এইমাত্র
  • নানকের পালিয়ে যাওয়ার খবরে সীমান্তে পাহারা-তল্লাশি
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ভিক্ষুককে কুপিয়ে হত্যা
  • সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে মাছ চাষির মৃত্যু
  • সীতাকুণ্ডে পুকুরঘাট থেকে বাবুর্চির মরদেহ উদ্ধার
  • ঘুরতে গিয়ে ভারতবিরোধী পোস্ট, বাংলাদেশি যুবকের ভিসা বাতিল
  • প্রতিবেশী দেশে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবুসহ ৪ জনকে নিয়ে ঢাকার পথে পুলিশ
  • কিশোরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খায়রুল স্মৃতি সংসদে দুর্ধর্ষ চুরি
  • ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে ৮ অভিবাসীর মৃত্যু
  • পদত্যাগ চাইলে সোহেল তাজকে গান শুনিয়েছিলেন শেখ হাসিনা
  • আজ সোমবার, ১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

    কৃষি ও প্রকৃতি

    লক্ষ্মীপুরে বন্যায় দেড় লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত
    লক্ষ্মীপুরে চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ২০৯ জন কৃষক। ক্ষতির পরিমান ২২৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।  সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ধান, আমনের বীজতলা, রোপা আমন ও সবজি ক্ষেতে। এছাড়া পান, আখ, হলুদ, আদা এবং নানা জাতের ফলজ গাছেরও ক্ষতি হয়েছে।বুধবার (১১সেপ্টেম্বর) জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনার কাজ চলছে বলে জানান জেলা কৃষি বিভাগ।জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৬০৭ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি করা ছিল। বন্যা, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে দুই হাজার ৫৩৬.৮০ হেক্টর জমির বীজতলা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। যা মোট বীজতলার ৭০ ভাগের বেশি। এতে ৬৩ হাজার ৪২০ জন কৃষকের ২৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৪ হেক্টর জমিতে। পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে ৭ হাজার ৬১০.৭০ হেক্টর জমির। যা আবাদকৃত মোট জমির ৫৩ ভাগ। এতে ৩১ হাজার ৭০৬ জন কৃষকের ৮৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।২৪ হাজার ৪২৩ জন কৃষকের ৪ হাজার ৭০.৫০ হেক্টর জমির আউশ ধান নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। বোনা আমনে ৯ হাজার ৭২০ জন কৃষকের এক কোটি দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।বন্যায় ১০ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমির শরৎকালীন শাক-সবজি নষ্ট হয়েছে। যা আবাদকৃত জমির শতভাগ। এতে ২০ হাজার ৭৮০ জন কৃষকের ৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।পান নষ্ট হয়েছে ১১২.২ হেক্টর জমির। এতে ১৬৬৩ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার। আদা নষ্ট হয়েছে ২৪০ জন কৃষকের ৮৩.৩৩ হেক্টর জমির। ক্ষতি হয়েছে ৭০ লাখ টাকার।৩৯ হেক্টর জমিতে থাকা ৯৮ মেট্রিক টন হলুদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২০৪০ জন কৃষকের ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।৭৪৪ জন কৃষকের ৯.৩ হেক্টর জমির আখ নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ৯ লাখ টাকা।২০৭৩ জন ফল চাষীর ৪১.৪৬ হেক্টর জমির ফল বাগান নষ্ট হয়েছে। এতে ২০৭ মেট্রিক টন ফলের ক্ষতি হয়েছে। যারা বাজার মূল্য ২ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সোহেল মো: শামসুদ্দীন ফিরোজ বলেন, চলমান বন্যা, বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা এবং পাহাড়ী ঢলের কারণে লক্ষ্মীপুরের ফসলি জমিতে পানি জমে গেছে। কৃষকের আমনের বীজতলা, রোপা আমন ক্ষেত, পান, সবজি ও ফলজগাছ নষ্ট হয়েছে। যার আর্থিকমূল্য প্রায় ২২৭ কোটি টাকা। আমরা ক্ষতির পরিমাণ নির্নয় করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। দ্রুত কৃষকের মাঝে যাতে পুনর্বাসন প্রণোদনা সরবরাহ করা যায়। কর্তৃপক্ষ সে নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা ৬ হাজার কৃষকের মাঝে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণ করেছি। তাদের এ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা করে সহয়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে।এছাড়া আগাম রবি মৌসুমের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ হাতে পেয়েছি। ১৩ হাজার ২০০ শ' কৃষকের মাঝে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমূখী, মুগ, মশুর, খেশারী, চিনা বাদাম, সয়াবিন, শীতকালীন পেয়াজ বীজ বিতরণের জন্য কর্মসূচি আসবে।আমন ধান চাষীদের উদ্দেশ্যে এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন ধানের চারা লাগাতে পারবে। তারা যেন নাভি জাতের বিআর-২২, বিআর-২৩ ধানের চারা রোপণ করে। এছাড়া আমরা যে বীজ দিয়েছি, বিআর-৭৫, বিআর-১৭, এ দুটা বীজ দ্রুত কাদাযুক্ত মাটিতে বপন করে ১৫ দিনের চারা জমিতে রোপণ করতে পারবে। এ ধান নির্দিষ্ট সময়ে ভাল ফলন দিতে পারে।তিনি বলেন, ৬৫ হাজার কৃষকের জন্য শীত কালীল সবজির প্রণোদনা চাহিদা পাঠিয়েছি। তারা যাতে বাড়ির আঙ্গিনায় শীতের সবজির চাষাবাদ করতে পারে, সে সহযোগিতা করা হবে। আমরা কৃষকের জন্য যতটুকু করনীয় তা করার জন্য তৎপর আছি। এসএফ
    করলা চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক তৈয়ব আলী
    পিরোজপুরের কাউখালীতে করলা চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন কৃষক তৈয়ব আলী। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেউন্দিয়া ব্লকের ঝাপষী গ্রামের আসমত আলীর ছেলে তৈয়ব আলী।উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের এসএ সি পি প্রকল্পের আওতায় পঞ্চাশ শতাংশ জায়গার উপর স্থায়ী মাচা তৈরি করে করলা (টিয়া সুপার) চাষ করেন।এ প্রকল্পে কৃষককে সহযোগিতা করেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ,সার, মাচা সহ বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে কৃষক তৈয়ব আলী প্রকল্প এলাকায় গেলে তৈয়ব আলী তার কৃষিকাজের সাফল্যের কথা আমাদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মাত্র ৫০ শতাংশ জমির উপর করলা চাষ করা হয়। এতে তার খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, মে মাসে করলা চারার বীজ বপন করা হয়। জুলাই মাস থেকে করলা বিক্রি শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ মণ করলা বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি মন করলা ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়েছে। ব্যাপারীরা তার খামার থেকে করলা কিনে নিয়ে যায়। এছাড়া স্থানীয় বাজারে খুচরা হিসেবে প্রতি কেজি করলা ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে বলে তিনি জানান। এ পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক টাকার করলা বিক্রি করেছেন। এখনো আরো ১০ মন করলা বিক্রি করতে পারবেন। তৈয়ব আলী স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়েকে বিবাহ দিয়েছে এবং এক ছেলেকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছে। অন্য ছেলেরা তার কৃষি কাজে সহযোগিতা করছে। ছেলে-মেয়েদের বেশি লেখাপড়া করাতে পারেননি তিনি। করলার পাশাপাশি বরবটি, কাঁকরোল, বেগুন,লাউ সহ বিভিন্ন সবজি সারা বছরই চাষ করে থাকেন। এ দিয়ে তার সংসার ভালোই চলছেন বলে তিনি আমাদের হাসিমুখে বলেন। নিজের কাজ করতে তিনি গর্ব বোধ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোমরানি দাস বলেন, আমরা সর্বক্ষণিক কৃষক তৈয়ব আলীর যোগাযোগ রক্ষা করি এবং তাদের আমাদের স্বার্থ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সহ কৃষি সংক্রান্ত সরকারি অনুদান দিয়ে থাকি। আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পবিত্র কুমার রায় সার্বক্ষণিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।এসএফ 
    জয়পুরহাটে থোকায় থোকায় ঝুলছে আরবের খেজুর
    গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচা-পাকা খেজুর। মরিয়ম, আজোয়া, মেডজুল, আম্বার, সুক্কারিসহ প্রায় ১০ জাতের খেজুর রয়েছে বাগানে। এমনই নয়নাভিরাম দৃশ্য সৌদি আরবে নয়, দেখা যাবে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার মুনজিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাগানে।সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সালে ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে খেজুর বাগান করার আগ্রহ জন্মে। খোঁজ নিয়ে ঢাকা, নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা সংগ্রহ করে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট ৪৫০টি চারা রোপণ করি। প্রতিটি চারা ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা করে কিনি। প্রতিটি টিস্যু কালচার চারা সাড়ে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা দামে কিনি।’তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার বাগানে সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইউটিউব দেখেই সব গাছের পরিচর্যা করেছি। এ পর্যন্ত দুই-আড়াই লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছি। এরই মধ্যে ১০৩টি গাছে ফল ধরেছে। যে ফল থেকে ৫-৭ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছি।’আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালি গ্রামের কৃষক আতোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে জানতে পারলাম, আমাদের আক্কেলপুরেই সৌদি আরবের খেজুর চাষ হচ্ছে। তাই বাগানটি দেখতে এলাম। বাগান দেখে খুব ভালো লাগলো। গাছে গাছে খেজুর ধরে আছে। আমিও কিছু চারা এখান থেকে নিয়ে যাবো।’মনজিয়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম আমার চাচাতো ভাই। তিনি প্রথমে যখন বাগানে এসব গাছ লাগান; তখন বিশ্বাস করিনি যে খেজুর ধরবে। অথচ এখন বাগানে অনেক সুন্দর খেজুর ধরেছে। বাগান দেখে অনেক ভালো লাগছে। আমরাও বাগান করার স্বপ্ন দেখছি।’আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘খেজুর মূলত সৌদি আরবে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। সাইফুল ইসলামও তাদের মধ্যে একজন। আমরা তার বাগানের খোঁজ রাখছি। সরকারিভাবে কোনো ধরনের সহযোগিতা এলে তাকে দেওয়া হবে।’এসএফ 
    সৌদি খেজুর চাষে মোতালেব এখন কোটিপতি
     বাংলাদেশের মাটি যে সোনাফলা সেটা ভালোই উপলব্ধি করেছিলেন আব্দুল মোতালেব। তাই সাহস করেছিলেন মরুর দেশের খেজুরের বীজ এনে দেশে ফলানোর। ময়মনসিংহের ভালুকার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের পাড়াগাঁও গ্রামের এই মানুষটি শুধু সুস্বাদু ও মিষ্টি খেজুরই ফলাননি, মাত্র ৭টি গাছ থেকে হাজার হাজার চারা তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিদেশের মোহ ছেড়ে দেশে এসে হয়েছেন কোটি টাকার মালিক।অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন আব্দুল মোতালেব। ১০ হাজার টাকা বেতনে খেজুর বাগানে চাকরি নিয়েছিলেন। চাষাবাদ রপ্ত করে ৩ বছরের মাথায় দেশে ফেরেন। সঙ্গে আনেন খেজুরের বীজ। বাগান করে কয়েক বছরের মধ্যে বদলে ফেলেন ভাগ্য। এখন বছরে কোটি টাকার চারা ও খেজুর বিক্রি করেন তিনি।আব্দুল মোতালেব (৫৪) ময়মনসিংহের ভালুকার পাড়াগাঁও গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি সফল উদ্যোক্তা। সবাই তাকে ‘খেজুর মোতালেব’ বলে ডাকেন।জানতে চাইলে মোতালেব বলেন, দেশে ফিরে আমার বাড়ির পাশে একটি জমিতে খেজুরের চারা রোপন করি। কিন্তু প্রায় সব গাছই পুরুষ হয়ে যাওয়ায় খেজুর হয়নি। আবার গাছ লাগালে আবারও একই অবস্থা। তৃতীয় দফায় আমি সফল হই। এবার ২টি গাছে খেজুর হয়। সেই ২ গাছ থেকে আজ প্রায় ১২শ চারা উৎপাদন করেছি। বর্তমানে প্রায় ১০০টি গাছে খেজুর ধরেছে। চলতি বছর ৫ লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করেছি।কোনো কিছুতে সহজে হাল না ছাড়া মোতালেব বলেন, লোকে বিদেশে গেলে স্যুটকেস ভর্তি জিনিস নিয়ে আসে। আর আমি আনছিলাম খেজুর। দেশের মানুষ হাসাহাসি করতো, পাগল বলতো। আমার দেয়া বীজ থেকে ২৭৫টি চারা বের হয়। চারাগুলো সাইজ করে লাগাইনি। ৩ বছর তো বেশি সময় না, মুকুল এলে চারা লাগাবো। মোতালেব বলেন, শুরুকরি ২০০১ সালে। ১৭ মাস পর একদিন আমার বউ এসে বললো- তোমার গাছে মুকুল আইছে। আমি তো বিশ্বাসই করিনি। পরে বাজি ধরে গিয়ে দেখি সত্যি মুকুল বের হয়েছে, কিন্তু পুরুষ। তখন একটা সাহস এলো পুরুষ মুকুল যখন আসছে তখন মেয়েও হবে। সেটা চৈত্র মাসের ১৭ তারিখ ছিল। বৈশাখে একটা এলো সেটাও পুরুষ। পরের বছর ৫টা, তারপরের বছর ৭টা, তার পরেরবার ৯টা গাছে মুকুল এলো, সবগুলো পুরুষ। তবুও হতাশ হইনি। তবে টেনশন বাড়ছিল। হাল ছাড়ছিলাম না। পরের বছর ১১টা গাছের মধ্যে একটা গাছে মেয়ে মুকুল এলো। তুলে আলাদা করে লাগালাম। এই গাছটাই শাইখ সিরাজের নামে রাখলাম। আজোয়া গাছ। এটাই বাংলাদেশে প্রথম সৌদি খেজুর গাছ। প্রতি বছর উনি আসেন একবার। ওনার কাছে অনেক ঋণ আছে বলেই এটা ওনার নামে রেখেছি।সফল এই উদ্যোক্তা আরো বলেন, এখন আমি কাটিং জানি। নারী গাছগুলো থেকে গজানো চারা নারীই হয়। সেগুলো পুরুষ গাছে কাটিং করে বসানো যায়। এটা সারা বাংলাদেশে আমার মতো কেউ পারে না। আমার সব গাছ কাটিং করে মেয়ে বানাইছি।সরকারি সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মোতালেব বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে গাছ বিক্রি না করে হাজার হাজার চারা বানাতাম। আরও কম দামে চারা বিক্রি করতাম। আগে দেড় লাখ টাকা বেচতাম। কয়েকশ লোক আমার কাছ থেকে চারা নিয়ে বাগান করছে। আমাদের দেশে খেজুর শুকানো কঠিন। মেঘ-বৃষ্টি বেশি। তাই কাঁচাই বিক্রি করি। খেজুর পেড়ে পাকা অবস্থায় ৬-৭ দিন লাগে শুকাতে।আরইউ
    ধান চেনে না মিলাররা, জাত-নমুনা চেয়ে চিঠি
    ধানের জাত ঠিকমতো চিনে না কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালকল মালিকরা। এ জন্য জাত ও নমুনা চেয়ে কুষ্টিয়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন কুষ্টিয়ার চালকল মালিকদের সংগঠন। তবে চালকল মালিকরা এমন চিঠি দেওয়ার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।রোববার (৩০ জুন) কুষ্টিয়া অটো রাইস মিল অনার্স অ্যাসোসিয়েশন কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার দপ্তরে এ চিঠি দেন। চিঠিতে সভাপতি ওমর ফারুক উল্লেখ করেন, চালের বস্তার গায়ে ধানের জাত লিখতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মিল মালিকদের। সরকারের তালিকাভুক্ত ধানের জাতের নাম ও নমুনা সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তিনি।ওমর ফারুক জানান, সরকার বলছে মিনিকেট ধান নেই। কিন্তু আমরা এই নামে ধান কিনছি কৃষকদের কাছ থেকে। তাহলে ওই ধানের ক্ষেত্রে বস্তায় কি লিখবো তা জানার জন্যই এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, অন্য জাতের ধান থেকে মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করে লাভবান হন মিল মালিকরা। তাই তারা এসব চিঠি দিচ্ছেন। চিঠিটি ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা আসলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা জানান, সরকার অনুমোদিত জাতের ধান ছাড়া অন্য নামে (যেমন মিনিকেট নামে) চাল বাজারজাত করার সুযোগ নেই। করতে দেওয়া হবে না। কুষ্টিয়ার খাজানগরে ৫০টির মতো অটোমেটিক রাইস মিল থেকে সারাদেশের সরু চালের সিংহভাগ সরবরাহ করা হয়। ধানের জাত যেটাই হোক এখান থেকে মিনিকেট নামের চালই বেশি সরবরাহ হয়ে থাকে। মিনিকেট চালের চাহিদা বেশি থাকায় বাজারে এর দামও বেড়ে যায়। এ কারণেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিপত্র জারি করেন। যেথানে বলা হয়- চালের বস্তার গায়ে ধানের জাতের নাম ও চালের দাম লিখে দিতে হবে। যদিও আড়াই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ মিল মালিক বস্তার গায়ে এসব তথ্য লিখছেন না। অপরদিকে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুষ্টিয়ার বেশিরভাগ কৃষকই তাদের ধানের জাতের নাম উল্লেখ করেই বিক্রি করেন। এছাড়া কৃষি বিভাগও ধানের জাত উল্লেখ করেই বীজ বিতরণ ও প্রণোদনা দিয়ে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী উৎপাদিত ধানের জাত উল্লেখ থাকে। তবে মিলাররা এসব ধানকে সরু করে মিনিকেট বলে বিক্রি করে। জাত উল্লেখ করে বিক্রি করলে মিলারদের মিনিকেটের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে এমন উদ্ভূত তথ্য ছড়ায়।এছাড়া অদৃশ্য কারণেই কুষ্টিয়ার চালকল মালিকরা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই দিনের পর দিন মিনিকেটের নামে চাল বাজারজাত করে আসছে। এর মধ্যে জাত না চেনার এ চিঠি তথ্য গোপন করে মিনিকেট বাজারজাত ও সরকারী নির্দেশনা অমান্যের জন্য কালক্ষেপণ মাত্র এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টটা।এসএফ 
    ধানে লোকসান, আখ চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন সালাম
    অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধান ও সবজি চাষ করে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর দাঁড়ারপাড় গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম । এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প হিসাবে আখ চাষ করতে শুরু করেছেন তিনি। ‘ফিলিপাইন ব্ল্যাক’ জাতের আখআখ চাষের মাধ্যমে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক আব্দুস সালাম।  আখ চাষি আব্দুস সালাম জানান, ধান-সবজি চাষ করে প্রতি বছর লোকসান গুণতে হয়। বিকল্প হিসাবে  ২০ শতক জমিতে আখচাষ করতে শুরু করেছি। শুরুতেই অন্যান্য ফসলের চেয়ে আখের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। গত দু'সপ্তাহ আগে বৃষ্টিতে আখক্ষেতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে অবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ায় সে দুশ্চিন্তা অনেকটা দূর হয়েছে। আখ চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় এটি চাষের মাধ্যমে অতীতের লোকসান কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন বুনছেন আব্দুস সালাম। আগামীতে ৪-৫ বিঘা জমিতে আখ চাষ করবেন বলে জানান।দাঁড়ারপাড়  গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে ৬০-৭০ বছর আগে আমাদের বাপ-দাদা'রা ও আশপাশের অনেক কৃষক শত শত বিঘা জমিতে আখের চাষ করতেন। মাঠের পর মাঠ শুধু আখ আর আখ। ধানের চাষ তুলানমূলক খুবই কম ছিল।পাশ্ববর্তী দূর্গাপুর গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আবু তালেব বলেন, এ এলাকায় বহুদিন ধরে দেখা নেই আখ চাষের। লোক মুখে শুনেছি দাঁড়ারপাড় মাঠে কৃষক সালাম আখ চাষ করেছেন। দেখতে গিয়েছিলাম কেমন হয়েছে আখের ক্ষেত। ঠিক আগের মতই ভালো ফলন হয়েছে।বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত  জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস  জানান, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন  এলাকায়  আখের চাষ করা হয়েছে। আখ একটি লাভজনক  ফসল। ফলন ভালো হলে প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১০- ১২ লাখ টাকার আখ বিক্রি করা সম্ভব। এটি চাষের মাধ্যমে চাষিরা লাভবান হতে পারেন।এসএফ 
    ছাগল-ভেড়া পালনে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে ব্যাংক
      দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন কৃষক। একই সঙ্গে এ তহবিল থেকে এখন ছাগল, ভেড়া, গাড়ল পালন করতেও ঋণ নেওয়া যাবে।   বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে এ সম্পর্কিত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।সার্কুলারে বলা হয়েছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের চাহিদা থাকায় এর আওতায় ব্যাংকের গ্রাহকপর্যায়ে ঋণ বিতরণের সময়সীমা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। আগের সার্কুলার অনুযায়ী এর মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।পাশাপাশি এ পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে ছাগল, গাড়ল ও ভেড়া পালন এবং কন্দাল জাতীয় ফসল চাষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে।তহবিল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রান্তিক ও বর্গাচাষিদের ফসল উৎপাদন এবং পশুপালনে ক্ষেত্রে চার শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হয়।  ফসল উৎপাদনে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত। আর প্রাণিসম্পদ খাতে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঋণ পরিশোধে গ্রেস প্রিরিয়ডসহ ১৮ মাস সময় পাওয়া যাবে।  একই সঙ্গে অধিক সংখ্যক প্রকৃত চাষি ও খামারি যেন উপকৃত হয় সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্কিমটির আওতাভুক্ত খাতগুলোর পাশাপাশি কন্দাল ফসল চাষ এবং ছাগল, ভেড়া, গাড়ল পালন খাত অন্তর্ভুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তহবিলের অধীনে ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে পারবে। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক, বর্গাচাষি ও ফসল (ধান, শাক-সবজি, ফুল ও ফল) চাষের জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে। তবে গরু-ছাগল পালনসহ প্রাণিসম্পদ খাতে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঋণ পরিশোধে কৃষক বা গ্রাহক তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাস সময় পাবেন।এমএইচ
    সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা
    বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে পরবর্তীতে নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসন। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির জন্য সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে ৩০ মে সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয়েছিল। পরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ৭ জুন থেকে খুলে দেওয়া হয়েছিল।বন্যা পরিস্থিতির কারণে তাহিরপুরের পর্যটন স্পটগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা পারভীন এ ঘোষণা দেন। তাহিরপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটনস্পটগুলো হলো, টাঙ্গুয়ার হাওর, লাকমাছড়া, নীলাদ্রি লেক (শহীদ সিরাজলেক), বড়গুপটিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগান। বন্যার পানিতে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের তিনটি জায়গা তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়কের ভেঙে যাওয়া স্থানগুলো হলো- তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর সড়ক, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা ১০০ মিটার সড়ক ও সুনামগঞ্জ সড়কের লালপুর সড়ক। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা পারভীন বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সকল পর্যটনস্পট পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের তিন স্থানে ভাঙন দেখা গেছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টি এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। উপজেলার মধ্যে প্রবাহিত পিয়াইন, সারি ও গোয়াইন নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এরই মধ্যে উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্লাবিত হয়েছে। এমন অবস্থায় জনস্বার্থে, জানমাল রক্ষার্থে ও জননিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্থুমাইসহ সব পর্যটনকেন্দ্র পরবর্তীতে নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে বন্যার পানি বাড়ছে সিলেটে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সেখানকার অধিকাংশ এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রধান সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। এ চার উপজেলার পানিবন্দি মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। শুধু উপজেলা নয়, নগরীর অবস্থাও নাজুক। অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি। সিলেট ছাড়াও সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, সদরসহ অন্যান্য উপজেলার অবস্থা নাজেহাল। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীসহ সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়।এদিকে সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, পিয়াইন, লোভা, ডাউকিসহ সবকটি নদীর পানি বেড়েছে। ১০টি পয়েন্টের মধ্যে সুরমা ও কুশিয়ারার পয়েন্টসহ ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর তীর উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। ফলে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুরমা নদীর কানাই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩৬ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ার অমলশীদ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮০সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।পাউবো সিলেটে নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।এফএস
    আবার এসেছে আষাঢ়, ঘনঘোর আকাশ ছেয়ে
     আজ পহেলা আষাঢ়, বর্ষাকালের প্রথম দিন। বাংলার প্রকৃতি ও জনজীবনে এই ঋতুর প্রভাবের শেষ নেই। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও বর্ষার রয়েছে উজ্জ্বল উপস্থিতি। নজিরবিহীন দীর্ঘ দাবদাহে প্রাণ অতিষ্ঠ করার পর অবশেষে এলো কালিদাস, রবীন্দ্রনাথ, নজরুলসহ কবিকুলের বন্দিত ঋতু বর্ষাকাল। আজই আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবস! ‘বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে’ দুয়ারে উপস্থিত সজল শ্যামল বর্ষা।গত কয়েক দিনের আবহাওয়াই বলছিল, বর্ষা এবার আর পঞ্জিকার জন্য অপেক্ষা করেনি। বিশেষ করে সিলেটসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ তা ভালো করেই টের পাচ্ছে।কাব্যের ‘ঘনঘোর বরিষণের’ তোড়ে ওই অঞ্চলের মানুষের কিন্তু ত্রাহি অবস্থা।জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় প্রকৃতিমাতার মতিগতি বেশ উল্টেপাল্টে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ষড়ঋতুর বাংলা তিন ঋতুর দেশে পরিণত হলো বলে; সুদীর্ঘ গ্রীষ্ম, তুলনায় কিঞ্চিৎ সংক্ষিপ্ত বর্ষা আর সংক্ষিপ্ততর শীত! তা এখনো নিছক অনাগত ভবিষ্যৎ বলে পহেলা আষাঢ়ে চিরন্তন বর্ষাবন্দনায় মেতে উঠতে কার্পণ্য করা ঠিক হবে না।বাংলায় আষাঢ় মানেই কদম ফুল।দিনমান নানা ছন্দের বৃষ্টি আর মেঘের ডমরু। প্রেমিকের বিরহকাতরতা। ময়ূরের পেখম মেলা। খিচুড়ি-ইলিশ।গ্রামে নৌকাবাইচ, নতুন পানির তরতাজা সুস্বাদু মাছ।মাঠে-ঘাটে,  বনে-বাদাড়ে ঘুরে প্রকৃতির খোঁজখবর রাখেন এমন কেউ কেউ অবশ্য বললেন, আগেভাগে এক দফা ব্যাপক ফুটে অনেক কদমগাছ এখন ফুলশূন্য। এবারের দীর্ঘ তাপপ্রবাহই কি এর কারণ? এ পর্যন্ত কিন্তু তেমন বেশি চোখে পড়েনি বৃষ্টিস্নাত কদম বা দোলনচাঁপার গুচ্ছ নিয়ে পথশিশুদের ট্রাফিক সিগন্যালে ছোটাছুটি। তবে গ্রামবাংলার পথে-প্রান্তরে, এখনো টিকে থাকা জংলা পরিবেশে বর্ষার ফুল-ফলের অনেকগুলোই যে পসরা সাজিয়ে বসেছে তাতে সন্দেহ নেই। নদী-খাল-বিলের নতুন পানিতে ফুটতে শুরু করেছে জাতীয় ফুল শাপলার দল।বাংলা সাহিত্যের দুই স্তম্ভ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর কাজী নজরুল ইসলামের রচনায়, বিশেষ করে গানে বর্ষা নিয়ে মুগ্ধতার শেষ নেই। রবীন্দ্রনাথ তো বর্ষার প্রতি পক্ষপাত লিখিতভাবেই ঘোষণা করেছেন, ‘ঋতুর মধ্যে বর্ষাই কেবল একা একমাত্র। তার জুড়ি নাই।’ এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, রবীন্দ্রনাথের বর্ষা নিয়ে লেখা গানের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ‘ঋতুরাজ’ ‘ঋতুরাজ’ বলে যাকে নিয়ে আমাদের মাতামাতির শেষ নেই, সেই বসন্ত পরিসংখ্যানে অনেকটাই পিছিয়ে। অগোছালো নজরুলের ক্ষেত্রে কড়ায়-গণ্ডায় হিসাব হাতের কাছে মজুদ না থাকলেও বর্ষার মাহাত্ম্যকীর্তনে তিনিও কম যাননি। কেউ কেউ বলছেন, বর্ষা নিয়ে নজরুলেরও দেড় শর বেশি গান রয়েছে।বছরভর বাংলার প্রকৃতি হাজির হয় ভিন্ন ভিন্ন অপরূপ সাজে। তার মধ্যে বর্ষার সজল, শ্যামল রূপ অনন্যতায় ভরপুর। ধানের ক্ষেতে রৌদ্র-হাওয়ার লুকোচুরির মতো অপার্থিব দৃশ্য আর কখন মেলে! আষাঢ় আর শ্রাবণ দুই মাসজুড়ে ব্যাপ্তি বর্ষার। মাস দুয়েক নানা মাত্রায় বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর। টিপটিপ, ঝিরিঝিরি, ইলশেগুঁড়ি, মুষলধার—বর্ষার বারিধারার কতই না নাম! কবিরা তার মধ্যে শোনেন নূপুর, মৃদঙ্গ আর মাদলের বোল। আকাশের চেহারারও সে কী বৈচিত্র্য! সারা দিন ঘোলাটে থেকে শুরু করে ছাইরঙা হয়ে মোষের মতো কালো। বর্ষার প্রকৃতিতে ডাকাতের মতোই দৌরাত্ম্য চলে মেঘেদের। কখনো কখনো বর্ষণ শেষে সেই মেঘের ফাঁকে হঠাৎ উঁকি দেয় আকাশজোড়া স্বর্গীয় রঙধনু।একালে অবশ্য আমাদের কেবল বর্ষা নিয়ে কাব্যকথায় বুঁদ হয়ে থাকলে চলে না। বিশেষ করে নগরে বর্ষা মানে মাথায় রাখতে হয় যানজট আর জলজটের কথা। নিম্ন আর মধ্যবিত্তের ঘরে বাজারের ফর্দ আর ছেঁড়া ছাতা নিয়ে কসরত। প্রতিবেশীর ইলিশ ভাজার গন্ধ নাসারন্ধ্রকে বিচলিত করে তুললে তাদের মনকে সান্ত্বনা দিতে হয়, ‘দেখিস একদিন আমরাও!’ তারই বিপরীতে আবার আছে বদলে যাওয়া সময়ের বর্ষাকেন্দ্রিক রিসোর্ট সংস্কৃতি, ‘পাঁচতারা মানের’ হাওর বিহার। উঁচু-নিচু সব শ্রেণিকেই তটস্থ থাকতে হয় এ ভূখণ্ডে বছর কুড়ি ধরে নতুন করে আবির্ভূত ডেঙ্গু নিয়ে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা স্বভাব-চরিত্র পাল্টে ফেলায় তার সক্রিয়তা অবশ্য বর্ষার গণ্ডি ছাপিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই দেখা যাচ্ছে ইদানীং। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণেই নাকি গ্রীষ্ম-বর্ষা জুড়ে বেড়ে চলেছে বজ্রপাত আর তাতে হতাহতের সংখ্যাও।বর্ষায় বৃষ্টি পড়ে মনের মাটিতেও। গৃহবন্দি সময়ে বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ বয়ে নিয়ে আসে কত হারানো স্মৃতি। চিলেকোঠা ঘরে বসে গীতিকবির মনে পড়ে যায় তাঁর প্রিয় মানুষটির ‘মেঘের কানে’ কথা বলার কথা। জানতে ইচ্ছে করে ‘এ ভীষণ প্লাবনে’ তাঁর কথা সে মানুষটিরও মনে পড়ছে কি না। নজরুল তো মিনতি করেই বলেছেন, ‘যাও মেঘদূত দিও প্রিয়ার হাতে/আমার বিরহলিপি লেখা কেয়া-পাতে’।বর্ষা শুধু মানুষ না, প্রভাব ফেলে ‘মানবেতর’ প্রাণীর ওপরও। মেঘের গর্জন ছাড়া ময়ূর পেখম মেলে ধরতে চায় না। অনেক প্রাণীর মিলনঋতু বর্ষা। বর্ষার ঘনঘটার জন্য তাদের নিশ্চয়ই আর তর সইছে না।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, বর্ষা ঋতু ‘ছুটির ঋতু। অবিরল বর্ষণে আউশের ক্ষেত জলে ভর ভর অবস্থা হলে তিনি সবাইকে ঘরের বাইরে যেতে মানা করেছেন। আবার বাদল টুটে যাওয়ার পর মেঘের কোলে রোদ হাসলে উৎসাহ দিয়েছেন ছুটির আনন্দে মাততে। কবির কল্পনার রাজ্যের বাইরের জগত্টা সাধারণত অত স্বপ্নের মতো নির্ভার আর রঙিন হয় না। তবে বর্ষপঞ্জির হিসাবে এবারের বর্ষারম্ভ কিন্তু সত্যিই হয়েছে প্রায় পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির সঙ্গে মিলিয়েই। যাতায়াতের ভোগান্তি বাদ দিলে ছুটির কয়েকটি দিন বর্ষাবন্দি হয়ে থাকাটা আসলেই হয়তো খুব খারাপ নয়।এমএইচ
    রাজশাহী জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক হলেন তানোরের শরিকুল ইসলাম
    তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের অধীন চলতি অর্থ বছরে বাস্তবায়িত কার্যক্রমের ভিত্তিতে রাজশাহী জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক নির্বাচিত হয়েছে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা উত্তপাড়া এলাকার কৃষক মো: শরিকুল ইসলাম। এছাড়াও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন উপজেলার কামারগাঁ এলাকার সঞ্জিব কুমার ভট্টাচার্য্য। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক এএইচএম আনিছুজামান ও  তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন দূর্গাপুর উপজেলার কৃষক মো: আব্দুল মতিন।সম্প্রতি রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো: শামীম আহম্মেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: উম্মে ছালমা, জেলার পবা উপজেলায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসনিম।তেলজাতীয় ফসল যেমন- সরিষা, তিল, সূর্যমুখী ইত্যাদি আবাদ ও মানসম্মত বীজ সংরক্ষণের ভিত্তিতে কৃষকদের এ পুরুস্কার দেয়া হয়।এ নিয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোস্তাফিজুর রহমান ও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সাইফুল্লাহ আহম্মেদ তানোর উপলোর ১ম ও ৩য় স্থান অধিকার করায় দুই কৃষি উদ্যোক্তাকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।এসএফ 
    পরিবেশ দিবসে ক্যান্সার সোসাইটির উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপন
    আজ ৫ই জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ১৯৭৪ সাল থেকে বিশ্বব্যপী এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা।“ দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।  কয়েক বছরে বৈশ্বিক উষ্ণতা, ঘূর্ণিঝড়, জলবায়ু পরিবর্তন বলছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা। এসব দিক বিবেচনায় বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বুধবার দেশব্যাপী র‌্যালি ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করেছে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ।পরিবেশ দিবসে সকাল সাড়ে সাতটায় র‌্যালীর আয়োজন করে সংগঠনটি। হাতে গাছ নিয়ে র‌্যালিটি রাজধানীর ফরিরাপুল মোড় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অনেক পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহন করেন। র‌্যালি শেষে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি শুরু করে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ। এসময় ফকিরাপুল, আরামবাগ, শাজাহানপুর ও মতিঝিল এলাকার রোড ডিভাইডারে গাছ রোপন করেন তারা। আম, বকুল, নিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ২০০ চারা রোপন করা হয়। এছাড়াও সারাদেশে অন্তত এক হাজার গাছ রোপন করেন সংগঠটির সদস্যরা। বৃক্ষরোপন ও র‌্যালি আয়োজনের বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি ডা. সৈয়দ হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা একটি সুন্দর দেশ ও পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি। যেখানে মানুষ শান্তিতে নিঃশ্বাস নিবে। সেজন্য দেশের প্রতিটি পরিবারের অন্তত একটি করে বৃক্ষ রোপন করা উচিৎ।পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন দেশের মানুষের নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। বিভিন্ন দেশ থেকে ই-বজ্য দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে যা ক্যান্সার সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখছে। দেশের মানুষকে সুন্দর প্রকৃতিতে নিঃশ্বাস নিতে হলে সরকারকে এসব দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে। এমএইচ
    গাছ লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক পেলেন রাজবাড়ীর শেখ রাসেল
    ব্যক্তিগত পর্যায়ে ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২৩’ এ প্রথম হয়েছেন শেখ রাকিবুল হাসান রাসেল। বুধবার (৫ জুন) সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১টি সনদ, ক্রেস্ট ও ১ লাখ টাকার চেক রাসেলের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বনজ, ফলজ এবং ঔষুধি গাছ লাগিয়ে পরিবেশে অবদান রাখায় শেখ রাসেলের হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। এদিন আরও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রথমস্থান অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।ব্যক্তি পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ ক্যাটাগরিতে প্রথম হওয়া শেখ রাসেলের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার কালুখালীর কালিকাপুর গ্রামে।তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাছ সংগ্রহের নেশা তার। পরে বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশি ফলের বাগান গড়ে তোলেন। বর্তমানে ৪০ বিঘা জায়গাজুড়ে ফলজ, বনজ, ঔষুধি ও শোভাবর্ধনকারী ২০০ প্রজাতের গাছ রয়েছে। শুধুটা শখের বসে হলেও ২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে বৃক্ষরোপণ করেন। এখন তার এই বাগান থেকে বছরে আয় হয় কয়েক লাখ টাকা।শেখ রাসেল রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি সরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। চাকরির পাশাপাশি এই বাগানের দেখভাল তিনি নিজেই করেন। উদ্দ্যোক্তাদের নিয়ে সরকারের এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানান শেখ রাসেলের মা রাশিদা ইয়াসমিন। ছেলের স্বর্ণপদক অর্জনে গর্বিত বাবা আব্দুর রব শেখও।
    সম্প্রতি আলু গবেষণায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
    প্রতিনিয়ত আমাদের আলু খাওয়া হয়, সাধারণত ভাত বা রুটির পর যে সবজিটি সব চেয়ে বেশি পরিচিত তা হচ্ছে আলু। অনেক বাড়িতে তো আলু ছাড়া তরকারির কথা চিন্তাও করা যায় না। কিন্তু জানেন কি চুপচাপ এই সবজিটি আপনার শরীরে কী কী ঘটিয়ে চলছে! সম্প্রতি আলু নিয়ে গবেষণায় এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর প্রতিবেদনে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় আলু ও আলু উৎপাদনের মাটিতে ক্ষতিকর মাত্রায় নিকেল ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা—যা ক্যান্সারসহ সম্ভাব্য অন্যান্য ঝুঁকি নিয়ে জনস্বাস্থ্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা, ঈশ্বরগঞ্জ, ফুলপুর ও গফরগাঁওয়ের মোট ২৪টি এলাকায় কৃষকের খেত থেকে আলু ও আলু উৎপাদনের মাটির নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। এসব নমুনায় ক্যাডমিয়াম, নিকেল, লেড, ক্রোমিয়াম, কপার, জিংক, আয়রন, কোবাল্ট ও ম্যাঙ্গানিজ—এ নয়টি ধাতুর মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে, জমিতে শিল্পবর্জ্য, সেচের পানি, সার ও কীটনাশক ইত্যাদির মাধ্যমে আলুর মধ্যে এসব ক্ষতিকর ভারী ধাতু মিশতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি ডাচ একাডেমিক প্রকাশক 'এলসেভিয়ার'-এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এসব ভারী ধাতু খাবারের সঙ্গে মিশে মানুষের শরীরের হজমশক্তি বিঘ্নিত করে এবং রক্তে মিশে কিডনি ও লিভার নষ্ট করে। গবেষণায় প্রতি গ্রাম আলুতে সর্বোচ্চ ২.৯৩৮ মাইক্রোগ্রাম নিকেল ও ০.০১৩৯ মাইক্রোগ্রাম ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও এ দুটি ধাতু সামান্য পরিমাণ গ্রহণও মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয় জরিপ ২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন একজন মানুষ গড়ে ৬৯.৭ গ্রাম আলু খেয়ে থাকেন। তাহলে এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিদিন মানুষকে ০.০৯১৩ মিলিগ্রাম নিকেল ও ০.০০০৫ মিলিগ্রাম ক্যাডমিয়াম শুধু আলু থেকে গ্রহণ করতে হচ্ছে। যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই গবেষণা দলের মুখপাত্র, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, সাধারণত জমিতে শিল্পবর্জ্যের মাধ্যমে ফসলে ভারী ধাতু মিশতে পারে। এ কারণে যে স্থানে শিল্পকারখানা নেই, গবেষণার জন্য তারা ওইসব জায়গাকে বাছাই করেছেন। অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন আরও বলেন, 'জমি ও আলুতে যে পরিমাণ নিকেল ও ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি পেয়েছি, তা অবশ্যই ভয়ের কারণ। সেচে ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ পানি বা নদ-নদীর পানি, সার ও কীটনাশকের মাধ্যমে এসব ভারী ধাতু ফসলে আসতে পারে। পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ও নিরাপদ খাদ্য তুলে দিতে বিষয়টি নিয়ে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে ভাবতে হবে।'এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. লেনিন চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, ভারী ধাতু মানুষের শরীরে ক্যান্সার তৈরিতে কাজ করে। এসব ভারী ধাতু খাবারের সঙ্গে মিশে মানুষের শরীরের হজমশক্তি বিঘ্নিত করে এবং রক্তে মিশে কিডনি ও লিভার নষ্ট করে। এর ফলে নারী-পুরুষের বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, 'প্রতি বছর প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রায় ১০ শতাংশ কিডনি রোগে ভুগছে। বন্ধ্যাত্বের হার দিন দিন বাড়ছে। এসবের পেছনে শস্যে বা মাটিতে যে ভারী ধাতু রয়েছে, সেটির ভূমিকা আছে।'
    সুন্দরবনে দেড় কি.মি. এলাকাজুড়ে আগুন, নেভানোর কাজ বন্ধ রেখেছে বনবিভাগ
    পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া বনে লাগা আগুন নেভানো যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে ফেরা বনরক্ষী ও স্থানীয়রা জানান, আমরবুনিয়ায় লতিফের ছিলা এলাকায় মাটির উপরে থাকা বিভিন্ন গাছের পাতার স্তুপে অন্তত ৫০টি স্থানে আগুন লেগেছে। এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আগুনের বিস্তৃতি লাভ করেছে। তবে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ রেখেছে বনবিভাগ।স্থানীয়রা জানায়, খবর পেয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের কর্মকর্তা, বনরক্ষীসহ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আমরবুনিয়া এলাকায় পৌঁছায়। তবে সন্ধ্যা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ফায়ারফাইটিংয়ের মেশিন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। তারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। স্থানীয় বেল্লাল ফকির নামের এক ব্যক্তি বলেন, লোকালয় থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে আগুন ধরেছে। পাতার মধ্য থেকে আগুন উপরে উঠছে। বড় বড় গাছ পুড়ছে।স্থানীয় সুমন হাওলাদার জানান, বলই গাছের শুকনা ডাল ও মাটিতে পড়ে থাকা পাতা আগুনে পুড়ছে। দিনের আলোয় এটি ভালো বুঝা না গেলেও রাত গভীর হলে বিভিন্ন জায়গায় আগুন দৃশ্যমান হবে বলে জানান তিনি।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন মোংলার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়মুজ্জামান বলেন, বন বিভাগের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোরেলগঞ্জ ও মোংলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট আমরবুনিয়া এলাকায় পৌঁছেছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেখানে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে পানির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। যে কারণে আমরা এখন পর্যন্ত আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করতে পারিনি। সন্ধ্যা হওয়ায় আমরা ফিরে এসেছি। রোববার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বনের মধ্যে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করব।আগুনের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বনের ভেতর প্রচুর পরিমাণ গাছের শুকনো পাতা রয়েছে যার কারণে আগুনটা বাতাসে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে আগুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে যাতে না পড়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে।আগুন নেভাতে যাওয়া সিপিজি সদস্য মণিময় মণ্ডল বলেন, বনভূমির বিভিন্ন স্থানে এখনও আগুন জ্বলছে। আগুনের প্রচণ্ড তাপে ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। কাছাকাছি কয়েকটি জায়গার আগুন আমরা নেভাতে পারলেও এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সন্ধ্যার ভিতর বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে আমরা শুকনো গাছ অপসারণ করেছি। বিভিন্ন স্থানে ছোট ড্রেন কেটে রেখেছি। গহীন বনে অনেক হিংস্র প্রাণী আছে এবং একই সাথে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শোনার পর বন বিভাগ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা সেখানে ছুটে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে। কাল সকাল থেকে আবারও আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হবে।বনের মধ্যে কিভাবে আগুন লেগেছে বা কি পরিমাণ জায়গায় আগুন লেগেছে এমন প্রশ্নে ডিএফও বলেন, আগুন লাগার কারণ এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। কি পরিমান জায়গাজুড়ে আসলে আগুনের ব্যাপ্তি তাও জানা যায়নি। আগুনের পরিমাণ, আগুনে ক্ষয়ক্ষতি ও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হবে এবং তাদের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।এফএস
    এক টাকা খরচ না করেও পেঁয়াজ চাষে ওসমানের লাভ ৪০ হাজার!
    এক টাকাও খরচ না করে বিনা পরিশ্রমে যশোরের ঝিকরগাছায় অনেকেই পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এসব চাষিরা পটল ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। ফলে আগামীতে বাড়বে চাষির সংখ্যা। উপজেলার বোধখানা গ্রামের বেলেমাঠপাড়ার ওসমান গণী এ পেঁয়াজ চাষ করেন। ২৪ শতক জমিতে তিনি পটল ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ চাষ করে অন্তত ৪০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন। ওসমান গণী বলেন, গত নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে কৃষি অফিসের দেওয়া বীজ পেঁয়াজের চারার জন্য বীজতলায় ফেলি। এরপর চারার বয়স ২৫-২৬ দিন হলে তা রোপণ করি। তার আগেই ক্ষেতে পটল লাগানো ছিল। তার সাথী ফসল হিসেবে এ পেঁয়াজ লাগাই। এ চাষে সরকারের দেওয়া সার দিয়েছি। তাছাড়া, আর কোনো খরচ হয়নি। তাই পেঁয়াজ বিক্রির টাকা পুরোটাই লাভ। আবার পটল গাছও বড় হয়ে উঠেছে। পেঁয়াজ আঁকারে খুব বড় হয়েছে। ৮-৯টি পেঁয়াজে এক কেজি হচ্ছে। ২০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছি। প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম পাইকাররা দুই হাজার টাকা করে বলে গেছে।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় খরিপ-২ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে উপজেলার ৬০০ কৃষককে বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়। গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে গ্রীষ্মকালীন এক কেজি পেঁয়াজ বীজের সাথে ২০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার, জমি প্রস্তুুত, সেচ, শ্রমিক ও বাঁশ ক্রয় বাবদ মোট দুই হাজার ৮০০ করে টাকা দেওয়া হয়।উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, মূলত প্রণোদনার এ পেঁয়াজ গ্রীষ্মকালীন হলেও তা শীত মৌসুমেও ভালো ফলন হয়েছে। ওসমান গণীর মতো এই ব্লকের বারবাকপুর গ্রামের রুবিয়া বেগম ও বোধখানার মিকাইল হোসেনও পটোলের সাথে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করে ৪০-৪৫ হাজার টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। খরচ না থাকায় লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে এ আবাদে।

    Loading…