যাকাত এবং হজ্ব দুটোই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দুইটি বিধান। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম দুইটি হলো যাকাত ও হজ্ব। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যদি কারোর ওপর হজ্ব ফরজ হয় কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও যাওয়া হয়নি। এদিকে এই উদ্দেশ্যে কিছু বছর যাবৎ ব্যাংকে টাকাও জমা করছেন। তো এখন এই টাকার ওপরও কি প্রতি বছর জাকাত দিতে হবে?
কোনো ব্যক্তি যদি হজে যাওয়ার নিয়তে টাকা জমায়। কিন্তু কোনো কারণে যেতে দেরি হয় এবং এই টাকা এক বছরের বেশি সময় তার কাছে জমা থাকে তাহলে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতে, এই টাকার জাকাত দিতে হবে। হজের উদ্দেশ্যে জমানো টাকার ওপরও প্রতি বছর জাকাত দিতে হবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আর তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয় আল্লাহ তা দেখেন। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১১০)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য যে রাখে, সে যেন হজ্ব করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করবে সে কুফুরির আচরণ করবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ব প্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)
হজ্ব ও জাকাতের ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্য থাকা আবশ্যক। তবে হজ্ব ও জাকাতের কিছু পার্থক্য রয়েছে। জাকাতের সঙ্গে নিসাবের সম্পর্ক। যে পরিমাণ অর্থ থাকলে জাকাত ফরজ হয়, তাকে নিসাব বলে।
অর্থাৎ, কারো কাছে সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রুপা অথবা এই পরিমাণ সম্পদ বা টাকা থাকলে এবং এই সম্পদ তার মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে এবং এই সম্পদ পুরো এক বছর থাকলে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব।
বিপরীতে কারো কাছে নিজের দেশ বা ভূমি থেকে মক্কায় গিয়ে— আবার ফিরে আসার সামর্থ্য থাকলে, হজ্ব ফরজ হয়। এই সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া জরুরি নয়।