লালমনিরহাট-২ আসনের এমপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের আত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে সরকারি বিভিন্ন ভাতা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আকৃষ্ট করে গ্রামের দুই শতাধিক নারীর কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে থাকা নারী নাসিমা আকতার স্বপ্নাকে (৩৪) আটক করেছে থানা পুলিশ।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। আটক নারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের টাওয়ার পাড়া গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে। এর আগে আত্মসাত করা অর্থ ফেরতের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন শেষে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি দেয় ভুক্তভোগী পরিবার।
আদিতমারী থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানান, নানা প্রলোভনে গ্রামের নারীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত নারীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত নাসিমা আক্তার স্বপ্নার মা কোহিনূর বেগমের নামে রয়েছে সমাজসেবা থেকে রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত 'দুঃস্থ মহিলা কল্যাণ সমিতি' নামে একটি এনজিও। ওই এনজিওর ব্যানারে মেয়ে স্বপ্না নেয় কৌশলের আশ্রয়। প্রথমে সে গ্রামের নারীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে আকৃষ্ট করে। পরে এনজিও থেকে গরু, সমাজসেবা থেকে এককালীন অনুদান, শিশু ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ সরকারি নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দিয়ে গ্রামের সহজ সরল নারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করে।
এসময় সে নিজেকে লালমনিরহাট ২ আসনের এমপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের পরিচয় দেয়। সে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে প্রত্যেক নারীর কাছ থেকে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে। এভাবে এক পর্যায়ে গ্রামের দুই শতাধিক নারীর কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করে কৌশলী স্বপ্না। পরবর্তীতে কোন সুযোগ সুবিধা দিতে না পারলে এলাকার নারীরা স্বপ্নার ছলচাতুরী বুঝতে পারে। পরে তারা টাকা ফেরত চাইলে নানা টালবাহানা করতে থাকে স্বপ্না।একপর্যায়ে তাদের নানা ভয়ভীতি দেখায় স্বপ্না।
উপায়ান্তর না পেয়ে ভুক্তভোগীদের অনেকে থানায় অভিযোগ করেন। অনেকে আবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু এতেও কোন কাজ না হওয়ায় রাস্তায় নেমে এসে মানববন্ধন করে ভুক্তভোগী নারীরা।
এমআর