মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে এমন ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।
তিনি বলেন, আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এর আগে আজ বুধবার সকাল ১১টায় সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এসময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে তৃতীয় দিনের মতো বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিতে ‘সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক অবরোধে’ নামেন তারা। সকালে সাড়ে ১০টা দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও মধুর ক্যান্টিনের সামনে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়ে সড়কে নামতে শুরু করেন।
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড বসিয়েছিল পুলিশ। তবে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা পুলিশের সেই ব্যারিকেড ভেঙে বিভিন্ন সড়ক ব্লক করতে থাকেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে রাস্তায় থাকা কোনও যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছে না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে কয়েকটি সড়ক ও সংযোগ রাস্তাগুলোতে অনেক গাড়ি আটকা পড়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার জন্য পথ তৈরি করে দিতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
সড়ক দখল করে মিছিলে আন্দোলনকারীরা ‘দফা এক, দাবি এক’, ‘কোটা নট কামব্যাক’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘কোটা না, মেধা? মেধা! মেধা!’, ‘ছাত্র সমাজের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘বাংলা ব্লকেড সফল করো!’, ‘সারা বাংলা অবরোধ, অবরোধ, অবরোধ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। অবরোধে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা হেডব্যান্ড মাথায় পরেন। অনেকের হাতে রয়েছে জাতীয় পতাকা। আবার কেউ কেউ জাতীয় পতাকা বেঁধেছেন মাথায়।