আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় টানা ২২ দিন ধরে অব্যহত রয়েছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা। এখানে বাতাসে বইছে আগুনের হল্কা। বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে শরীর ঝলসে যাচ্ছে।
দাবদাহের এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই জেলার প্রতিটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রিক্স-ভ্যান চালক ও পথচারিদেরকে ক্ষনিকের স্বস্থি দিতে ও পাপাসা নিবারণেন জন্য সুপেয় পানি, শরবত, স্যালাইন, আখের রস, ডাব খাওয়ানো হচ্ছে এবং ছাতা উপহার দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (০২ মে) বেলা ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১০ শতাংশ।
বাতাসে জলীয় বাষ্পেন পরিমাণ অনেক বেশী থাকায় ঘরে ভ্যাপসা গরম আর বাইরে রোদের তাপে শরীর জ্বালা পোড়া অনুভূত হচ্ছে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান।
আর এই দাবদাহে সবচাইতে বেশি বিপাকে পড়েছে দিন মজুর খেটে খাওয়া রিক্সা ভ্যান চালকরা। হিট স্ট্রোকের ঝুকি মাথায় নিয়ে রিক্সা ভ্যান চালক ও দিন মজুর শ্রমিকরা কাছ করছে বাধ্য হয়ে।
এদিকে অতি তীব্র তাপদাহে গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ। পানির স্থর নিচে নেমে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা অধিকাংশ গ্রামে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। আবার পানি দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না মাঠের সবজি আবাদ। শুকিয়ে যাচ্ছে সড়কের ধারের নিমসহ বিভিন্ন ফলজ ও বোনজ গাছসহ গাছের পাতা।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এই জেলায়। একটানা প্রায় ২১ দিন দেশের সর্বোচ্চ তীব্র থেকে অতিতীব্র দাবদাহে হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও চিকিৎসক রয়েছে ১০০ শয্যার হাসপাতালের অর্ধেক। সামান্য এই জনবল নিয়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। গরম জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা হাসপাতালের বারান্দা ও করিডোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া আউটডোরে শাত শত গরমজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষ চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর এ রোগে আক্রান্তের বেশীর রোগীই শিশু ও বৃদ্ধ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫২ শতাংশ। দুপুর ১২ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ০ (শূণ্য) ডিগ্রী সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আদ্রতা ছিলো ১৯ শতাংশ। বেলা ৩ টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১০ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, গত প্রায় ২১ ধরে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় জেলায় হিট এলার্ট জারী আছে। আজ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রীতে উঠা নামা করছে। আগামী দু'দিনের মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে। বৃষ্টির দেখা মিললে জেলাবাসি কিছুটা হলেও স্বস্থি পাবে।
এআই