সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনকে আবারো সক্রিয় করতে চাচ্ছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। আগামী ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তবে এই কর্মসূচি ঘোষণার জন্য সুনির্দিষ্ট করে কোনো দিন ও তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
প্রাথমিকভাবে যুগপৎ আন্দোলনের জোট ও দলগুলোর কাছে কর্মসূচির বিষয়ে তাদের মতামত চেয়েছে বিএনপি। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে তারা লিখিত আকারে কর্মসূচির বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত বিএনপি’র কাছে জমা দিবে। এরপরে আবারো বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পরে সেই কর্মসূচিগুলো নিয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। তারপরে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর একদফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও যুগপতভাবে কোনো কর্মসূচি মাঠে গড়ায়নি। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে মিত্রদের পরামর্শ নিতে সিরিজ বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়। ১২ দলীয় জোটের পর একই স্থানে এলডিপির সঙ্গেও বৈঠক করেছে দলটি।
বৈঠকের শুরুতে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের নতুন কী কর্মসূচি নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে ১২ দলের নেতাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়। তখন জোটের কয়েকজন নেতা নির্বাচন বর্জন করে যুগপৎ কিংবা যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে থাকা সবাইকে নিয়ে ঈদুল আজহার পর ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার পরামর্শ দেন।
এ সময় দু-একজন নেতা ঢাকায় একমঞ্চ থেকে সমাবেশ এবং ঢাকার বাইরে সব মহানগরে একই আদলে সমাবেশের মতো কর্মসূচির প্রস্তাব করেন। তবে কেউ কেউ বলেন, কোনো কারণে একমঞ্চ সম্ভব না হলে যুগপতের পরিধি বাড়ানো যেতে পারে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আগামীতে আন্দোলন কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, দেশের অবস্থা ভালো নয়। মানুষ এ অবস্থার পরিবর্তন চায়। এ অবস্থায় যুগপৎ আন্দোলনকে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। কীভাবে সেটা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিগগিরই ১২ দলের পক্ষ থেকে আন্দোলনের কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হবে।
জোটের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আগামীর আন্দোলনের কী কর্মসূচি নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোরবানির ঈদের পর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। জোট নেতাদের মধ্যে জমিয়তের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ অন্যরা ছিলেন।