ময়মনসিংহে মৃত মানুষ ও অন্যের আঙুলের ছাপ চুরি করে গ্রামীণফোন সিম জালিয়াতির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক করে বিক্রির ঘটনায় মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ভালুকা উপজেলার মামারিশপুর এলাকার নাজমুল ইসলামের ছেলে হাফিজুল ইসলাম প্রিন্স (২৯), টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ঝটাবাড়ী এলাকার মিরাজ আলীর ছেলে আজিজুল হক (২৪) ও টাঙ্গাইল নাগরপুর করহাটা এলাকার শরিফ মোল্লার ছেলে তানভীর রহমান কাব্য (২৬)।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত পৌনে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার বন্ধুমহল নামে এক আবাসিক ভবনের ৩য় তলার একটি রুম থেকে সিম জালিয়াতির বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ওসি জানান, ২০২২ সালে টাঙ্গাইল জেলার একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার সাইন্সে ডিপ্লোমা পাশ করে প্রিন্স। এরপর টাকার লোভে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মৃত ও অন্য মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের সিম রেজিষ্ট্রেশন করে অসাধু চক্রের কাছে বিক্রি করে আসছিল। তাঁরা ৩ জন একসাথে একটি রুমে মোবাইল, ল্যাপটপ, বায়োমেট্রিক ডিভাইস, ক্যামিকেলসহ এই জালিয়াতির কাজ করতো।
ওসি আরও জানান, প্রায় ১ বছর যাবত আসামীরা বিভিন্ন প্রতারকের কাছে সিমগুলো মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করতো। এসব সিম ১৫ দিন পর অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়, এতে করে অপরাধীরা প্রতারণা করে অনায়াসে পার পেয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ (সংশোধনী/২০১০) এর ৩৫(২)/ ৫৫(৭)/৭৪ মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এসময় অভিযানকালে ঐ রুম থেকে ৩টি ল্যাপটপ, মোবাইলফোন, teach Nova নামে রাবার পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ ধরনের ২ বোতল কেমিক্যাল, ৩টি ফিঙ্গার হিটার মেশিন, ৮টি ফিঙ্গার বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, গ্রামীনফোন সিমের ২৫০ টি স্টিকার, ৩০ পিস ফিঙ্গার ছাপা যুক্ত নেগেটিভ, ২০০ পিস ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করার রাবার টুকরা, ১০ পিস ফিঙ্গার প্রিন্টে ব্যবহার করার রাবার, ৩০০ পিস গ্রামীনফোন সিমের স্টিকার, ৮ পিস ফিঙ্গার প্রিন্টের রাবার প্লেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করে পুলিশ।
এইচএ