এইমাত্র
  • জরুরি বৈঠক ডাকল ইরান সরকার
  • শেরপুরে ইজিবাইকের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু
  • ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ কী?
  • রামপুরায় অবরোধ ছেড়ে দিলো রিকশাচালকরা, যান চলাচল স্বাভাবিক
  • ডিপজল সম্পাদক পদে বসতে পারবেন না
  • ফুসফুস ভালো রাখতে কী খাবেন?
  • রাজশাহীতে আগুনে পুড়ে ছাই ১০ বিঘা পানের বরজ
  • কক্সবাজারে অপহরণ চক্রের প্রধান আসামি অস্ত্রসহ গ্রেফতার
  • অডিশনে একদিনে ১০ জনকে চুমু খেতে হয়েছিল যে অভিনেত্রীকে
  • উখিয়া ক্যাম্পে চার আরসা সদস্য আটক, অস্ত্র উদ্ধার
  • আজ সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪
    ফিচার

    পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার

    ফিচার ডেস্ক প্রকাশ: ৯ মে ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
    ফিচার ডেস্ক প্রকাশ: ৯ মে ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম

    পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার

    ফিচার ডেস্ক প্রকাশ: ৯ মে ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম

    আমরা সাধারণত সিনেমা বা ওয়েব সিরিজে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার এর গল্প অহরহ দেখি কিন্তু বাস্তবে সিরিয়াল কিলার সম্পর্কে ঠিক কত খানি জানি! সিরিয়াল কিলাররা সাধারণত বিকৃত চিন্তা ভাবনা, রাগ, উত্তেজনা, অর্থের প্রভাব ইত্যাদি কারণে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সিরিয়াল কিলাররা একই নিয়মে তাদের হত্যার কাজ করে থাকে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর গবেষণা।

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিরিয়াল কিলারদের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েদেরও দেখা যায়। তবে মেয়েদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। চলুন জেনে নিই পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্কর কিছু সিরিয়াল কিলার সম্পর্কে-

    লুইস গারাভিটো

    লুইস গারাভিটোর নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। কারণ, তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার, বাংলায় যাকে বলি ক্রমিক খুনি। কলম্বিয়ার এই নাগরিক ১৯৯২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিন শতাধিক খুন করেন, যাদের প্রায় সবাই ছিল শিশু। গ্রেপ্তারের পর লুইস ১৮৯টি খুনের কথা নিজেই স্বীকার করেন। ৩৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এই খুনি এখন কলম্বিয়ার ভ্যালেদুপার কারাগারে বন্দী।

    লুইসের বৈশিষ্ট্য হলো, খুনের আগে তিনি শিশুদের ধর্ষণ ও নির্যাতন করতেন। তার টার্গেট করা শিশুদের প্রায় সবাই ছিল পথশিশু। যেসব খুনের কোনো ক্লু সহজে পাওয়া যেত না। কিন্তু একটি খুনের বেলায় ঘটনাস্থল থেকে তার বান্ধবীর লেখা একটি চিরকুট পড়ে যায়। সেটাই কাল হয় লুইসের। সেই সূত্র ধরে পুলিশ তাকে পাকড়াও করে।

    রিচার্ড কুকলিন্সকি

    আমেরিকানদের কাছে “আইসম্যান” হিসেবে পরিচিত এই কুখ্যাত খুনী ২৫০ এরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। ভিকটিমবে বরফে জমিয়ে মেরে ফেলত সে! তার এই অভিনব পদ্ধতি যাতে পুলিশের হাতে না যায় সেজন্য, মৃত দেহের আশপাশে বিভিন্ন ধরণের খুনের যন্ত্রপাতি রেখে যেত সে।

    এতে পুলিশও দ্বিধায় ভুগত! পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার নামে ৫ টি খুনের অভিযোগ আনা হয়! কারণ তার বেশিরভাগ খুনেরই কোন প্রমাণ থাকত না! নিজের ভিকটিমদের মারতে গিয়ে খুব কমই নিরাশ হতে হয়েছে তাকে!

    জ্যাক দ্য রিপার :

    .ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার বলা হয় তাকে। ১৮৮৮ সাল থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত পূর্ব-লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেলের আশপাশ জুড়ে সর্বমোট এগারোটি খুনের ঘটনা ঘটিয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্য রিপার। তার কোনো ছবি তো দূরে থাকুক জ্যাক দ্য রিপার নামে কখনো কোনো লোক ছিল কি-না এ সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

    এই খুনগুলো যখন লন্ডনজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা আর আতঙ্কের ঝড় বইয়ে দিল, তখন এসব খুনের দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে জ্যাক দ্য রিপারের স্বাক্ষরযুক্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল লন্ডনের সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির কাছে। মূলত এরপর থেকেই মিডিয়ার কাছে ব্যাপক পরিচিতি পায় জ্যাক দ্য রিপার নামটি। এ ঘটনার আগেও অনেক সিরিয়াল কিলারের অস্তিত্ব ছিল ইতিহাসে। কিন্তু এ নামটির মতো আতঙ্ক এর আগে কেউ ছড়াতে পারেনি। তার চেয়েও বড় বিষয় এই খুনি ছিল সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে।

    তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি কখনোই। গত প্রায় ১২০ বছর ধরে জ্যাক দ্য রিপার ও তার হত্যাকাণ্ডগুলোকে ঘিরে রচিত হয়েছে অজস্র গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমা এমনকি ভিডিও গেমস।

    শুধু তাই নয়, জ্যাক দ্য রিপার যেসব স্থানে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়েছিল, সেসব স্থান দেখার জন্য সারা বিশ্ব থেকেই মানুষজন আসেন পূর্ব-লন্ডনে। জ্যাক দ্য রিপার যাদের হত্যা করেছেন, তাদের বেশিরভাগই ছিল পতিতা। জ্যাক দ্য রিপার যৌন কার্যের সময় ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করত। জ্যাক দ্য রিপার সত্যিকার অর্থে কত জন খুন করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

    পেদ্রো লোপেজ :

    .ইতিহাসের আরেক ভয়াবহ সিরিয়াল কিলার। তার জন্ম ইকুয়েডরে ৮ অক্টোবর, ১৯৪৮। তার প্রকৃত খুনের হিসাব আজ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয় সে ১১০-৩০০টি খুন করেছে।

    সে সব প্রথম মিডিয়াতে আলোচিত হয় ১৯৮০ সালের ৯ মার্চ। তার বিরুদ্ধে প্রচুর ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। অনেকের মতে সে ধর্ষণের পর ভিকটিমকে জবাই করত। তারপর রক্ত দিয়ে হাত ধুতো। সর্বপ্রথম তাকে মিডিয়াতে নিয়ে আসেন রন লেইটন্যার নামের ফ্রি ল্যান্সার।

    শিকাগোর একটি স্থানীয় পত্রিকা সর্বপ্রথম তার সাক্ষাৎকার রচিত হয়। ১৩ জুলাই ১৯৮০, রোববার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার ষোল বছরের কারাদণ্ড হয়। জেলখানায় ভালো ব্যবহারের জন্য তার ২ বছরের সাজা মওকুফ করা হয়।

    আন্দ্রেই চিকাতিলো :

    .জন্ম ইউক্রেনে পরবর্তী কালে রাশিয়ান নাগরিক এ সিরিয়াল কিলার বুচার অব রোস্তভ বা রোস্তবের কসাই হিসেবে কুখ্যাত ছিল। তাকে দ্য রেড রিপার নামেও ডাকা হতো। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে ৫৩ জন নারী ও শিশুকে হত্যা করার অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। সে যে প্রক্রিয়ায় হত্যাকাণ্ড ঘটাত তা এক কথায় নৃশংস। চিকাতিলো তার প্রথম হত্যাকাণ্ড ঘটায় ১৯৭৮ সালের ২২ ডিসেম্বর।

    ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েকে ফুঁসলিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কুকর্মে উদ্যত হয়। মেয়েটি চিৎকার চেঁচামেচি করলে সে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার ওপর কামচরিতার্থ ঘটায়। এভাবেই তার বিকৃত কর্ম শুরু। ১৯৯৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এই কুখ্যাত খুনিকে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে হত্যা করা হয়।

    রিচার্ড ট্রেনটন সেচ :

    .এই আমেরিকান সিরিয়াল কিলারের জন্ম ১৯৫০ সালে। হত্যাকাণ্ডের কারণে তার ডাক নাম ছিল ‘ভ্যাম্পায়ার অব স্ক্রেরামেন্টো’। তার প্রথম শিকার ৫১ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ার এমব্রোস গ্রিফিন। সেচ গ্রিফিনকে হত্যা করেন ১৯৭৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর।

    তার দ্বিতীয় শিকার টেরেসা ওয়ালিন ছিল অন্তঃসত্ত্বা। তাকে হত্যার পর তার সঙ্গে মিলিত হয় এবং তার রক্ত দিয়ে গোসল করে। ১৯৮০ সালের ৮ মে বিচারে গ্যাস চেম্বারে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়। কারাগারে অপেক্ষাকালীন সময়ে ১৯৮০ সালের ২৬ ডিসেম্বর তার সেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, প্রিজন ডাক্তারের প্রদত্ত ওষুধ অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে সে আত্মহত্যা করে।

    জাভেদ ইকবাল মুঘল :

    .তার পুরো নাম জাভেদ ইকবাল মুঘল। ১৯৫৬ সালের ৮ অক্টোবর পাকিস্তানে জন্ম নেয়া এই লোকটিকে উপমহাদেশের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার মানা হয়। তার হাতে প্রায় ১০০ শিশুর নৃশংস মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি মৃত্যুর সঙ্গেই যৌন নিপীড়নের যোগসূত্র ছিল। জাভেদের মানুষ হত্যার ক্ষেত্রে বিকৃত রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।

    ১৯৯৮ সালে জাভেদের বিষয়টি প্রথমবারের মতো সবার সামনে আসে। অবশ্য তখন এমন ভয়াবহতার কথা কেউ কখনো কল্পনা করেনি। সেবার ২ জন বালককে যৌন হয়রানির জন্য জাভেদকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু আইনের ফাঁক গলে ঠিক বেরিয়ে যায় সে। আর সে সঙ্গে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে জাভেদ। শুরু করে তার কুকর্ম।

    জাভেদ ছিল মিশুক প্রকৃতির। মিষ্টি মধুর কথা আর সুন্দর ব্যবহার দিয়ে খুব সহজেই মানুষের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলত। আর সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পরই স্বরূপে আবির্ভূত হতো সে। সুযোগ বুঝে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে ছুরিকাঘাত করে তাদের হত্যা করত। জাভেদের নৃশংসতার এখানেই শেষ ছিল না।

    হত্যার পর জাভেদ মৃতদেহগুলোকে টুকরো টুকরো করে ফেলত। আর দেহের খণ্ডাংশগুলো কোথাও ফেলে না দিয়ে হাইড্রোলিক এসিডভর্তি ড্রামে ডুবিয়ে রাখত। এতে করে অল্প সময়ের মধ্যেই দেহের খণ্ডাংশগুলো গলে যেত। তখন সেই গলিত দেহাবশেষের তরল স্যুয়ারেজ লাইন কিংবা নদীতে ফেলে দিত।

    একসময় জাভেদের বাড়িতে পুলিশ রিপোর্টাররা এসে ভয়ঙ্কর চিত্র আবিষ্কার করে। জাভেদের ভিকটিমের ব্যবহৃত ব্যাগ ও জুতা এবং অনেকগুলো ছবি পাওয়া যায়। এসিডের বোতল ছাড়াও ছুরি এবং আরও রক্তাক্ত জিনিস পাওয়া যায়। তার ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া যায়।

    পুলিশের কাছে ধরা খাওয়ার পর জাভেদ নিজেই গড়গড় করে তার সব অপরাধের বৃত্তান্ত তুলে ধরে। জাভেদের ভাষায়, ‘আমি চাইলে ৫০০ বালককে হত্যা করতে পারতাম। তার ফাঁসি কার্যকর করার আগে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর প্রিজন সেলে তাকে ছুরিকাহত হয়ে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষ জানায়, জাভেদ প্রিজন সেলে আত্মহত্যা করেছে।

    এরশাদ শিকদার :

    .বাংলাদেশের অপরাধীদের মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত নামটি হলো এরশাদ শিকদার। নৃশংসতা ও ভয়াবহতার দিক থেকে এরশাদ শিকদার সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তার জন্ম ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। ১৯৬৬-৬৭ সালে খুলনায় আসার পর আস্তে আস্তে সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। পেশায় প্রথম দিকে কুলির সহযোগী ছিল সে। পরবর্তী সময়ে চুরি-ডাকাতির সঙ্গে জড়িয়ে একসময় রাঙ্গা চোরা নামে পরিচিতি পায়। এরপর জড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ কিলিং মিশনের সঙ্গে। এরশাদ শিকদার যাকে পথের কাঁটা মনে করেছে, তাকে হত্যা করেছে।

    রাজসাক্ষী নূরে আলমের মতে, এরশাদ শিকদার কমপক্ষে ৬০টি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে সে ২৪টি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিল। এরশাদ শিকদারের ছয়টি বিয়ের কথা জানা গেছে। এরশাদ শিকদারের হাতে বহু নারী নির্যাতিত-লাঞ্ছিত হয়েছে। যাকে তার পছন্দ হতো, তাকেই সে ছলে-বলে-কৌশলে তার ডেরায় নিয়ে এসে নির্যাতন করত। ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার সময় তার নামে তিনটি মামলা ছিল।

    পরে এরশাদের নামে আরও ৪৩টি মামলা হয়। নিম্ন আদালতের বিচারে সাতটি হত্যা মামলায় তার ফাঁসির দণ্ডাদেশ হয়। চারটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়। ২০০৪ সালের ১০ মে মধ্যরাতে খুলনা জেলা কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।

    এবি

    .

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…