ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ১১০ কিলোমিটার অংশে ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে যানবাহন বাড়লেও মহাসড়ক রয়েছে ফাঁকা। নেই তেমন যানবাহনের চাপও। তবে মহাসড়ক ধরে ট্রাকে ট্রাকে আসছে কোরবানির পশু। পশুবাহী ট্রাকগুলোয় থাকা চালক ও ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়কে যাত্রা স্বস্তির হচ্ছে; তারা এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার চাঁদাবাজির সম্মুখীন হননি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কের দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন অংশ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে দাউদকান্দি টোল প্লাজায় দুপুর ১২টায় কিছু যানজট দেখা যায়।
এদিকে সকাল থেকে সরেজমিনে এসব সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনগুলো নিয়ম নেমে চলাচল করছে। ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে যানবাহন দেখা গেলেও যানজট দেখা যায়নি। মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে আর এতে স্বস্তিতে যাত্রা করছেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী ও চালকরা।
মহাসড়কের বিভিন্ন পথে আসছে কোরবানির পশু। ট্রাকে ট্রাকে গরু নিয়ে ব্যাপারীরা বিভিন্ন হাটে আসছেন। রহমান মিয়া ব্যাপারী নামে এক ব্যক্তি ফেনী থেকে ৮টি গরু নিয়ে ঢাকা আসছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরু নিয়ে স্বস্তিতে দূরের পথ পাড়ি দিয়েছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। এমনকি চাঁদাবাজির ঝামেলাও ছিল না। এমন আরও কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে একই তথ্য পাওয়া গেছে। ট্রাক চালকরাও একই তথ্য দিয়েছেন।
কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায় ,কুমিল্লায় অঞ্চলে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করেছে হাইওয়ে পুলিশ। অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন ছাড়াও, কুইক রেসপন্স টিম, অতিরিক্ত উদ্ধারকারী রেকার এবং তথ্য সংগ্রহ করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।
এছাড়া ঈদ উপলক্ষে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নে ৪৪ টি মোবাইল টিম, ৩৪ টি পিকেট টিম, ঢাকা চট্টগ্রামের মহাসড়কের ২২ থানায় ২২ টি কুইক রেসপন্স টিম, ইন্টেলিজেন্স টিম রয়েছে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য, সরকারি এবং বেসরকারি রেকার মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমসার বাজার ও গৌরীপুর এলাকা পরিদর্শন করেছেন কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম। এসময় তিনি মহাসড়কের পাশে থাকা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি জনাব খায়রুল আলম বলেন, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের আশেপাশের সহ হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নে ১২৭টি কোরবানির পশুর হাট বসার কথা রয়েছে। মহাসড়ক সংলগ্ন রয়েছে ২৬টি গরুর হাট, এর মধ্যে ছয়টি কে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে মহাসড়ক এলাকায় কোন কোরবানির পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না। হাইওয়ে সংলগ্ন যেসব কোরবানির পশুর হাট রয়েছে সেগুলোর প্রতি বেশি নজর দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কেউ কোথাও কোন পশুবাহী যানবাহন থামাতে পারবে না। পশুবাহী যানবাহনের নিরাপত্তায়ও হাইওয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। গত রোজার ঈদের মতোই পরিকল্পনামাফিক মহাসড়ককে যানজট মুক্ত রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কে বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানি পশু নির্বিঘ্নে যেনো আসতে পারে, এজন্য আমরা রাত ও দিন ২৪ ঘন্টা হাইওয়ে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছি। আশা করছি, রোজার ঈদের মতোই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি সুন্দর ঈদযাত্রা উপহার দিতে পারব।