ছিল জোনাকি। আমার ছেলের কাছে ঘুরতে আইছিল ছয়দিন আগে। সোমবার শুনি আমার কলিজার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আমি অনেক খোঁজাখুজি করেও কাল আর পাইনি। আজ (মঙ্গলবার) একজন বললো বাড়ি পেছনের পুকুরে জোনাকির মরদেহ ভাসছে। পানি থেকে জোনাকি এর উঠিয়ে দেখি হাটু, পা, হাত, গলা শরীরে সব জায়গায় ক্ষত চিহ্ন। আমার নাতনীরে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যার বিচার চাই।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, সোমবার থানায় জিডি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই কিশোরীর সৎ মাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে জানান ওসি।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের সৎমাকে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এমআর