একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেও সংসার জীবনে স্থায়ী হতে পারেননি শোবিজাঙ্গনের তারকা দম্পতি অভিনেতা তাহসান খান ও অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ২০০৬ সালে বিয়ের প্রায় ১১ বছরের সংসার জীবনের সমাপ্তি ঘটে ২০১৭ সালে। তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে কলকাতার চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মিথিলা। তাও হয়ে গেল পাঁচ বছর। এরপর বিগত বছরগুলোতে কখনো একমঞ্চে, একসঙ্গে দেখা যায়নি একসময়ের জনপ্রিয় এই সাবেক তারকা দম্পতিকে।
তবে সম্প্রতি একটি ওয়েব সিরিজে একসঙ্গে কাজ করেছেন তাহসান-মিথিলা। ‘বাজি’ নামের ওই ওয়েব সিরিজের ট্রেলার মুক্তির দিনে একমঞ্চে হাজির হয়েছিলেন প্রাক্তন এই জুটি। কথা বলেছেন নিজেদের অভিনয় প্রসঙ্গে। প্রশংসা করেছেন একে অন্যের।
এরপরই তাহসান-মিথিলাকে নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে ভক্তদের মাঝে। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে অভিনেত্রীর। সম্প্রতি ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিথিলা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পরে একসঙ্গে কাজ করলেও নিজেদের মাঝে যোগাযোগটা ছিল। সেটাও একমাত্র মেয়ে আয়রার কথা চিন্তা করেই।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিথিলা বলেন, ‘২০১৬ সালে পরে আমরা আর কাজ করিনি। ২০১৭ সালে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এত বছর বাদে কাজ করলাম, লোকে আবার অনেক কথা বলতে শুরু করল।
কী রকম কথাবার্তা শুনতে হচ্ছে, সেটাও পরিষ্কার করেছেন অভিনেত্রী। মিথিলার কথায়, ‘কী আর? টাকার জন্য মিথিলা-তাহসান একসঙ্গে কাজ করল, অথচ বাচ্চার জন্য একসঙ্গে থাকতে পারল না! লোকে তো জানেই না আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা। আমরা খুব ভাল আছি। আমাদের যখন বিচ্ছেদ হয়, আয়রার তখন এক বছর বয়স। ওকে নিয়ে সব জায়গায় ঘুরেছি। বাড়ির সাহায্য পেয়েছি। তাহসানের কাছে বাচ্চাকে রেখে বাইরে গিয়েছি। কর্মসূত্রে যখন বাইরে যাচ্ছি, তখনও আমি আয়রাকে সঙ্গে নিয়ে গেলে কাজের জায়গা থেকে ওরা আপত্তি করেনি।’
মিথিলা জানান, বিচ্ছেদ হলেও তাহসানের সঙ্গে প্রতিদিনেই কথা হয় তার। অভিনেত্রী বলেন, আফ্রিকায় একটা কথা আছে, ‘একটা বাচ্চাকে বড় করতে পুরো গ্রামের প্রয়োজন’। এটাই সত্যি। আমি বলতে চাইছি, বাচ্চা মানুষ করার ক্ষেত্রে দাদু-ঠাকুরমা, শাশুড়ি, বন্ধু সকলকে দরকার। আমার ঢাকায় চলে যাওয়ার এটাই মূল কারণ ছিল, মেয়েকে পরিবার দেওয়া। দর্শক ভাবছে, ২০১৬-এর পরে ২০২৪-এ মিথিলা আর তাহসানের দেখা হরলো। এটা তো নয়, আমাদের তো প্রতিদিন কথা হয়। ব্যাপারটা এরকম নয় যে বহু বছর পরে দু’জনের দেখা, পিছনে গান বাজছে।
মিথিলার কাছে প্রশ্ন করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের পরও সম্পর্ক রাখা কি স্বাভাবিক? জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সব সম্পর্কে বন্ধুত্ব নাও থাকতে পারে। কিন্তু সন্তান থাকলে তার স্বার্থ আগে দেখতে হবে। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য আমার কাছে সবার আগে। এটাই উচিত।’
মিথিলা আরও বলেন, ‘আমি আয়রাকে দেখতে পেলাম না। আমি আর তাহসান লড়াই করলাম, এই ইগোর যুদ্ধে তো বাচ্চার ক্ষতি হবে। আমি আর তাহসান চৌদ্দ বছর একসঙ্গে থেকেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের আলাপ। দু’জন দু’জনকে ভালো করে জানি। আয়রা আমাদের দু’জনের কাছে সবার আগে।’ বলেন মিথিলা।
এবি