কুমিল্লার আর্দশ সদর উপজেলার সাবেক ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যা মামলায় একই উপজেলার কালিবাজারের ইউপি চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী সহ ১৪ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত । সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় দেন। এই সময় আসামীদের দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৫ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও ৩ পলাতক রয়েছেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুমিল্লা জেলার কোতওয়ালী থানার ধনুয়াখালী এলাকার অমৃত হাজী মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ সেকান্দর আলী (৬৪), একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মোঃ শাহীন (৩৯), সৈয়দপুর এলাকার আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩২), কমলাপুর এলাকার মোঃ মোজাম্মেল হকের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম (২১), যশপুর এলাকার মৃত আহম আলীর ছেলে মফিজ ভান্ডারী, কমলাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার মোঃ জয়নাল মাস্টারের ছেলে মোঃ কায়সার (৩২), কমলাপুর এলাকার মৃত মনিরের ছেলে মোঃ রিয়াজ (৩৩), মনশাসন এলাকার শফিক মেম্বার এর ছেলে বিল্লাল, কমলাপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে কামাল হোসেন, কালির বাজার ইউনিয়নের আবদুল ওহেদ এর ছেলে মোঃ ইব্রাহীম খলিল (৪৫), রায়চোঁ এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান, সৈয়দপুর এলাকার মৃত হাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন, বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আব্দুল কাদের, নারায়নসার এলাকার মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে আনোয়ার।
মামলার তথ্যমতে, নিহত পারভেজ ২০২০ সালে ১০ই জুন বিকেলে তার বাড়ি থেকে বের হয়ে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় গেইটের মনির হোসেনের দোকানের সামনে আসলে পূর্ব পরিকল্পনা মতে আসামিগণ হাতে চাপাতি লোহার স্টিক হকিস্টিক ও দেশে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিহত পারভেজকে ঘেরাও করে তৎকালীন কালিবাজার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীর নির্দেশে পারভেজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রথমে মোটরসাইকেলে উঠানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে একটি মারুতি গাড়ি থামিয়ে পারভেজকে মারধর করে গাড়িতে উঠিয়ে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কমলাপুর বাজারে আসামি কামালের ছ'মিলে নিয়ে গিয়ে আসামী কামাল, মফিজ ভান্ডারী সহ অন্যান্য আসামিদের হাতে থাকা চাপাতি রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পারভেজকে আঘাত করতে থাকে।
এই সময় আসামী কামালের বড় ভাই সেলিম ( মৃত) চিল্লাচিল্লি করে আসামীদের ছ'মিল থেকে বের করে দিলে ছ'মিল থেকে ২০০ গজ পূর্ব দিকে মোকশদ আলীর কাঠের বাগানের ভিতরে নিয়ে সেকান্দর আলী চেয়ারম্যানের নির্দেশে ও পূর্ব পরিকল্পনা মতে আসামিগণ পারভেজকে চাপাতি রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে হত্যা করে।ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ করেন।
পরে মালাটি তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসলে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই বাদী হয়ে আসামি করে মামলা করেন। তবে মামলা চলাকালে ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সোমবার দুপুরে এ রায় দেন আদালত।
এদিকে রায়ের অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে নিহত পারভেজের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন,আসামি সবার ফাঁসি চেয়েছি,আমার জামাইরে তারা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো।
এমআর