শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। হাতবোমার বিস্ফোরণ, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং অন্তত ১৬ জনের আহত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
এ ঘটনায় থানায় একটি বিস্তৃত মামলা দায়ের করা হয়েছে, যাতে ৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও প্রায় ১ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) থানার এক উপ-পরিদর্শক বাদী হয়ে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১ হাজার জনকে আসামি করে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিভিন্ন ধরণের বিস্ফোরক ব্যবহার, জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো, ক্ষয়ক্ষতি ও হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জলিল মাদবরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্য নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। এই বিরোধ সময় সময় উত্তেজনায় রূপ নেয় এবং সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের সমর্থকেরা।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সকালে এই বিরোধ ফের রূপ নেয় ভয়াবহ সংঘর্ষে। জাজিরার দূর্বাডাঙ্গা এলাকায় তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়, যা মুহূর্তেই বিস্তৃত আকার ধারণ করে। সংঘর্ষের সময় শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, ভাঙচুর করা হয় একাধিক বাড়িঘর। আতঙ্কে পালিয়ে যায় স্থানীয়রা।
সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন গুরুতর আহত হন। তাদেরকে প্রথমে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়, পরে গুরুতরদের ঢাকায় পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা কঠোর অবস্থান নেয় এবং এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উত্তেজনা যেন আর না বাড়ে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এসআর