এইমাত্র
  • টাঙ্গাইলে বাস চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  • ফরিদপুরে নিখোঁজের একদিন নদী থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
  • এক বছর পর মাঠে ফিরলেন নেইমার
  • 'চাপাবাজীর অস্কার অনন্য মামুন পাবেন', বলছেন শাকিব ভক্তরা
  • রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল
  • ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা প্রকাশ
  • শেখ হাসিনার পদত্যাগ মীমাংসিত, বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
  • শেখ হাসিনা কীভাবে পদত্যাগ করেছেন, জানালেন আসিফ মাহমুদ
  • শুরু হলো বরবাদ'র শুটিং, শাকিব খান যোগ দেবেন কবে?
  • মিয়ানমার উপকূলে নৌকাডুবি, ১১ মরদেহ উদ্ধার
  • আজ মঙ্গলবার, ৭ কার্তিক, ১৪৩১ | ২২ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    বেলকুচি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ

    উজ্জ্বল অধিকারী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম
    উজ্জ্বল অধিকারী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম

    বেলকুচি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ

    উজ্জ্বল অধিকারী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম

    সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তেয়াশিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম রেজার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয় শ্রেণির এই চাকরির ১১তম গ্রেডের সর্বোচ্চ বেতন ৩২ হাজার ২৪০ টাকা। এই বেতনে চাকরি করেই কোটিপতি তিনি। বাস করেন সিরাজগঞ্জ শহরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাটে।

    এ ভূমি কর্মকর্তা বর্তমানে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তেয়াশিয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিসে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কামারখন্দ উপজেলার দশশিকা গ্রামের দলিল লেখক মৃত তসলিম মহুরীর ছেলে। পৈতৃক সুত্রে পাওয়া ১২ শতক জায়গা থেকে অঢেল সম্পদের মালিক এখন এই ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারী রেজাউল।

    জানা গেছে, রেজাউল করিম রেজা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী পদে ২০০৪ সালে যোগদানের পরই কপাল খুলে যায় এ কর্মকর্তার। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

    এক ভুক্তভোগী আল জাহিদ হোসেন বাধঁন বলেন, ‘জমির নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে গেলেই রেজাউল করিম রেজাকে ঘুষ দিতে হয়। আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এনায়েতপুর গোপালপুর মৌজার একটি জায়গা নামজারি করার জন্য ১৬ হাজার টাকা নিয়ে দের বছর পেরিয়ে গেলও জমির নামজারি করে দেয়নি। নামজারি কথা বলতে গেলে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে মারধর করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছে,এর পর বেলকুচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রতীক মন্ডল বরাবর ঘুষ নিয়ে নামজারি না করে দেওয়ায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। প্রায় এক মাস হলেও উপ-সহকারী রেজাউলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর এক মাস পার হলেও এসিল্যান্ড প্রতীক মন্ডল রেজাউলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাকে পুনরায় ঔ জায়গার নামজারির জন্য আবেদন করতে বলেন। গত ৬ আগস্ট সোমবার আবেদন করার পর এখনও কোন সমাধান পাইনি।

    সরেজমিনে ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এর মধ্যে নায়েব রেজাউল করিম রেজা ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের মাছুমপুর ফুটবল মাঠের পশ্চিমে সয়াধানগড়ায় ৪২ লাখ টাকায় কিনেছেন প্রায় ৫শতক জায়গা।

    দশশিকা গ্রামের শাহিন রেজা বলেন, নায়েব রেজাউল করিম রেজার বাবার বাড়ি সহ দেড় বিঘা জমি ছাড়া কিছুই ছিল না। এই চাকরি করে তার নিজ এলাকা কামারখন্দ উপজেলার কর্ণসুতি ও দশশিকা মৌজায় করেছেন বাড়ি, রয়েছে অন্তত ৫ বিঘা ফসলি জমি। ছেলেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে (ফিনল্যান্ড)পাঠিয়েছেন লেখাপড়ার জন্য।

    তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে তার নামে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার ৯৪ নং আসামি নায়েব রেজাউল করিম।

    জানা গেছে, আগেও তার ঘুস ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৯ সালে চাকরি চলে যায়। এরপর আওয়মী লীগের রাজনীতি করার সুবাদে নেতাদের সহযোগীতায় ২০১০ সালে আবার চাকরি ফিরে পান। এদিকে রেজাউল করিম রেজা অল্প দিনে আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়ায় বিস্মিত তার নিজ গ্রামবাসি।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার বাড়ির পাশের একজন বলেন, রেজাউল করিম রেজা ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হয়েই ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েন। এসব কারণে ২০০৯ সালে তার চাকরি চলে যায়। আওয়ামী লীগে রাজনীতি করার কারণে জেলার নেতাদের সহযোগীতায় ২০১০ সালে চাকরি ফিরে পান।

    কিন্তু অবৈধ ঘুস দুর্নীতির অভ্যাস আজও ছাড়তে পাড়েননি। নিজ এলাকায়ও তিনি লাখ লাখ টাকার সম্পদ কিনেছন। তার এই চাকরির বেতনে কিভাবে সম্ভব এটা আপনারাই বলেন।

    দৌলতপুর ইউনিয়নের তেয়াশিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী আলমিন বলেন, ‘জমির নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে গেলেই রেজাউল করিম রেজাকে ঘুষ দিতে হয়। গত ২০২২ সালে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২৪ শতক জায়গার বাবত (৩৭৫০০) ৩৭ হাজার ৫শ’ টাকা নিয়ে ১০ টাকার রশিদ কেটে দিলো। বাকি টাকার রশিদ চাইলে বলেন ওটা দেওয়া হয় না। এখন ২০২৪ সালে ঔ জায়গার খাজনা দিতে গেলে ভূমি উপ-সহকারী রেজাউল বলেন, ও জায়গা আপনার নেই, পরে জানতে পারি ২৪ শতক জায়গা আমার চাচাতো ভাইদের নামে নায়েব রেজাউল নামজারী করে দিয়েছে। এমন কি দেখা যায় ৮ বছর আগে মৃত ব্যক্তি নামেও নামজারি করে দিয়ছেন। এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রতীক মন্ডল বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে অভিযোগ পত্রটি গ্রহণ না করে আমাকে তিনি বলেন, আপনি নামজারির উপর মিস কেস করেন রেজাউলকে বলে ঠিক করে দেওয়া হবে।

    আল-আমীন আরও বলন, এভাবে ঘুষ নিয়ে কত জনের সর্বনাশ করেছে। সরকারের কাছে নায়েব রেজাউল এর সুষ্ঠ বিচার ও দুদককে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাই।

    রেজাউল করিম রেজা তেয়াশিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজার কাছে ঘুষ দুর্নীতি ও সম্পদের কথা জানতে চাইলে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা তবে লাখ লাখ টাকার জায়গা ও ছেলেকে বিদেশে পড়ালেখার কথা জানতে তিনি বলেন, চাকরির আগে ব্যবসার টাকা দিয়ে কিছু জায়গা কেনা ছিল আর বর্তমানে কিছু জায়গা কেনা হয়েছে। এ সময় ছেলে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে পড়ালেখার কথা তিনি এড়িয়ে যান।

    বেলকুচি সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতিক মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জানতে বলেন।

    বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, নায়েব রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে এর সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…