কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ৬টি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
২ হাজার ৩শ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত এবং বানভাসিদের সহায়তায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৮৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন থেকে ৫শ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ টাকা বিতরণরে জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃহস্পতিবার বিকালে হাতিয়া পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ধরলা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিকালে ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পরেছে বানভাসি মানুষ। তারা ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে। বেশিরভাগ বানভাসি মানুষ নৌকার মধ্যে রাত্রিযাপন করছে। সরকারি প্রশাসন থেকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ালেও এখনো সবার কাছে পৌঁছেনি সরকারি সহায়তা।
এদিকে জেলার বন্যা কবলিত এলাকায় প্লাবিত হওয়ার কারণে ৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি হাতিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের অন্তত ২৫ হাজার পরিবার। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার নতুন জেগে উঠা চরের ঘর-বাড়ি প্রায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে করে ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন পরিবারগুলো।
উলিপুর উপজেলার পুর্ব বালাডোবা চরের বাসিন্দা আফজাল প্রামানিক জানান, ঘরের প্রায় চাল পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। থাকার কোন উপায় নাই তাই বউ বাচ্চা, গরু-ছাগল নিয়ে উচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। খুব কষ্টে দিন কাটছে।
অন্যদিকে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের ঘর-বাড়িসহ নিম্নাঞ্চলের কাচা-পাকা সড়ক। এতে যাতায়াতের চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। এসব এলাকায় নৌকাই হয়ে উঠেছে একমাত্র যোগাযোগের ভরসা। তলিয়ে আছে এসব এলাকার বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত।
আগামী ২৪ ঘণ্টা ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, জেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১শ ৭৬ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে।
এফএস