এইমাত্র
  • ফোন ট্র্যাকিং হচ্ছে কি না যেভাবে বুঝবেন, বন্ধের উপায়
  • আম্বানিদের বিয়েতে যাদের দেখা যেতে পারে
  • রাতে নিখোঁজ, সকালে মিলল যুবকের লাশ
  • ড. শিরীন শারমিনের সঙ্গে মালয়েশিয়ার স্পিকারের বৈঠক
  • আমি বাঙালির মনের রাজা: শাকিব
  • ব্রাজিলের হারের পর সমর্থকদের দল বদলের হিড়িক
  • শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষককে হত্যা করলো শিক্ষার্থী
  • জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
  • কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • সাইন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যানচলাচল বন্ধ
  • আজ রবিবার, ২৩ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৭ জুলাই, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    দেনার ভয়ে গলায় দড়ি দিলেন যুবক

    মাহমুদুর রহমান, বরগুনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ পিএম
    মাহমুদুর রহমান, বরগুনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ পিএম

    দেনার ভয়ে গলায় দড়ি দিলেন যুবক

    মাহমুদুর রহমান, বরগুনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ পিএম

    ঋণ না পেয়ে দেনার ভয়ে খোকন কাজী (৩০) নামে এক চা দোকানী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আত্মহত্যার স্ট্যাটাস দিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। খোকন কাজী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চার নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ ইয়াছিন কাজীর ছেলে। সে ৬ বছর আগে আমতলী আসে এবং স্ত্রী নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠিয়েছে।

    জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন কাজীর ছেলে মো. খোকন কাজী ২০১৮ সালে আমতলী আসেন। আমতলী এসে বন্দর প্রাইমারী সড়কের রেভিনিউ মসজিদের একটি স্টল ভাড়া নিয়ে চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রায় ৪ বছর পূর্বে বরিশালের পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার লাভলু হাওলাদারের মেয়ে ডালিয়াকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে আমতলী নিয়ে আসেন। তারা দোকানের সামনে অবস্থিত সালেহা বেগমের বাসায় ভাড়া থাকতেন। এর মধ্যে খোকন চায়ের দোকান চালাতে গিয়ে বাকির কারনে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ডালিয়া বেগমের ৩ ভরি স্বর্ন বন্ধক রেখে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তার ঋণের পরিমাণ বারতে থাকে। দেনা পরিশোধের ভয়ে তিনি বিচলিত হয়ে পরেন।

    আজ বৃহস্পতিবার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তার ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ঋণ না পেয়ে তিনি দেনা পরিশোধের ভয়ে হতাশ হয়ে পরেন এবং দুপুর দেরটার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (নিজের এমডি খোকন কাজী আইডি থেকে) ফেসবুকে আত্মহত্যার একটি স্ট্যাটাস দেন। এর কিছুক্ষন পরই তিনি নিজ দোকানের দরজা (সাটার) বন্ধ করে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। দোকানের মধ্যে তার গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা দরজা খুলে তাকে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেন পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।

    ফেইসবুক স্ট্যাটাসে খোকন লিখেন, ‘সবাই আমাকে মাফ করে দিবেন আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি কিছুক্ষন পরে আমি আত্মহত্যা করবো। আমি চারপাশে অনেক ধারদেনা হয়ে গেছি নিজেকে আর সামাল দিতে পারছি না। একটা লোন হওয়ার কথা ছিল সেটাও আজকে হলো না। আমি আমার বউয়ের সকল গয়নাগাটি টাকা পয়সা খরচ করে পথের ভিখারী হয়ে গেছি। আমার বউ অথবা পৃথিবীর কারো দোষ নেই। আমার এই মৃত্যুর জন্য সকলে আমাকে মাফ করে দেবেন। মা বাবা ভাই বোন সকলে আমাকে মাফ করে দিবেন।’

    খোকনের স্ত্রী ডালিয়া বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, দুপুরে বাসায় এসে আমার ফোন দিয়ে কার সাথে যেন কথা বলে আবার বেড়িয়ে যায়। আমার সাথে কোন কথা হয়নি। এটাই আমার সাথে শেষ দেখা। এর কিছুক্ষন পর শুনি সে আত্মহত্যা করেছে। তবে কি পরিমান ঋণ রয়েছে এবং আজ বৃহস্পতিবার কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়ার কথা ছিল তা তিনি জানাতে পারেননি।

    রবিউল নামে খোকনের এক বন্ধু জানান, দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটের সময় আমার ফোনে কল দিয়ে ছিল কিন্তু আমি তখন নামাজে ছিলাম তাই ফোন রিসিভ করতে পারি নাই। নামাজ শেষ করে শুনি খোকন আত্মহত্যা করেছে। শেষ সময়ে কি বলতে চেয়েছিল তা আর শোনা হয়নি।

    খোকনের ভাই মো. মোজাম্মেল কাজী বলেন, ২০১৮ সালে খোকন আমতলী যায়। এর আগে সে বরিশালে টেইলারিং কাজ করতো। আমতলী যাওয়ার পর কি কারনে এত দেনা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।

    খোকনের মা মমতাজ বেগম কাঁদছিলেন আর বলছিলেন মোর পোলাডায় এই রহম ক্যা মইর্যাষ গ্যালো। টাহা লাগলে মোর সব বেইচ্যা টাহা দেতাম কির লইগ্যা তুই মোগো সব কান্দাইয়া চইল্যা গেলি। কথাগুলো বলছিলেন আর বিলাপ করছিলেন।

    আমতলী থানার ওসি তদন্ত আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…