নগরীর যানজট নিরসন, উপকূলীয় সুরক্ষা এবং আধুনিক নগরায়নের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প আরেকটি নতুন মাইলফলকের পথে। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য এর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে চলমান এই প্রকল্পসহ মোট ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেগা প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল উপকূলীয় বাঁধের মাধ্যমে জলোচ্ছ্বাস থেকে শহরকে রক্ষা করা, যানজট নিরসনে বাইপাস সুবিধা প্রদান করা এবং নতুন শিল্প ও পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তোলা। প্রকল্পটি ২০১১ সালে অনুমোদন পায় এবং প্রথম দফায় ৮৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
কিন্তু বাস্তবায়নের পথে নানা চ্যালেঞ্জ ও অতিরিক্ত উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে প্রকল্পটি পরপর চারবার সংশোধন করা হয়। প্রথম সংশোধনে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১,৪৯৬ কোটি টাকা, দ্বিতীয়বার ২,৪২৬ কোটি টাকা, তৃতীয়বার ২,৬৭৫ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ চতুর্থ সংশোধনে ৩,৩২৪ কোটি টাকা পর্যন্ত উন্নীত হয়। একইসঙ্গে প্রকল্পের সময়সীমাও বাড়তে থাকে, যা এখন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে গিয়ে শেষ হবে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য শুধু শহরকে জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করা নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত নগর উন্নয়ন প্রকল্পও। এর মাধ্যমে রয়েছে, উপকূলীয় বাঁধকে শক্তিশালী করা হবে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নগরকে সুরক্ষা দেবে। বাইপাস সংযোগের মাধ্যমে যানজট নিরসন হবে, বিশেষত কর্ণফুলী টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে এটি ঢাকা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচলে নতুন গতিপথ সৃষ্টি করবে। এবং নতুন পর্যটন ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে তোলা হবে, যা নগরীর অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে।
প্রকল্পের পরিচালক এবং সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সময়ের কণ্ঠস্বর-কে জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকিসব কাজ ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
এসআর