বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের ৬৮টি কারাগার একেকটি টর্চার সেল। গায়েবি মিথ্যা মামলায় সুস্থ সবল নেতা-কর্মীদের ধরে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপের পর লাশ বানিয়ে বের করা হচ্ছে। কারাগার থেকে বেরুচ্ছে লাশের সারি।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, গ্রেপ্তার বিএনপির নেতাদের কারাগারে গরু-ছাগলের খাবারের জন্য প্রযোজ্য অতি নিম্নমানের খাবার দিয়ে অসুস্থ বানিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। কেউ যাতে টু-শব্দও না করতে পারে সেজন্য কারাগারের ভেতরে-বাইরে চলছে বিরোধী দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীদের নানাবিধ অমানবিক আচরণ। কারাবন্দিদের নির্যাতন করা হচ্ছে অবর্ণনীয় ও পৈশাচিক কায়দায়। দেশের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায় এড়ানোর জন্য গল্প সাজিয়ে মিথ্যাচার করছে।
তিনি বলেন, জেল হেফাজতে মৃত্যুর দায় এড়াতে পারবেন না শেখ হাসিনা এবং তার মাফিয়া চক্রের কারা কর্মকর্তারা। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর সরকারের নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদন তুলে ধরে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী সাম্প্রতিককালে ধর-পাকড় চালিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতা, কর্মী, সমর্থক দিয়ে বাংলাদেশের কারাগারগুলো ভরে ফেলেছে। কারাগারে তারা অসুস্থ হচ্ছেন এবং ধুঁকে ধুঁকে সেখানে মরছেন।
দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪৩ হাজারের কম হলেও সেখানে দেশের গণমাধ্যমের হিসেবে প্রায় ৮৮ হাজার বন্দি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ দখলদার সরকার তাদের দখলদারিত্ব ধরে রাখার জন্য পুরো দেশকে নরকপুরিতে পরিণত করেছে। ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপত্তা নেই। সরকারের প্রতিপক্ষদের জীবন রাষ্ট্রীয় নজরদারি বন্দুকের নলের নিচে বন্দি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, গত বছর জেল হেফাজতে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের। যাদের বেশীরভাগই বিএনপি নেতাকর্মী। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিরোধীদের বিরুদ্ধে চলমান ক্র্যাকডাউনের মধ্যে চলতি ডিসেম্বরে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বিএনপি নেতা-কর্মী।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন রিজভী।