এইমাত্র
  • নানকের পালিয়ে যাওয়ার খবরে সীমান্তে পাহারা-তল্লাশি
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ভিক্ষুককে কুপিয়ে হত্যা
  • সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে মাছ চাষির মৃত্যু
  • সীতাকুণ্ডে পুকুরঘাট থেকে বাবুর্চির মরদেহ উদ্ধার
  • ঘুরতে গিয়ে ভারতবিরোধী পোস্ট, বাংলাদেশি যুবকের ভিসা বাতিল
  • প্রতিবেশী দেশে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবুসহ ৪ জনকে নিয়ে ঢাকার পথে পুলিশ
  • কিশোরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খায়রুল স্মৃতি সংসদে দুর্ধর্ষ চুরি
  • ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে ৮ অভিবাসীর মৃত্যু
  • পদত্যাগ চাইলে সোহেল তাজকে গান শুনিয়েছিলেন শেখ হাসিনা
  • আজ সোমবার, ১ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

    মুক্তমত

    সুইস ব্যাংক বনাম টাইম ব্যাংক
    সুইস ব্যাংক সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। সুইস ব্যাংকে কারও অ্যাকাউন্ট আছে শুনলেই বিষয়টি অনেক অভিজাত বলে মনে হয়। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, সুইস ব্যাংক বলে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংক নেই। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকিং নীতিমালার অধীনে পরিচালিত তিনশ’র বেশি ব্যাংক মিলেই সুইস ব্যাংক নামে অভিহিত। সুইস শব্দটি এসেছে সুইজারল্যান্ড থেকে। সুইস ব্যাংক হলো সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি ব্যাংকিং সিস্টেম। মূলত গোপনীয়তা রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য সুইস ব্যাংক সারাবিশ্বে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা নগরীতে ইউনাইটেড ন্যাশনস কতৃক আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে (The Global Compact Leaders Summit)  অংশগ্রহণ উপলক্ষে দেশটিকে স্বচক্ষে দেখার সুযোগ হয় আমার। আর তার সুবাদেই এ লেখনী। সুইজারল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত নয়। সুইজারল্যান্ডের মুদ্রার নাম সুইস ফ্রাংক।এটি পৃথিবীর সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রা। সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতি পৃথিবীর অন্যতম স্থিতিশীল অর্থনীতি। দেশটির রাজনৈতিক অবস্থাও খুব ভারসাম্যমূলক ও সুস্থির। সুইস সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিবছর ১ জানুয়ারিতে এর রাষ্ট্রপতি পরিবর্তিত হয়। ছয় বছরের জন্য গঠিত মন্ত্রিপরিষদের একজন মন্ত্রী পালাক্রমে এক বছরের জন্য রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। সুইজারল্যান্ড কখনো কোনো যুদ্ধে জড়ায় না। নিরপেক্ষ থাকার বিষয়েই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আর এ জন্যই রাষ্ট্রটিকে অত্যন্ত নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই ব্যাংক ব্যবস্থাও এখানে খুব নিরাপদ। গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা না থাকায় সারাবিশ্বের ধনীদের অর্থ জমানোর জনপ্রিয় উৎস হলো সুইস ব্যাংক। বিশ্বের নানা দেশের রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে বহু বিত্তশালী ব্যক্তি সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন।এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো, অনেকেই গোপনীয়ভাবে টাকা রাখতে গিয়ে তার পরিবারের কাছেও সুইস ব্যাংক বিষয়ক কোনো তথ্য দেন না। ফলে, এমন ব্যক্তির মৃত্যুর পর কেউ জানতেই পারে না যে, তার সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে। সেদেশের নিয়ম অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি কোনো উত্তরাধিকারী সম্পত্তি দাবি না করেন, তবে সুইস সরকার সে সম্পত্তি তাদের কোষাগারে জমা করেন।ফিলিপিন্সের একসময়ের প্রভাবশালী শাসক মার্কোস তীব্র গণআন্দোলনের মুখে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ক্ষমতা ছাড়ার আগে দেশ থেকে মোটা অঙ্কের ডলার সুইস ব্যাংকে পাচার করেন। তার মৃত্যুর পর এসব ডলার সুইজারল্যান্ডের সরকারি কোষাগারে চলে যায়। একইভাবে লিবিয়ার তৎকালীন শাসক কর্নেল গাদ্দাফি ও মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটে।সরকারিভাবে সুইজারল্যান্ডের অধিবাসীরা সুইস নামে পরিচিত। রাজধানী বার্ন। অন্যতম দুটি শহর হলো জেনেভা ও জুরিখ। আল্পস পর্বতমালা ও প্রশস্ত হ্রদ সুইজারল্যান্ডকে এক অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভূষিত করেছে। বিশ্বের পর্যটকদের জন্য এটি একটি অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ। সুইজারল্যান্ডে সুইস ব্যাংক ছাড়াও আরেক ধরনের ব্যাংক রয়েছে, যার নাম ‘টাইম ব্যাংক’। বিশ্বের আর কোথাও এ ধরনের ব্যাংক আছে বলে আমার জানা নেই। সুইজারল্যান্ডের এ টাইম ব্যাংকিং সিস্টেম আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে। ব্লাড ব্যাংকের নাম তো নিশ্চয়ই শুনেছেন। টাইম ব্যাংক অনেকটাই ব্লাড ব্যাংকের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে। ব্লাড ব্যাংকে যেমন ব্লাড সংরক্ষণ বা জমা রাখা হয়, একইভাবে টাইম ব্যাংকেও টাইম জমা রাখা হয়। টাইম ব্যাংক মূলত Swiss Federal Ministry of Social Security কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি অবসরকালীন ভাতা প্রকল্প (Old Age Support Programme)। এতে কমবয়সীরা কর্মক্ষম অবস্থায় নিজেদের কাজের ফাঁকে ফাঁকে অসুস্থ বয়স্ক মানুষদের যতটা সময় ধরে সেবা প্রদান করেন, সেই সময়টা টাইম ব্যাংকে জমা থাকে। যেমন- বয়স্ক মানুষের জন্য বাজার ঘাট করা, ঘর দোর পরিষ্কার করা, তার জন্য পুষ্টিকর খাবার তৈরি করা, তাকে রোদে নিয়ে যাওয়া, তার সঙ্গে গল্প করা ইত্যাদি ইত্যাদি যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘Old Age Support’। টাকা-পয়সার মতো টাইম জমিয়ে রাখার লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষ সে দেশের টাইম ব্যাংকে সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাকাউন্ট বা টাইম ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন। এই অ্যাকাউন্টের বিপরীতে উক্ত ব্যাংক তাকে ‘টাইম ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড’ ইস্যু করেন, যা দ্বারা তিনি পরবর্তীতে বার্ধক্য সেবা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। সুইজারল্যান্ড ধনী দেশ। অবসরকালীন সময় তাদের পেনশনও বেশ ভালো। শেষ বয়সে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের তেমন একটা অসুবিধা হয় না। কিন্তু তা সত্ত্বেও বার্ধক্যের সময়টা তারা আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টাইম ব্যাংকে টাইম জমান। সেবাপ্রদানকারী ব্যক্তি যখন নিজেও বয়োবৃদ্ধ হবেন, আগের মতো নড়াচড়া করতে পারবেন না, তখন তার ক্রেডিট কার্ডের রেফারেন্স দিয়ে টাইম ব্যাংককে দরখাস্ত করলেই তাকে দেখভাল করার জন্য তারা সেবাকর্মী পাঠাবেন। সুইজারল্যান্ডে টাইম ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহার করে সেখানকার বার্ধক্য সেবা প্রদান প্রকল্প বা Old Age Support Programme এক দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এতে দেশের অবসরকালীন খরচ কমার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সামাজিক সমস্যারও সমাধান হয়েছে। প্রশ্ন হলো, সুইজারল্যান্ড পারে। আমরা কবে পারব? ড. ইউসুফ খান ।। লেখক, গবেষক ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
    ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন যখন বার্লিনে
    জার্মানির রাজধানী বার্লিন ইউরোপের একটি ঐতিহাসিক শহর। বার্লিনকে বলা হয় ‘সিটি অব ক্রিয়েটিভ আইডিয়া’। অর্থাৎ নতুন ধারণা বা নতুন চিন্তার শহর হিসেবে বার্লিনের রয়েছে আলাদা একটি খ্যাতি। আর এ কারণেই ২০১৫ সালে ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের জন্য এ শহরটিকে বেছে নেয়া হয়। আয়োজকরা মনে করেন, এ শহরে অনুষ্ঠিত সম্মেলন থেকে সমগ্র বিশ্বকে দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত করার একটি সুন্দর ধারণা বেরিয়ে আসবে। যে ধারণার হাত ধরে ভবিষ্যতে সামাজিক ব্যবসার আরো প্রসার ঘটবে।দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত এক পৃথিবী তৈরির স্বপ্নকে সামনে রেখে শুরু হয় চার দিনব্যাপী সামাজিক ব্যবসা শীর্ষ সম্মেলন-২০১৫। অংশগ্রহণকারীদের পারস্পরিক পরিচয় পর্বের মধ্য দিয়েই সম্মেলন শুরু হয়। বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশ থেকে সহস্রাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো পূরণে কীভাবে সামাজিক ব্যবসা ভূমিকা রাখতে পারে, তার পথ খুঁজে বের করাই ছিল এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। এ জন্য একাধিক সেমিনারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস জার্মানির প্রধান নির্বাহী সাসকিয়া ব্রুচতেন জানান, আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান ৫০ জন আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞ এসব আলোচনায় অংশ নেবেন। এদের মধ্যে ছিলেন বৈজ্ঞানিক, সামাজিক ব্যবসা উদ্যোক্তা ও করপোরেট ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিরা।বার্লিনে এ রকম একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ আমার জন্য ছিল একটি স্বপ্নাতীত ব্যাপার। সবকিছুই খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়। বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসা যে কতটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে, তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। সামাজিক ব্যবসায় কীভাবে বদলে যাচ্ছে বিশ্ব, তা এই সম্মেলনে এসে বুঝতে পারলাম। পৃথিবীর ৪০টিরও বেশি দেশে ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার মডেল চালু হয়েছে, যা ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ধারণ করে চলেছে। বিভিন্ন দেশে ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে তার নামে ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।বিশ্বে প্রতিদিন নানারকম  ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটে। আবার অনেক কিছুর উদ্ভাবন-উন্মোচনও ঘটে। জন্ম ও মৃত্যু হয় অনেকের। রোজকার সব ঘটনা কি আমরা মনে রাখি? তবে কিছু বিষয় স্থায়ীভাবে দাগ কাটে মানুষের মনে। কিছু ঘটনা ইতিহাসের পাতায় উঠে যায়। তেমনই একটি বিষয় হলো জার্মানির বার্লিন প্রাচীর। বার্লিন যাব আর ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর কোথায় তৈরি হয় এবং কেনই বা ভেঙে ফেলা হলো, তা দেখব না, জানব না তা কি করে হয়? বিকেলে চা বিরতির এক ফাঁকে শহরটি ঘুরে দেখার সুযোগ হারালাম না। কয়েকজন মিলে বের হয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য বার্লিন প্রাচীর দেখা। কিছুক্ষণের মধ্যেই নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে গেলাম।পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানিকে বিভক্ত করার জন্য একটি প্রাচীর নির্মাণ করা হয়, যাকে বলা হয় বার্লিন প্রাচীর। যেটি ইতিহাসে পরিচিত হয়ে আছে পশ্চিম জার্মানি ও পূর্ব জার্মানির সীমানা প্রাচীর হিসেবে। সুদীর্ঘ ২৮টি বছর এই প্রাচীর দুই  জার্মানিকে আলাদা করে রাখে, যা ১৯৯০ সালে আবার সবাই মিলে ভেঙে ফেলে। অর্থাৎ বার্লিন দেয়ালের পতন হয়, যা সমগ্র বিশ্বে তখন তুমুল সাড়া ফেলে। শীতল যুদ্ধ শেষে দুই জার্মানির পুনর্মিলন হয়। জার্মানরা এখন শান্তি চায়। প্রতিবেশীদের সঙ্গে চায় সদ্ভাব। বার্লিন শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ছে স্প্রি নদী। শহরটি বেশ নিচু এবং অনেক ক্যানেল রয়েছে। তাই ব্রিজের সংখ্যাও কম নয়। ফোক্সওয়াগন মোটরগাড়ি কোম্পানির কারখানাকে ঘিরে শহরটি গড়ে উঠেছে। ঘোরাঘুরি শেষ করে প্যানেল ডিসকাশনে ফিরে এলাম।পৃথিবী সৃষ্টির জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ব্যক্তি বিশেষ, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে দারিদ্র্য ছিল, দারিদ্র্য আছে এবং দারিদ্র্য থাকবে। আবার স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে দারিদ্র্যের ধরন একেক জনের জন্য একেক রকম। যুগে যুগে মাুনষ তার আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্যকে জয় করার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। এতে কেউ সফল হতে পেরেছেন আবার কেউ সফল হতে পারেননি।বিশ্বে যেসব হাতেগোনা কিছু অর্থনীতিবিদ, সমাজতত্ত্ববিদ কিংবা শিল্পপতি আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে নানা মত ও তত্ত্বের ভিত্তিতে কাজ করে সফলতা অর্জন করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছেন বাংলাদেশের কৃতী সন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে এ দেশের পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক দৃঢ় স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর পরই নিজ হাতে গড়ে তোলেন গ্রামীণ ব্যাংক।১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজনৈতিকভাবে মুক্তি পেয়ে দেশ স্বাধীন হলেও অর্থনৈতিকভাবে তখনো দেশের মানুষ মুক্ত হতে পারেনি। তাই স্বাধীন বাংলাদেশ বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখার জন্য বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গ তাদের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করা শুরু করেন। তাদের মধ্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্যতম, যার হাতে গড়ে ওঠে গ্রামীণ ব্যাংক।গ্রামের মানুষের কাছে গ্রামীণ ব্যাংক খুব জনপ্রিয় ও আস্থার জায়গা। বর্তমানে এর আড়াই হাজারেরও অধিক শাখা রয়েছে এবং সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ৫ লাখ। মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণের স্থিতি ১৭ হাজার কোটি টাকা। আদায় হার ৯৭ শতাংশ। গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে বিশ্বের ৯৭টি দেশে এর কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তা দেখতে, শিখতে ও জানতে বিশ্বের বহু দেশের গুণীজন, সাংবাদিক ও ছাত্রছাত্রীরা প্রায় ইউনুস সেন্টারে ভিড় করে থাকেন।ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গ্রমীণ ব্যাংক এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং তারই ফলস্বরূপ ২০০৬ সালে নরওয়ে ভিত্তিক নোবেল কমিটি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংককে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে, যা আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও স্বীকৃত। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীব্যাপী তার কৃতকর্মের জন্য সম্মানীত ও সমাদৃত।বর্তমানে তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে নতুন একটি ধারণা ও তত্ত্ব নিয়ে সারা পৃথিবীব্যাপী কাজ করে যাচ্ছেন। আর সেটি হলো সামাজিক ব্যবসা বা সোশ্যাল বিজনেস। সামাজিক ব্যবসার এই ধারণাটি পৃথিবীর প্রতিটি দেশ ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাতদিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।এখন প্রশ্ন হলো, সামাজিক ব্যবসা বা সোশ্যাল বিজনেস কী? বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্রে দুটি তত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত। আর তা হলো পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র। নানা কারণে এখন আর সমাজতন্ত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুুতে নেই। কিন্তু সারা পৃথিবীজুড়ে পুঁজিবাদ বিরাজ করছে দোর্দণ্ড প্রতাপে। সেই পুঁজিবাদও আজ নানা কারণে সংকট ও প্রশ্নের সম্মুখীন।এরকম বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ক্ষুদ্রঋণের উদ্ভাবক, বাংলাদেশের গর্ব, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন তার সাম্প্রতিক ‘সামাজিক ব্যবসা’ তত্ত্ব। এই ব্যবসায় বিনিয়োগকারী একটা সামাজিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বিনিয়োগ করবেন, কিন্তু সেই ব্যবসা থেকে বিনিয়োগকারী কোনো ধরনের মুনাফা গ্রহণ করবেন না। শুধু বিনিয়োগের অর্থ তুলে নিতে পারবেন। মুনাফার অর্থ দিয়ে নতুন কোনো সামাজিক ব্যবসা শুরু করতে পারেন অথবা বর্তমান ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফার অর্থ পুনর্বিনিয়োগ করা যাবে, যার মাধ্যমে তৈরি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় মুনাফা বৃদ্ধির যে প্রবণতা দেখা যায়, তার বাইরে ব্যবসাকে সামাজিক কল্যাণের জন্য নিয়ে আসাই সামাজিক ব্যবসার মূলকথা।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ সামাজিক ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন- ইউরোপের দেশ আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় সামাজিক ব্যবসার আওতায় বৃদ্ধ নিবাস তৈরি করা হয়েছে। ২০১২ সালে এই উদ্যোগ নেয়া হয়। বর্তমানে এই বৃদ্ধ নিবাসে ২৫০ জন বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন, যা ইতোমধ্যে একটি সফল উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতে, বেকারত্ব দূর করতে সামাজিক ব্যবসা একটি কার্যকর ব্যবস্থা। বেকারত্ব এখন পুঁজিবাদের নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মতে, এই সামাজিক ব্যবসা দিয়েই বর্তমান বিশ্বের বেকারত্বের সমাধান করা সম্ভব। তরুণ-তরুণীদের স্বপ্ন ও উদ্যোগ দিয়ে বেকারত্ব দূর করতে হবে। তাইতো তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারুণ্য, প্রযুক্তি ও সুশাসনকে। তার মতে, ভালো চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা তৈরিতে জোর দিতে হবে। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে হবে। কারো অধীনে নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে। এ লক্ষ্য অর্জনে সামনে থাকছে তার থ্রি জিরো তত্ত্ব। এগুলো হলো- দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ। বসবাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে হলে এগুলোকে শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। তৈরি করতে হবে তিন শূন্যের পৃথিবী। অর্থাৎ শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ।ড. ইউনূস মনে করেন, পৃথিবীতে এমন পরিস্থিতি আসবে, যখন বেকারত্ব বলে কিছু থাকবে না। একজন সুস্থ শরীরের লোক বেকার থাকবে এটা হতে পারে না। তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তোমরা ব্যবসার ধারণা নিয়ে আসো। আমরা তোমাদের সহযোগিতা করব। ড. ইউনূসের মতে, কাজের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমা থাকা উচিত নয়। অবসর বলে কোনো শব্দই থাকা উচিত নয়। রিটায়ারমেন্টকেই রিটায়ারমেন্টে পাঠানো হবে। তাই সামাজিক ব্যবসাকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে মানুষকে স্বচ্ছল ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশ্বের সব দেশ এগিয়ে আসবে, এটাই আমাদের সবার প্রত্যাশা।ড. ইউসুফ খান : কলাম লেখক।
    আমরা তো এমন বাংলাদেশেরই স্বপ্ন দেখি: আজহারী
    ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি। এ পর্যন্ত ১২ জেলায় ১৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। পানিবন্দি অন্তত ৯ লাখ পরিবার।ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে ডুবে আছে দেশের অন্তত ১২ জেলার বহু মানুষ। কোথাও কোথাও পানি কমতে শুরু করলেও বেশিরভাগ এলাকায় বাড়ছে। বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।দেশের চলমান এমন বন্যা পরিস্থিতিতে ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচি শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যেখানে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হাজারো মানুষের ঢল নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি)।ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন টিএসসিতে যাচ্ছেন তাদের ত্রাণ দিতে। যা দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতি দেখে প্রশংসাও করছেন অনেকে।শনিবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টার পর নিজের ফেসবুক আইডিতে টিএসসির ত্রাণ কর্মসূচি নিয়ে পোস্টে করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, বিকেলের ঝালমুড়ি আর ফুচকা যাদের মিস হয়না, বাসে হাফ ভাড়ার জন্য যারা তর্ক জুড়ে দেয়— সেই ছাত্র ছাত্রীরা আজ তাদের পুরো মাসের হাত খরচটা অবলীলায় দিয়ে দিচ্ছে টিএসসির ত্রাণ তহবিলে। মাশাআল্লাহ! আমরা তো এমন বাংলাদেশেরই স্বপ্ন দেখি।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে টিএসসির ফটকে স্থাপিত বুথে ত্রাণ সংগ্রহ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহনে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসেন। অসংখ্য মানুষ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেন। তা ছাড়া বিকেলে বিজিবির একটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি করে ত্রাণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
    চিকিৎসকদের লাগামছাড়া ভিজিটও সমন্বয় করা দরকার
    চক্ষু চিকিৎসা করেন অধ্যাপক ডা. রিপন সরকার। রোগী সাপ্তাহে একদিন কুড়িগ্রামে আসেন। বাকি দিন রংপুরে বসেন। কুড়িগ্রামে রোগী দেখেন সেবা ক্লিনিকে। নতুন রোগীর কাছ থেকে ফি (ভিজিট) নেন ৭০০ টাকা। একই রোগী দ্বিতীয়বার দেখাতে গেলে নেন ৫০০ টাকা। আবার চক্ষু রোগী ৪ মাস পরে গেলেই দিতে হবে নতুন রোগী হিসেবে টাকা মানে পুরো ৭০০ টাকাই। তিনি কুড়িগ্রামে সাপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার প্রায় শতাধিক রোগী দেখেন ও অপারেশন করেন। একজন রোগীকে তিনি সর্বোচ্চ ২/৩ মিনিট সময় দিয়ে থাকেন।কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে আসা কৃষক মানিক মিয়া খুঁজছিলেন চক্ষু ডাক্তার। পরিচিত একজনের কাছ থেকে ডা: রিপন সরকারের নাম শুনে তাঁর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য খোঁজখবর নেন। কিন্তু ভিজিট শুনেই খেপে ওঠেন তিনি। কথা বলেন, ’সময়ের কন্ঠস্বরের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'এটা কী করে সম্ভব! ভিজিটই যদি ৭০০ টাকা দিতে হয় তবে এই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাব কিভাবে? আমরা তো গরীব মানুষ।সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ‘সময়ের কন্ঠস্বরের এ প্রতিবেদক তার মাকে চোখ দেখাতে নিয়ে যান ডা: রিপন সরকারের কাছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তার প্রায় শতাধিক রোগীকে বসিয়ে রেখে ৫ জনকে অপারেশন করতে নিয়ে গেছেন। ডাক্তারের জন্য টানা ৩ ঘন্টা অপেক্ষার পর ডাক্তার ওটি থেকে নামেন। পরে এ প্রতিবেদক তার মাকে দেখান। দুচোখ দেখে ডাক্তর বলেন সমস্যা নেই। ডাক্তারে কাছে ভিজিট কত বলতেই তিনি বলেন ৭০০ দেন। বলেই অন্য রোগী দেখা শুরু করেন। এত সল্প সময়ে এত ভিজিট কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি রংপুর থেকে এসে এখানে রোগী দেখি রংপুরে আরো বেশি ভিজিট নেই।অন্যদিকে রাজধানীসহ সারা দেশে ডাক্তারদের ভিজিট বা পরামর্শ ফি ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন।ভুক্তভোগীদের দাবি চিকিৎসকদের লাগামছাড়া ভিজিটও সমন্বয় করা দরকার।এফএস
    বছরের পর বছর কি বিদ্যুতের মিটার ভাড়া দিতে হবে?
    দেশে সাধারণ জনগণের ভোগান্তির আরেক নাম বিদ্যুৎ মিটার। প্রিপেইড মিটারের দাম সংযোগ নেয়ার সময় পরিশোধ করলেও বছরের পর বছর প্রতি মাসে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে কেন? এ প্রশ্ন এখন সাধারণ ভুক্তভোগীদের।পিডিবি, ডিপিডিসি, ডেসকো, আরইবি মিটার স্থাপন করেছে আর তার ভাড়া বছরের পর বছর আদায় করছে গ্রাহকদের কাছ থেকে।বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার ভাড়া ও ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহারের দাবি সাধারণ ভুক্তভোগীদের। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, নিজের টাকায় মিটার কিনে আবার মাসে মাসে তার ভাড়া কেন দিতে হয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে।সাধারণ মানুষের দাবী, গ্রাহক নিজের টাকায় বিদ্যুতের মিটার ক্রয় করার পরও যদি প্রতি মাসে মাসে মিটার ভাড়া দিতে হয়, তাহলে বিদ্যুৎ সংস্থা আমাদের জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি পুতে লাইন টানিয়ে ফসলি জমিগুলো নষ্ট করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করার পরও আমাদের জমির ভাড়া দেবে না কেন?ভুক্তভোগীদের চাওয়া এসব অযৌক্তিক মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ বাতিল করার এখনই সময়।এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভুমিকা রাখবেন বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।এফএস
    প্রোফাইল পিকচার লাল করাদের বেহাত করা যাবেনা
    জুন মাসে খুব ছোট্ট পরিসরে শুরু করা কোটা সংস্কার আন্দোলনের অগ্নিশিখা নিভাতে দেরী করায় তা রুপ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। তারপর ছাত্রের সাথে যোগ হয় জনতা। জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সেই আগুনে ঝাঁপ দেয় দেশের আপামর ছাত্র-জনতা। বছরের পর বছর বুকের ভেতর আটকে রাখা ক্ষোভ নিয়ে যে বিক্ষোভের মিছিলটি গিয়ে ঠেকে গণভবনে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা এটাকে আরো পাকাপোক্ত করে। তারপরই আসে ৫ই আগস্ট।  জীবন উৎসর্গ করা রংপুরের আবু সাঈদ এই বিপ্লবের প্রতীক। তিনিসহ অন্যান্য মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্র শোক পালনের ঘোষণা দিলেও শোকের কালো ব্যাজ প্রত্যাখ্যান করে বুলেটের সামনে আবু সাঈদের বুক পেতে দেওয়া সেই ছবি ফেসবুকে আসে লাল হয়ে। শোভা পায় ফেসবুকের প্রোফাইলে প্রোফাইলে। স্বৈরতন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার লাল করাটা আমার কাছে এই বিপ্লবের প্রথম সম্মিলিত ঘোষণা বলে মনে হয়েছে। ব্যাপারটা সহজ ছিলোনা। যারা ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছিলেন তারা জানে।৮ই আগস্ট ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১০ই আগস্ট রংপুরের পীড়গঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে ছুটে যান তিনি। কিন্তু এই বিপ্লবে কত আবু সাঈদের প্রাণ গিয়েছে, কত আবু সাঈদ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে তা রাষ্ট্রের চোখে দেখতে হবে, পাশে থাকতে হবে। অবশ্য ইতোমধ্যে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে প্রশাসনের সহায়তায় এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে দ্রুত বেগে। ‘কেউ এলোনা’, ‘কেউ খবর নিলোনা’ এমন কথা মুখ দিয়ে বের হওয়ার আগে।একতাকে উজ্জীবিত রাখতে হবে, প্রোফাইল পিকচার লাল করাদের বেহাত করা যাবেনা।লেখকঃ মো. জোবায়ের হোসেন।  সদস্য প্রেসক্লাব মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।
    নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা
    সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে অর্জিত বিজয় রাষ্ট্র মেরামতের একটি দুর্লভ দ্বার উন্মোচিত করেছে। ছাত্র ও সাধারণ জনতার রক্তের দাগ এখনো রাজপথ থেকে শুকায়নি। এমন এক ক্রান্তিলগ্নে গঠিত হলো ১৪ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সংগত কারণেই এ সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার ফর্দ অনেক লম্বা। এটি স্মরণে রেখে তাঁদেরকে তাঁদের ওপর ন্যাস্ত দায়িত্ব সমূহ পালন করতে হবে। এটি খুবই প্রত্যাশিত যে জনপ্রত্যাশার যথাযথ কার্যকর প্রতিফলন ঘটানোর মাধ্যমেই তাঁরা নিজ নিজ যোগ্যতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। আপামর জনসাধারণের আস্থার প্রতীক হয়ে থাকবেন। মনে রাখতে হবে এ ক্রান্তিকালীন পর্যায়টি কেবল নেতৃত্বের পরিবর্তনই নয়, বরং জাতির আকাঙ্ক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করার এবং দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ এবং উদীয়মান সুযোগ উভয়ই মোকাবেলার একটি গভীর সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করে। পরিবর্তন প্রায়শই একটি সম্ভাবনাময় চ্যালেঞ্জ; এতে যেমন থাকে সম্ভাবনার উত্তেজনা তেমনি প্রত্যাশার ওজন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য, এই মুহূর্তটি আলাদা নয়। এটি এমন একটি সময়কাল যা আশা দ্বারা চিহ্নিত করা হয় - অগ্রাধিকারগুলি পুনঃনির্ধারণ করার, সমালোচনামূলক সংস্কার বাস্তবায়নের এবং দেশকে আরও স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করার একটি সুযোগ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমিতে অন্তর্বর্তী সরকার একটি অনন্য অবস্থানের অধিকারী। যদিও এর প্রাথমিক ভূমিকা হল একটি নতুন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রশাসনে রূপান্তরের তত্ত্বাবধান করা, এটি আস্থা বৃদ্ধির দায়িত্বও বহন করে এবং প্রদর্শন করে যে শাসন কার্যকারী এবং সহানুভূতিশীল উভয়ই হতে পারে। এটা প্রমাণ করার সময় যে অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব প্রকৃতপক্ষে দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করতে পারে, রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সামষ্টিক কল্যাণে কাজ করতে পারে।অন্তর্বর্তী সরকারের একটি তাৎক্ষণিক কাজ হলো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা। এই প্রচেষ্টায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াস করা  যা গণতান্ত্রিক শাসনের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য অপরিহার্য হবে।আমরা পূর্বেও বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা দেখেছি। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপটটি নানা কারণে ভিন্নতর। এমন একটি সময়ে এ সরকার দায়িত্ব নিলো যখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই নাজুক অবস্থায়। হাসপাতালে আন্দোলনে আহতরা কাতরাচ্ছে। শহিদ পরিবারগুলো শোকে নুব্জ্য। দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে। সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে প্রায় প্রতিটি খাতে ঘুষ দিতে হয়। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বা মতের মানুষরা শংকিত। এ তালিকা অনেক দীর্ঘ। অতিদ্রুত এসব বিষয় এড্রেস করা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই মূল্যস্ফীতি মোকাবেলা করে, ছোট ব্যবসাকে সমর্থন করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমাজের সকল স্তরকে উপকৃত করে তা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে উদ্দীপিত করে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করে এমন নীতি প্রণয়ন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে।সামাজিক বিভাজন দূর করা এবং সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফোকাস হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বৈষম্য, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি সমাধান করার সুযোগ রয়েছে। সম্পদ এবং সুযোগগুলিতে ন্যায়সঙ্গত অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা কেবল সামাজিক সংহতিই বাড়াবে না বরং আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের গতিপথে অবদান রাখবে।গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী প্রশাসনের উচিত আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে, একটি স্বাধীন বিচার বিভাগকে সমর্থন করা এবং একটি মুক্ত ও প্রাণবন্ত সংবাদমাধ্যমকে উৎসাহিত করার জন্য কাজ করা উচিত। এই স্তম্ভগুলিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে, সরকার আরও শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক গণতন্ত্রের পথ প্রশস্ত করতে সহায়তা করতে পারে।বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানও কৌশলগত কূটনীতি থেকে উপকৃত হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করা, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতা করা। আন্তর্জাতিক সমর্থন দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যে আশা বিনিয়োগ করা হয়েছে তা কেবল তাৎক্ষণিক মেয়াদে কী অর্জন করা যেতে পারে তা নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণের বিষয়ে। এই অন্তর্বর্তী সময়টি স্থায়ী অগ্রগতির ভিত্তি স্থাপনের একটি সুযোগ। উদ্ভাবনী সমাধান গ্রহণ করে, জনগণের চাহিদার কথা শুনে এবং সততার সাথে কাজ করে অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব ইতিবাচক পরিবর্তনের উত্তরাধিকার গঠন করতে পারে।বাংলাদেশ যখন এই মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, তখন জাতির জনগণ তাদের অন্তর্বর্তীকালীন নেতাদের দিকে আশা ও আশাবাদ নিয়ে তাকিয়ে আছে। সামনের পথটি তার চ্যালেঞ্জ ছাড়া হবে না, তবে এটি সম্ভাবনাতেও পূর্ণ। ঐক্য, স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধির জন্য এই মুহূর্তটিকে কাজে লাগিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করতে পারে।উপসংহারে বলা যায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে শুধু প্রশাসনিক দায়িত্বের চেয়ে বেশি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; এটি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আগ্রহী একটি জাতির আশা ও স্বপ্ন বহন করে। নিষ্ঠা ও দৃষ্টিভঙ্গির সাথে এই দায়িত্বটি গ্রহণ করার মাধ্যমে, এটি একটি উন্নত আগামীর দিকে দেশের যাত্রায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে যাওয়ার সম্ভাবনা রাখে।   লেখক: মো. ওবায়দুর রহমান, প্রধান শিক্ষক, ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদী
    খাদ্যের পাশাপাশি ত্রাণ হিসেবে বস্ত্র দরকার বানভাসিদের
    মানুষের মৌলিক চাহিদা বলতে খাদ্য (অন্ন), বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তাকে বোঝায়, কিন্তু প্রধানত অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান- এই তিনটি। তবে এগুলি জীবনধারণের মৌলিক উপকরণ। মৌলিক অধিকার নয়।কুড়িগ্রামে আজ ১৫ দিন থেকে বন্যা অব্যাহত আছে। নিম্নাঞ্চলের সড়কগুলো ডুবে আছে এখনো। আজ (১৪ই জুলাই) একজন দানবীর মানুষের সহযোগিতায় কিছু ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলাম কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের উড্ডামারি গ্রামে। শতাধিক পরিবারের মাঝে সেগুলো বিতরণ করছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন মহিলা পেছন থেকে আমাকে তাদের বাড়িতে ডাকলেন। বাড়িতে গিয়ে দেখলাম বন্যার পানি এখনও শুকায়নি। আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে দাড়িয়ে আছি অথচ বাড়িতে ডেকে তারা ঘর থেকে বেরোচ্ছিলেন না!বাইরে থেকেই প্রশ্ন করলাম কিছু কি বলবেন? ঘর থেকে তারা বললো, আজ টানা ১৫ দিন থেকে পানিতে অবস্থান করছি। আমাদের পরনের কাপড়ের বেহাল অবস্থা। কাপড়গুলো পড়ার অনুপোযোগী। তারা আক্ষেপ করে আরো বললো কিছু কিছু লোক আসে খিচুড়ি, চিড়া, মুড়ি নিয়ে। কিন্তু কেউ পরনের কাপড় দেয় না। এরকম আক্ষেপ ওই বাড়িতে থাকা আরও সাত আট জনের। যখন সেখান থেকে ফিরছিলাম অনেক মানুষ আমাকে বলছিল মহিলাদের ও ছোট ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধদের পরনের কাপড়ের বড়ই অভাব। আমার মনে হয় বানভাসিদের খাদ্য সহায়তা (ত্রাণ) দেওয়ার পাশাপাশি বস্ত্রও ত্রাণ দেওয়া উচিত।কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো নেমে যায়নি বন্যার পানি। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, জেলার ৯ উপজেলায় বন্যার্ত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ৫শ মেট্রিক টন চাল, ৩৫ লাখ টাকা ও ২৩ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।লেখক, এস এম ফয়সাল শামীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সময়ের কন্ঠস্বর- ইমেইল[email protected] এফএস
    ডিভোর্স দেয়ার সঠিক নিয়ম, মামলা করার পদ্ধতি ও শাস্তি কী?
    বিয়ে একটি সামাজিক বন্ধন, সেই সাথে এটি একটি ধর্মীয় বিষয়। যদিও মুসলিম আইন বিয়েকে একটি দেওয়ানী চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বিয়ের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ে একসাথে বসবাস করা, পরিবার গঠন, সন্তান জন্মদান ও বংশবিস্তার করার বৈধ্য অধিকার লাভ করে থাকে। একটি সুস্থ বিয়ে দুটি মানুষকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, নির্ভশীলতা, দায়িত্ববোধ ও ভালোভাসা তৈরি করে থাকে। তাছাড়া দুইটি পরিবারকেও আবদ্ধ করে রাখে। এই সম্পর্ক মাঝপথে ভেঙে যেতে পারে এই চিন্তা বা আশঙ্কা কারো কল্পনাতেও আসে না।তবে ঠুনকোসহ ছোট-বড় নানা কারণে দেশে তালাকের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েদের শিক্ষা বাড়ছে, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বাড়ছে, সচেতনতা বাড়ছে ও আত্মসম্মানবোধ বাড়ছে সে জন্য মেয়েদের মধ্যে একতরফা মানিয়ে নেওয়া, স্যাক্রিফাইজ, অ্যাডজাস্ট করার মানসিকতা বর্তমানে লক্ষ্য করা য়ায় না। সংসারে খুব সামান্য ও ছোট ছোট বিষয় নিয়ে আলাদা থাকার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। ধর্মীয় অনুশাসন, পারিবারিক বন্ধন ও ধর্মপালনের মাধ্যমে ডিভোর্সের হার কমানো সম্ভব। ডিভোর্স নিয়ে সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হলো-১. সাধারণত স্বামী-স্ত্রী যে কেউ ডিভোর্স দিতে পারেন। বিয়ে নিবন্ধনের সময় ১৮ নম্বর কলামে স্ত্রীকে ডির্ভোসের অধিকার দেওয়া থাকে। তবে ডির্ভোসের অধিকার দেওয়া না থাকলে স্ত্রীকে আদালতে গিয়ে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ অনুসারে পারিবারিক আদালতে আবেদন করে ডির্ভোস দেওয়া যায়।২. পারস্পরিক সম্মত্তিতে ডির্ভোস দেওয়া যায় এ ক্ষেত্রে বেশি প্রচলিত হচ্ছে খুলা। স্ত্রীকে প্রাপ্য দেনমোহর ও ভরণপোষন (স্বামী-স্ত্রী যেই তালাক প্রদান করুক আইন অনুসারে স্ত্রী তার প্রাপ্য দেনমোহর ও ভরণপোষন পাবেন) প্রদান করে মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪ এর ৬ ধারা মতে ডির্ভোস বা তালাক রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী নতুন করে বিবাহ করতে হলে ইদ্দতকালীন তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর বিবাহ করতে হবে। তালাক দেওয়ার সময় যদি স্ত্রী অন্ত:সত্বা থাকেন তাহলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। যে দিন সন্তান ভূমিষ্ট হবে সেদিন তালাক কার্যকর হবে।৩. স্বামী-স্ত্রী তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪ অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান, সিটিকর্পোরেশন এর মেয়র বরাবর নোটিশ প্রদান করতে হয়। স্বামী বা স্ত্রীকেও নোটিশের এক কপি পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান বা মেয়র নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করবেন। যদি চেয়ারম্যান বা মেয়র ব্যর্থ হন বা স্বামী-স্ত্রী তাদের সিদ্ধাস্তে অটল থাকে ৯০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তালাক কার্যকর হবে। তালাক কার্যকর হওয়ার পর পুনরায় সংসার করতে চাইলে আবার নিয়ম মেনে বিয়ে করতে হবে। ৪. হিন্দু আইনে বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাক এর বিধান নাই। দাম্পত্য জীবন চরম পর্যায়ে গেলে ভরণপোষণ এবং পৃথক বাসস্থান দাবি করে দেওয়ানী আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদ চেয়ে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে হবে।৫. খ্রিষ্ঠান ধর্মালম্বীদের বিবাহ বিচ্ছেদ একটি জটিল ও ঝামেলাপূর্ণ বিষয়। ডির্ভোস অ্যাক্ট, ১৮৬৯ এর ১৭ ও ২০ ধারা অনুসারে জেলা জজ ও হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে হয়।শাস্তি: বিয়েসংক্রান্ত অপরাধ দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪৯৩ থেকে ৪৯৮ ধারাতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ডির্ভোস না দিয়ে পুনরায় বিয়ে করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক্ষেত্রে সাত বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং বিবাহ বাতিল বলে গণ্য হবেন। ব্যতিক্রমও রয়েছে যদি স্বামী বা স্ত্রী কেউ সাত বছর পর্যন্ত নিরুদ্দেশ বা জীবত নাই বলে মনে করা হয় তাহলে তালাক ছাড়া বিবাহ করতে পারবেন। আগের বিবাহ গোপন করে বা প্রতারণার মাধ্যমে বিবাহ করলে তা দন্ডবিধি ৪৯৫ ধারা মোতাবেক ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। আবার জেনেশুনে অন্যের স্ত্রীকে বিবাহ করলে তা ৪৯৭ ধারা অনুসারে ব্যভিচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও বিবাহ বাতিল হবে।মামলা কোথায় করবেন:বিয়ে সংক্রান্ত যে কোন মামলা আইনজীবীর মাধ্যমে প্রতিটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সহকারী জজ/পারিবারিক আদালতে করতে হয়। কারো যদি মামলা পরিচালনা করার সামর্থ্য না থাকে তাহলে জেলা লিগ্যাল এইড বরাবর আবেদন করতে হয়।সবশেষে বলা যায়, আদর্শ পরিবার গঠন, মানুয়ের জৈবিক চাহিদাপূরণ ও মানসিক প্রশান্তি লাভের একমাত্র বিধান ও মাধ্যম হচ্ছে বিয়ে। তাই ডিভোর্স এর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজে বার বার ঠান্ডা মাথায় পরিবারের সাথে আলোচনা করা উচিত। ডির্ভোস একটি পরিবার, সমাজ বা কারো জন্য সুখকর নয়।মো: মাহমুদ হাসান নাজিম ।। আইনজীবী, জজ কোর্ট ঢাকা।[email protected]
    শুধুমাত্র চুমু খাওয়ার জন্যই তৈরি এই সেতুটি
    ভিয়েতনামের দক্ষিণ ফু কোক দ্বীপে শুধুমাত্র চুমু খাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে সেতু। আর এই সেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিস ব্রিজ’। দম্পতিরা সূর্যাস্তের সঙ্গে একটি রোমান্টিক মুহূর্ত ভাগ করে নিতে পারবে এখানে। গত বছর সেতুটি উন্মোচন করা হয়েছে। ইতালির স্থপতি মার্কো ক্যাসামন্টি এবং বিলাসবহুল পর্যটন বিকাশকারী সান গ্রুপ সেতুটি নির্মাণ করেছে। সেতুটির নকশা করা হয়েছে ক্লাসিক মাইকেলেঞ্জেলো ফ্রেস্কো পেইন্টিং ‘দ্য ক্রিয়েশন অফ অ্যাডাম অ্যাট দ্য সিস্টিন চ্যাপেল’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে।সেতুটি নির্মাণ করেছে ইতালির স্থপতি মার্কো ক্যাসামন্টি এবং বিলাসবহুল পর্যটন বিকাশকারী সান গ্রুপ। সেতুটির নকশা করা হয়েছে ক্লাসিক মাইকেলেঞ্জেলো ফ্রেস্কো পেইন্টিং ‘দ্য ক্রিয়েশন অফ অ্যাডাম অ্যাট দ্য সিস্টিন চ্যাপেল’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৮০০ মিটার (অর্ধ মাইল) এবং দুটি পৃথক অংশ নিয়ে গঠিত। অংশ দুটির মধ্যে ব্যবধান শুধুমাত্র ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি)।      যেসব দম্পতিরা সেখানে যাবে, তারা সেতুর দুই পাশের দুই অংশে দাঁড়াবে এবং চুমু খাওয়ার জন্য নাটকীয়ভাবে একটু ঝুঁকতে হবে। শুধু তাই নয় সেতুর দুই অংশের মধ্যকার দূরত্ব এত নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যে, বছরের প্রথমদিন সূর্য দুটি অংশের মধ্যবর্তী ফাঁকে পড়বে। সেতুটির ভিয়েতনামী নাম, ‘কাউ হন বা বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া।’ যে দর্শনার্থী তার সঙ্গীকে এই প্রশ্নটি করতে চান, তাদের জন্য একদম সঠিক স্থান এটি। ‘কিস ব্রিজ’ ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলীয় কিয়েন গিয়াং প্রদেশের ফু কোক দ্বীপের সানসেট টাউনে অবস্থিত। ফু কোক দ্বীপ অবকাশ যাপনের জন্য বেশ পরিচিত। বিশেষ করে নব দম্পতিদের মধুচন্দ্রিমার জন্য পছন্দের স্থান। এফএস
    ডাক্তার দাবি করা মুনিয়া জানেন না ওটি-আইসিইউ কী
    সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন ডাক্তার পরিচয় দেওয়া এক নারী। তিনি চিকিৎশাস্ত্রে ব্যবহৃত সাধারণ কিছু শব্দের অর্থও বলতে পারছেন না।গত ডিসেম্বরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে আনসার সদস্যরা মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে এক ভুয়া গাইনি চিকিৎসককে আটক করেন। এরপর তাকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সেখান থেকে ওই তরুণীর ঠাই হয় জেলহাজতে।পরে তিনি জেল থেকে বের হয়ে দাবি করেন তিনি ভুয়া ডাক্তার না। তাকে জিজ্ঞেস করা হয় ওটি মানে কী? তিনি বলেন, ওটি মানে সার্জারি করা, ওটি করা। প্রশ্নকারী আবার বলেন, ওটির একটি অর্থ আছে। এটার পুরো মানেটা কী? তিনি উত্তর দিতে পারেননি।তাকে জিজ্ঞেস করা হয় আইসিইউ মানে কী, এই প্রশ্নেরউত্তর দিতে গিয়ে বলেন, যেখানে রোগীকে আইসিইউতে মানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়, অক্সিজেন দেওয়া হয়। তাকে আবার জিজ্ঞেস করা হয় আইসিইউ মানেটা কী, তিনি উত্তর দিতে পারেননি।একটি রোগীর বিষয়ে কথা বলছিলেন মুনিয়া। উপস্থাপক তাকে জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছিল তার? মুনিয়া বলেন, ব্রেন স্টোমাক। উপস্থাপক বুঝতে না পেরে আবার জিজ্ঞেস করেন ব্রেইন টিউমার? মুনিয়া বলেন, না; ব্রেইন স্টোমাক হয়েছে।মুনিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তিনি ডাক্তার কী না, কেন টিকটক করেন। এর উত্তরে মুনিয়া বলেন , আমি যদি ডাক্তার না হই তাহলে কী আমাকে ঢাকা মেডিকেলে এমনি এমনি পেশেন্ট দেখতে দেয়?অভিযুক্ত তরুণী ঢাকা মেডিকেল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিতেন এবং সুযোগ পেলে চিকিৎসকদের রুমে ঢুকে মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করতেন। এ ছাড়া নীলক্ষেত থেকে অ‍্যাপ্রোন, আইডি কার্ড এবং মিডফোর্ড থেকে স্টেথোস্কোপ কিনে প্রতারণায় ব্যবহার করতেন এবং নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিতেন।একাধিক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মুনিয়া খান রোজা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকের সেলিব্রিটি। তিনি ডাক্তার সেজে ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নিয়ে ঢামেকে টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন। টিকটকে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতেন এই তরুণী।চিকিৎসকের মিথ্যা পরিচয় দেওয়া মুনিয়া খান চাঁদপুর সদরের হামান কর্দ্দি গ্রামের প্রয়াত মো. করিম খানের মেয়ে। তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন।মুনিয়া এসেছিলেন নাগরিক টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে। সেখানে তার মুখোমুখী হন আরেকজন নারী উপস্থাপক। এফএস
    ‘সবকিছু পুইড়া যাকগা, আমার মা-তো বাঁচছে’
    ঢাকার টিঅ্যান্ডটি মাঠের পাশে বনানীর গোডাউন বস্তিতে আগুন লাগে রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ও সেনা সদস্যদের সম্মিলিত প্রয়াসে নিয়ন্ত্রণে আনা হয় গোডাউন বস্তির আগুন।বস্তিতে থাকা মানুষজনের জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে যাওয়ায় বিলাপ করতে দেখা গেছে অনেককেই। কিন্তু মাথায় একটি ব্যাগ নিয়ে ছোট্ট একটি মেয়েকে দেখা যায় হাসিমুখে হাঁটতে। কষ্টের মাঝেও শিশুটির হাসিমুখে বলা কথাগুলো এরইমধ্যে ভাইরাল নেটদুনিয়ায়।সব কিছু পুড়ে ছাই হওয়ার পরও হাসির কারণ জানতে চেয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেয়েটি বলে, হাসমু না, আমার মা বাঁচছে এডাই বেশি আর কিচ্ছু লাগতো না। সবকিছু পুইড়্যা যাগ গা, আমার মা তো আছে! মানুষ থাকলে কামাই করতে পারব।জানা গেছে, মেয়েটির বাবা নেই, মা-ই তার শেষ সম্বল, শেষ অবলম্বন।রাজধানীর বাসিন্দাদের কাছ থেকে আগুনের ভয় যেন কোনোভাবেই কাটছে না। বনানীর গোডাউন বস্তির আগুন আরও একটি কালো অধ্যায়। রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে ভয়াবহ এ আগুনের সূত্রপাত হয়; যা ফায়ার সার্ভিসের দেড়ঘণ্টার বেশি সময়ের প্রচেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৫টায় নিয়ন্ত্রণে আসে।ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আক্তারুজ্জামান জানান, বস্তিতে আগুনে ৪০-৫০টার মতো ঘর পুড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এফএস
    ওমরাহ পালন করতে মক্কায় আয়মান ও মুনজেরিন
    জনপ্রিয় শিক্ষক জুটি আয়মান সাদিক ও মুনজেরিন শহীদ ব্যক্তিজীবনে জুটি বেঁধেছেন গত বছর। কুমিল্লার ছেলে আয়মান সাদিকের পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। পড়াশোনা শেষ করে ২০১৫ সালে ‘টেন মিনিট স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। যা গত কয়েক বছরে দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।মুনজেরিন শহীদের জন্ম চট্টগ্রামে। তার পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজিতে। এই বিষয়ে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান পেয়েছিলেন মুনজেরিন। এরপর বৃত্তি নিয়ে ইংরেজিতেই স্নাতকোত্তর করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মুনজেরিন বর্তমানে ‘টেন মিনিট স্কুল’এ ইংরেজির শিক্ষক।এই দুজন বিয়ের পরে নতুন খবর দিলেন। দুজনই এই মুহূর্তে অবস্থান করছেন মক্কা নগরীতে। রমজানের প্রথমদিনেই জানালেন দুজনই ওমরাহ পালন করতে মক্কায় গেছেন।একটি ছবি পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে দুজনকে কাবা শরীফে দেখা যাচ্ছে। ক্যাপশনে লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের প্রথম ওমরাহ।ছবিতে তাদের দুজনকে শুভ কামনা জানিয়েছেন ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।এফএস
    নিঃসঙ্গতা বা একাকিত্ব দিনে ১৫টি সিগারেটের সমান ক্ষতি করে
    শাহানা হুদাভালোবাসার ও কাছের মানুষগুলো একসঙ্গে থেকে ছোট-বড় সুখ ও দুঃখ ভাগ করে নিতে পারাটা কি বেশি আনন্দের? নাকি একা একা আরাম-আয়েশে থেকে দিনযাপন করাটা বেশি সুখের? আমার বাবা বলতেন, তোমাদের ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব পাশে থেকে যদি শক্তি জোগায়, তাহলে সেখানেই তুমি সুখ খুঁজে পাবে। একা থাকার মধ্যে কোনো সুখ নেই। সবার সঙ্গে থাকলে কোনো কিছু না পাওয়ার দুঃখ সহজে স্পর্শ করতে পারে না। আর যখন অনুভব করতে পারবে যে তোমরা একা নও, তখন মানসিকভাবে শক্তি খুঁজে পাবে। সবাই সবার পাশে থাকলে মানুষ কখনো ভেঙে পড়ে না, নিঃসঙ্গ ও বিষণ্ন হয় না।আমার বাবা মনোচিকিৎসক বা আচরণ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। অথচ আজ থেকে ৫০ বছর আগে তিনি জীবনযাপনের সহজ ও সুখকর যে পথ আমাদের দেখিয়েছিলেন, এরই প্রকাশ দেখছি যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল ডা. ভিভেক মার্থির প্রতিবেদনে। তিনি বলেছেন, জনস্বাস্থ্যের পরবর্তী বড় সমস্যা হচ্ছে নিঃসঙ্গতা। সামাজিক নিঃসঙ্গতা ও বিচ্ছিন্নতা দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি করে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গবেষণা বলছে, নিঃসঙ্গ ব্যক্তিদের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৩০ শতাংশ বেশি। শুধু হৃদ্‌রোগ নয়, সামাজিকভাবে নিঃসঙ্গ ও বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের স্মৃতিভ্রংশ, স্ট্রোক, বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও অকালমৃত্যুর শিকার হওয়ার ঝুঁকিও অনেক বেশি।চিকিৎসকেরা এখন দেখা সাক্ষাৎ করে পরিবার-পরিজন, সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কম সময় কাটাতে বলছেন। পত্রিকায় পড়লাম, প্রখ্যাত সার্জন বিবেক মূর্তি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বহু মানুষ নিঃসঙ্গতায় ভোগে। এই ভোগার অনুভূতিটা ক্ষুধা অথবা তৃষ্ণার মতো। তিনি বলেছেন, একাকিত্ব বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে মিথস্ক্রিয়ার কোনো বিকল্প আসলে নেই। যোগাযোগের জন্য আমরা যত বেশি প্রযুক্তির দ্বারস্থ হয়েছি, ব্যক্তি পর্যায়ে মিথস্ক্রিয়া ততই হারিয়েছি।’আধুনিক মানুষ এখন একা হয়ে যাচ্ছে। মানুষ যখন ভালো থাকে, সুখে থাকে ও সুস্থ থাকে, তখন এই একা থাকাটা উপভোগ করে। কিন্তু হতাশা, বিষণ্নতা, ভয়, সন্দেহ, উদ্বেগ, জটিল কোনো সমস্যায় পড়লে অথবা মানসিক অস্থিরতা বেড়ে গেলে বা শরীর খারাপ হলে মানুষ খুব নিঃসঙ্গ ও অসহায়বোধ করে। এই অসহায়ত্বের সময় হতাশা, ব্যর্থতা ও বিপর্যয় নেমে আসে মানুষের জীবনে। মানুষ তখন কাউকে পাশে চায়। সে হতে পারে তার পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী কিংবা স্বজন। যন্ত্র বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমাধান বয়ে আনে না। এখানে স্পর্শ বা মুখোমুখি সংলাপ দরকার হয়।নিঃসঙ্গতা কিশোর-তরুণদের বেশি ভোগাচ্ছে। তারা অনেক বন্ধুর মধ্যে থাকলেও মূলত একাই থাকে। তারা আত্মীয়স্বজন ও পরিবারকে এড়িয়ে চলতে চায় এবং নির্ভর করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও যন্ত্রের ওপর। সে কারণে ডা. বিবেক মূর্তি পরামর্শ দিয়েছেন, কর্মস্থল, স্কুল, প্রযুক্তি কোম্পানি, সামাজিক সংগঠন, বাবা-মায়েরা যেন মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোয় ভূমিকা রাখেন।এত দিন ধারণা করা হতো, একাকিত্বের কারণে মানুষ মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, একা থাকা ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে শারীরিক ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, একাকিত্বের কারণে অকালমৃত্যুর পরিমাণ বেড়েছে ২৬ শতাংশ। মানসিকভাবে শক্ত মানুষ সব বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আবার অনেকেই নিজের বিচ্ছিন্ন অবস্থাকে মেনে নিতে পারে না। এই একা হয়ে যাওয়া ব্যক্তির মধ্যে নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। বয়স বাড়তে থাকলে এসবের সঙ্গে যুদ্ধ করা ক্রমেই কঠিন হয়ে যেতে থাকে।মানবসমাজের ইতিহাস সমাজবদ্ধ মানুষের কথা বলে। পরিবার ও সমাজ ছাড়া মানুষ বাঁচে না, বাঁচা কষ্টকর। বর্তমানের শহুরে নিরাপত্তা, সুবিধাদি, নানা প্রযুক্তিগত সুযোগ মানুষকে একা বাস করার কিছু সুযোগ হয়তো করে দিয়েছে, কিন্তু মানসিকভাবে মানুষ একা থাকা নিয়ে এখনো দুর্বল। এ কারণেই মানুষ নিজের দুঃসময়ে পরিবার, বন্ধু ও সন্তানের পাশে থাকতে চায়।যদি বলি একাকিত্ব ও বন্ধুহীনতা থেকে সমাজে আত্মহত্যা বাড়ছে, সেটা খুব একটা ভুল বলা হবে না। অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য আমাদের হতাশা ও বিষণ্নতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। হতাশা মানুষের সৃজনশীলতা, বোধ ও বুদ্ধিমত্তা নষ্ট করে দেয়। সব মানুষের ক্ষেত্রে চাপ গ্রহণ করার মানসিক ধরন ও শক্তি এক নয়। সবাই সব ধরনের আঘাত, প্রবঞ্চনা, লজ্জা, ব্যর্থতা, অশান্তি একভাবে মেনে নিতে পারেন না। মানসিকভাবে একা থাকার কারণে কারও সঙ্গে শেয়ার করারও সুযোগ পান না, তখন যেকোনো পথ খুঁজে নেন পালিয়ে বাঁচার জন্য।যুক্তরাষ্ট্রের নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যাথিউ লিবারম্যান বলেন, ‘বেঁচে থাকতে সামাজিক যোগাযোগ প্রয়োজন এবং সেটা আমাদের দেহ জানে। তবে বিষয় হলো, একাকিত্বের মতো মানসিক আঘাত প্রমাণ করে যে সামাজিক যোগাযোগটা জরুরি।’ এখানে ‘একাকিত্বকে’ উনি ‘মানসিক আঘাত’ বলে মনে করছেন। তিনি বলেছেন, যেভাবে খিদে লাগলে পেট জানান দেয়, তেমনি কোনো কিছুর ঘাটতি হওয়ার সংকেত দেয় একাকিত্ব।বিষণ্নতা, অর্থাৎ ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে যারা ভুগছে, তাদের বিষণ্নতা স্বাভাবিক মানুষের বিষণ্নতার মতো নয়। তাদের পুরো অস্তিত্ব গভীর অন্ধকারে ডুবে যায়। নিজের ওপর অনেক সময়ই আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। মানুষের পক্ষে ভালোবাসাহীন পরিবেশ বহন করা খুব কষ্টের। একাকিত্ব থেকে মুক্তির জন্যই পরিবারপ্রথার সৃষ্টি। আবার পরিবারকে যেন একা থাকতে না হয়, সে জন্য সমাজের সৃষ্টি। পরিবার ও সমাজের স্থান তাই ব্যক্তির ওপরে। আমরা অবশ্য ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার চাপে পড়ে তা ভুলে যাচ্ছি এবং স্বার্থপরের মতো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছি।ব্রিগহাম ইয়ং ইউনিভার্সিটির সাইকোলজি ও নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক ড. জুলিয়ান হল্ট-লান্সটেড গণমাধ্যমের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমাদের মস্তিষ্ক যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত করা।’ দলের মধ্যে থেকে মানুষ কাজ করায় অভ্যস্ত। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা যাদের বিশ্বাস করি, তাদের সান্নিধ্য আশা করি। তবে সেটা পাওয়া না গেল আমরা বিচ্ছিন্ন হই, আশপাশের মানুষদের আর বিশ্বাস করতে পারি না। অথবা সেই দল থেকে আমরা বের হয়ে যাই। এটা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য হুমকিস্বরূপ।’ একাকিত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার প্রভাব সবার ওপর সমানভাবে পড়ে না। যাদের ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যগত বা মানসিক সমস্যা রয়েছে বা আর্থিকভাবে দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।মানুষ কখনোই পুরোপুরি একা থাকে না। সবারই সামাজিক জীবন, মেলামেশা, বন্ধুত্ব, কাজের সম্পর্ক, প্রেম, পরিবার ইত্যাদি থাকে। তবে সমস্যা হয় তখনই, যখন মানুষ কোনো কারণে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করে বা এমন সম্পর্কে জড়িয়ে যায়, সে সম্পর্কে আবেগ বা ভালোবাসা থাকে না, শুধু স্বার্থ থাকে। স্বার্থের কারণে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, সেই সম্পর্ক নষ্ট হতে সময় লাগে না। আর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া মানে মানুষের নিঃসঙ্গ হয়ে পড়া।ইচ্ছা করেই হোক, যেকোনো কারণেই হোক, নিঃসঙ্গ থাকা সবার জন্যই ক্ষতিকর। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, একা বোধ না করলেও সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অনেক সময় মানুষ এটা বুঝতে পারে না। তার খাওয়া, ঘুম, সেবা, আনন্দ ও দায়িত্ব পালনের বিষয়গুলো সব এলোমেলো হয়ে যেতে পারে, যা শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে।সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যই আমাদের পরিবার, বন্ধুত্ব, ভালোবাসার মতো পারস্পরিক সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে। পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে একজন অসহায় ও ভেঙে পড়া মানুষের। পরিবারের কোনো সদস্য বিপদে পড়লে যদি অন্য সদস্যরা তার পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে বুঝতে হবে আমরা তাকে বিষণ্নতার মুখে ঠেলে দিচ্ছি।শুধু কাজ বা সাফল্য যে মানুষকে একাকিত্ব কাটানোর, পরিপূর্ণভাবে সুখী করার ও বাঁচার রসদ দিতে পারে না, মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সে কথাই বলেছেন এভাবে, তরুণ বয়সে তিনি বুঝতে পারেননি যে কাজের বাইরেও একটা জীবন আছে। নিজের সম্পর্কগুলোকে যত্ন করার জন্য, সফলতা উদ্‌যাপনের জন্য এবং ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্যও সময় নিতে হবে, যখনই প্রয়োজন মনে হবে বিরতি নিতে হবে। সম্প্রতি নর্দার্ন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বলেছেন, তারুণ্য পেরিয়ে বার্ধক্যে পা রাখার আগপর্যন্ত তিনি উপলব্ধি করতে পারেননি যে কাজের বাইরেও মানুষের আলাদা একটা জীবন রয়েছে। আর সেই জীবনই হলো সামাজিক জীবন।যতই আমরা আধুনিক হই এবং যান্ত্রিক জগতে ব্যস্ত থাকি না কেন, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলোকে লালন করতে হবে, সবার পাশে থাকতে হবে, পছন্দসই মানুষের সঙ্গে দলবদ্ধভাবে থাকার চেষ্টা করতে হবে। অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে অন্যরাও আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। মোটকথা, সুখ বা দুঃখ ভাগ করে নিতে হবে। মনীষীরা বলেন, ভাগ করে নিলে সুখ বাড়ে, আর দুঃখ কমে। আর দালাই লামা বলেছেন, সুখী থাকাই হচ্ছে ভালো স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় উদাহরণ।লিখেছেন: শাহানা হুদা, যোগাযোগকর্মী।
    আগামী ১০-১৫ বছরে বিএনপি-জামায়াত বলে কোনো দল টিকে থাকবে না: জয়
    বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত বলে কোনো দল টিকে থাকবে না। যখন এই জঙ্গিবাদী-মৌলবাদী শক্তির চিহ্ন বাংলাদেশ থেকে মুছে যাবে, তখন দেশে শান্তি আসবে।আজ শনিবার সাভারে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের সপ্তম আসরের চূড়ান্ত পর্বে পুরস্কার বিতরণ শেষে তিনি এ কথা বলেন।বাংলাদেশের তরুণেরা সমস্যা সমাধানে চিন্তা করতে পারে, এজন্য তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশে যে উন্নতি হয়েছে, তা আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। এবার ৬টি ক্যাটাগরিতে মোট ১২টি সংগঠনকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে ২০১৫ সাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হচ্ছে।’প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের তরুণ ও আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের অনেক সমস্যা আছে। আপনারা শুধু সমস্যা নিয়ে চিন্তা করেন না। আপনারা সমস্যার সমাধান চিন্তা করছেন এবং সমাধান বের করছেন ও বাস্তবায়ন করছেন। আমি শুরু থেকে বাংলার তরুণদের বলছি, আমরা দেশ হিসেবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশের তরুণেরাও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। নিজের উদ্যোগে নিজের কর্মসংস্থান আপনারা বের করে নিতে পারেন। দুর্নীতির সমস্যাও আপনারা সমাধান করতে পারেন। শুধু সরকার পারে তা না, আমরা সবাই এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি।’জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ও শীর্ষ বাছাই হওয়া সব সংগঠনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘৭০০-র বেশি সংগঠন আবেদন করেছে। সবাইকে আমরা পুরস্কৃত করতে পারিনি। কিন্তু সবার জয়ই বাংলার জয়। আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমি অত্যন্ত গর্বিত যে সংগঠনগুলো এত বেড়েছে। আমরা শুরু করেছিলাম মাত্র কয়েক শ দিয়ে। এখন ৭০০-র বেশি আবেদন এসেছে। আপনারা যেভাবে কাজ করছেন সব জেলায়, যেভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছেন, পরিশ্রম করছেন। যে স্বীকৃতি পাচ্ছেন, জাতিসংঘ, ইউনেসকো সবখানে। তা দেখে খুব গর্ব হয়। বাংলাদেশের তরুণেরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।তরুণদের উদ্দেশে জয় বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য যেভাবে কাজ করছেন। মানুষ ও পরিবেশের জন্য যে চিন্তা করছেন, পরিশ্রম করছেন, তা অসাধারণ। আমাদের স্বপ্ন ছিল, তরুণেরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপনারাই হচ্ছেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। শুধু বর্তমান নয়, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়েও আমরা চিন্তা করি। আপনারা সেটা দেখিয়ে দিচ্ছেন। ১৫ বছর ধরে উন্নয়নের যে ধারা, বাংলাদেশ যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যখন শুরু করেছিলাম, বাংলাদেশ তখন ছিল দরিদ্র দেশ ছিল। এখন হয়ে গেছি মধ্যম আয়ের দেশ।’জয় বলেন, ‘আমাদের যে পাথফাইন্ডার আছেন, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। স্বাধীনতার আগে থেকে আপনারা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনা। এই তরুণেরা আপনাদেরই সন্তান। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’নির্বাচনের সময় নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘নতুন সমস্যা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস। জ্বালাও-পোড়াও। নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ। এই সমস্যাও কিন্তু দূর করা যায়। আমরা জানি, গত তিন নির্বাচন ধরে তাদের এই নির্যাতন, প্রত্যেক নির্বাচনের মাস দু-এক আগে তারা এই জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। এটার মোকাবিলা কী? খুব সহজ। মোকাবিলা হচ্ছে, সামনের নির্বাচনে ভোট দেবেন। যারা জ্বালাও-পোড়াও করছে, তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের ভোট দেবেন। নৌকায় ভোট দেবেন।’সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘যারা দেশের জন্য কোনো দিন কিছু করেনি স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি করা দল, যে দেশে গণহত্যা করেছে। সেই জিয়াউর রহমান মানুষকে ফাঁসি দিয়েছে, তার সৃষ্ট দল। যারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। যারা যুদ্ধ অপরাধী, সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে এনেছে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। তারা দেশের জন্য কোনো দিন কিছু করেনি। দেশের জন্য আপনারা কাজ করছেন, আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।’দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে জয় বলেন, ‘এটা এখন আর কাউকে বোঝাতে হয় না যে বাংলাদেশের মানুষ ১৫ বছর ধরে দেখেছে, দেশ কোথায় থেকে কোথায় এসেছে। কেউ কল্পনা করতে পারেনি, উন্নয়নের এই গতি ১৫ বছর আগে কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি, বাংলাদেশ যে এত দূর আসবে। এই গতি যদি ধরে রাখা যায়, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে। খবর: বাসসবাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ নেই জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র বলেন, ‘অনেকেই মৌলবাদী ও সন্ত্রাসীদের উসকানি দিচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমি আপনাদের অনুরোধ করব, এদের কথায় কান দেবেন না। বিশেষ করে আমাদের অনেক বিদেশি রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের আগে অনেক বেশি কথা বলা শুরু করে। ঠিক তখনই এই সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়। তার মানে কী? তাদের এরাই উসকাচ্ছে। তবে চিন্তা করবেন না, যেদিন নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে, তারাও চুপ হয়ে যাবে। আর বেশি দিন নাই, মাত্র দেড় মাস। সামনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে একটি উপায়—আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।এফএস

    Loading…