ভোর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। এমন বৃষ্টিময় সকালে ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন সবাই। এরমধ্যে বিকট শব্দে এস পড়ে ঘর লাগোয়া টিলাটি। টিলার মাটি ধসে একেবারে গুড়িয়ে যায় আধপাকা ঘরটি। আর তাতে চাপা পড়েন সাতজন। এর মধ্যে এক শিশুসহ তার বাবা-মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১০ জুন) সকাল ৬টায় নগরের মেজরটিলা এলাকার চামেলি বাগে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ঘুমের মধ্যে মাটি চাপা পাড়ে মাটির দেশেই চলে যায় পুরো পরিবার।
নিহতরা হলেন- আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও তাদের শিশু সন্তান নাফজি তানিম।
সিলেটের পাহাড় টিলাগুলোর পাদদেশে ঘর বানিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে অনেক পরিবার। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে টিলা ধসে এসব ঘরের উপর পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে থাকে।
ভারিবৃষ্টিতে সোমবার ভোর ৬টায় চামেলীবাগ এলাকার ২ নম্বর রোডের একটি টিলা ধসে ওই বাসার উপর পড়ে। এতে এই বাসায় ভাড়া থাকা সাত সদস্য মাটির নিচে চাপা পড়েন। চারজনকে তাৎক্ষণিক জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- আগা মাহমুদ উদ্দিন, আগা বাবুল উদ্দিন, আগা বাচ্চু উদ্দিন ও আগা শফিক উদ্দিন। বাকী তিনজনের সন্ধান মিলছিলোনা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সকাল থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস মাটি চাপা পড়াদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। এরপর বেলা ১২টার দিকে সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে নামে। সেনাবাহিনী অভিযান শুরুর কিছুক্ষণের পর নিখোঁজদের লাশ পাওয়া যায়।
এর আগে, সকালে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছিলেন, এই বাসায় দুই ভাই তাদের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। ভূমি ধসে ঘরের নিচে ৬ জন আটকা পড়েছিলেন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আমরা এসে এক ভাই, তার স্ত্রী ও তাদের সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছি। তবে আরেক ভাই, তার স্ত্রী ও ১ বছরের সন্তান নিখোঁজ আছেন ।
সোমবার দুপুরে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেই সরাসরি দুর্ঘটনাস্থলে যায় সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার গলিটি অত্যন্ত সরু। যে কারণে ফায়ার সার্ভিস ও সিসিকের গাড়ি বা মাটি কাটার যন্ত্র ঢুকানো যাচ্ছে না। উদ্ধার তৎপরতা ম্যানুয়ালি চালানো হচ্ছে।
আরইউ