টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ব্যাটে-বলে এ ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩ রানে আউট হয়ে যান তিনি। এরপরই ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেবাগ তারকা এ অলরাউন্ডারের সমালোচনায় মেতেছেন।
এদিকে সময়টা ভালো যাচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। সাকিব গত ৬ মাস থেকে নানা কারণে ভুগছেন। ইনজুরির কারণে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শেষ দিকে খেলা হয়নি তার। এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজে ফিরেছিলেন তিনি। তার নেতৃত্বও বাজে গেছে, পড়েছেন চোখের সমস্যাতেও। টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ফিফটি পেয়েছেন ২০২২ সালে, ১৯ ইনিংস আগে। সর্বশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সাকিবের ব্যাটিং পারফরম্যান্স ছিল খুবই বাজে। ২০২১ বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচ খেলে রান করেছিলেন ১৩১। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৫ ইনিংসে করেছেন মাত্র ৪৪। আর এবারের বিশ্বকাপটা শুরু করেছেন বিবর্ণভাবে।
মূলত সাকিবের এমন পারফরম্যান্সে ক্ষিপ্ত শেবাগ ধুয়ে দিয়েছেন তাকে। শেবাগ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রান তাড়ার সময় একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে সাকিবের বড় ভূমিকা থাকা দরকার ছিল। অথচ আনরিখ নরকিয়ার একটি শর্ট বল খেলতে গিয়ে বিদায় নেন তিনি।
ক্রিকবাজে এ নিয়ে শেবাগ বলেন, ‘তাকে যদি দলে অভিজ্ঞ হিসেবে নেওয়া হয়, তবে আমরা এর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তাকে অন্তত উইকেটে কিছুক্ষণ থাকতে হতো, এটা এমন না যে আপনি হেইডেন অথবা গিলক্রিস্ট যারা শর্ট বলে পুল শট খেলতে পারে। আপনি বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটার। নিজের মান অনুযায়ী খেলুন। আপনি যখন হুক বা পুল খেলতে পারেন না, তখন আপনি যেটা পারেন সেটাই খেলুন।’
বাংলাদেশ শ্রীলংকার বিপক্ষে এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিল। তবে সেই ম্যাচেও ব্যর্থ ছিলেন সাকিব। ১৪ বল খেলে ৮ রান করেছিলেন। এ নিয়ে শেবাগ বলেন, ‘তার এই স্কোরগুলোর জন্য তাকে লজ্জিত হওয়া উচিৎ। এমনকি তার বোঝা উচিৎ টি-টোয়েন্টিতে তার আর দেওয়ার কিছু নেই এবং অবসরের ঘোষণা দেয়া উচিৎ।’
সাকিবের অবসরের প্রসঙ্গে আলাপে নিজের অবসরের কথা উল্লেখ করেন শেবাগ, ‘যখন শ্রীলঙ্কায় বিশ্বকাপ হচ্ছিল, তখনই আমি বুঝেছি ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল বা আফগানিস্তানের বোলারদের বিরুদ্ধে আমি নিজের মত খেলতে পারছি না। তখনই নির্বাচকদের জানিয়ে দিই, আমাকে যেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বা এই ফরম্যাটে নেয়া না হয়। আমি কেবল ওয়ানডে এবং টেস্ট খেলে যেতে চাই।’
সাকিবের শেষটা এখনই দেখছেন শেবাগ, বিশ্বকাপের পর সাকিবকে আরে দলে দেখতে চান না শেবাগ। তাঁর মতে নির্বাচকদের কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, ‘কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় নির্বাচকদের এসেছে। তরুণদের সুযোগ দিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, যদি আপনি ফল না পান, তাহলে তরুণদের সুযোগ দিয়েই ম্যাচ হারুন। অন্তত তাতে ওদের অভিজ্ঞতা তো হবে। এরা তো তা থেকে কিছু শিখবে, সামনে অবদান রাখতে পারবে। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে কেন নিয়ে আসা হয়-কারণ, সে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে। দলের পরিবেশ ঠিক রাখে, অভিজ্ঞতা দিয়ে রান করবে, উইকেট নেবে, ডট বল দেবে। সাকিব তো এসব কিছুই করতে পারছে না। আমার মনে হয় না এই বিশ্বকাপের পর ওর খেলা উচিত। কিংবা ওকে খেলানো উচিত।’
এবি