বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ইজিবাইক চালক মুকুল হত্যাকান্ডের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও নন্দীগ্রাম থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে শেরপুর ও নাটোরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার টুনিপাড়া এলাকার এমদাদুল হক মিলন, নাটোরের সিংড়া উপজেলার সাতারদিঘী এলাকার আনোয়ার হোসেন প্রামানিক, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পশ্চিম ধানুয়া মধ্যপাড়ার আব্দুল জলিল সবুজ, সুবহান, রাজশাহীর চারঘাটের উত্তর রায়পুর এলাকার ঝন্টু ওরফে বেলাল ও নাজিরুল ইসলাম।
রবিবার বিকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি মুকুল। তার স্ত্রী রাত থেকেই তাকে খোঁজাখুঁজি করতে শুরু করেন। পরদিন পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠালে স্ত্রী এবং স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
এরপর থেকে ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করে পুলিশ। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার জানান, গ্রেফতারকৃত আনোয়ার এবং এমদাদুল হক মিলন ইজিবাইক চালক মুকুলের বন্ধু।
ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আনোয়ার হোসেন প্রাং এবং এমদাদুল হক মিলন মুকুলকে শেরপুর ধুনট মোড়ে দেখা করে তাকে নারী সঙ্গের প্রস্তাব দেয়। মুকুল তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে তারা সবাই মিলে মুকুলের ইজিবাইকে করে খন্দকার টোলা মোড়ে যায়। সেখান থেকে তিনটি যৌন উত্তেজক পানীয় জিনসিং প্লাস কিনে তারা শুভগাছা বাজারে যায়।
যাওয়ার পথে আনোয়ার এবং মিলন একটি জিনসিং প্লাস এর বোতলে ঘুমের ট্যাবলেট মেশায়। তারপর শুভগাছা বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে তারা মুকুলকে কৌশলে ওই ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত জিনসিং প্লাস পান করায় এবং সবাই একত্রে চা পান করে। শুভগাছা বাজারে চা পান শেষে মুকুলের ইজিবাইকে করে শুভলী হয়ে চাঁনপুরের দিকে রওনা হয়। শুভলী ও চাঁনপুরের রাস্তার মাঝে তারা ১৫/২০ মিনিট ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে ইজিবাইকের পিছনে বসে গল্প করে।
গল্পের কিছু সময়ের মধ্যে মুকুল ঘুমিয়ে পড়লে মিলন মুকুলকে ইজিবাইকের পিছনে ধরে বসে থাকে এবং আনোয়ার ইজিবাইকটি চালিয়ে কাত হয়ে কালীগঞ্জের রাস্তা দিয়ে চাকলমা বাজারে যায়।
চাকলমা বাজার পার হয়ে রাত ১০ টার দিকে একটু সামনে গিয়ে মুকুলকে গাড়ী থেকে নামিয়ে ধানের জমির আইলের ধারে পানিতে রাখার পরে মুকুল নড়াচড়া শুরু করলে মিলন মুকুলের মাথা পানির ভিতর চেপে ধরে রাখে এবং আনোয়ার মুকুলের পা চেপে ধরে থাকে ।
কিছুক্ষণ পরে মুকুলের নড়চড়া বন্ধ হয়ে গেলে তাকে সেখানে ফেলে রেখে ইজিবাইক নিয়ে নাটোরের দিকে রওনা হয় তারা।
পরে আসামি জলিল অপর আসামি সোবাহানের মাধ্যমে আসামি নাজিরুল ইসলামের কাছে ইজিবাইকটি বিক্রি করে। ছিনতাই চক্রকে গ্রেফতার করার পর নিহত মুকুল হোসেনের ইজিবাইকটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এফএস