১৫ বছরের ব্যবধানে যশোর-১ (শার্শা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের বার্ষিক আয় বেড়েছে ১০৯ গুণ। একইসঙ্গে বেড়েছে সম্পদের পরিমাণ। তার স্ত্রীর সম্পদও বেড়েছে। শেখ আফিলের চেয়ে তার স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা বেশি আছে।
১৫ বছর আগে আফিল দম্পতির নামে কোনো কৃষি জমি না থাকলেও বর্তমানে ৬৭ একর কৃষি জমির মালিক তারা। তবে এই খাতে বর্তমানে তাদের কোনো আয় নেই। ২০০৮ ও ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণে এই চিত্র উঠে এসেছে।
পেশায় ব্যবসায়ী শেখ আফিল উদ্দিন এই আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
বক্তব্য জানতে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা ২০০৮ ও ২০২৩ সালের হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের বার্ষিক আয় বেড়েছে ১০৯ দশমিক ৪৩ গুণ। ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ছয় লাখ ৯৭ হাজার ৬৫০ টাকা। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে দুই লাখ ৫৬ হাজার ৫০ টাকা ও চাকরি থেকে চার লাখ ৯২ হাজার টাকা। ১৫ বছরের ব্যবধানে বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ৯৪৮ টাকা। বর্তমানে তার নামে ৩৩ একর কৃষি জমি থাকলেও আয় দেখাননি।
২০০৮ সালে শেখ আফিল উদ্দিনের মোট সম্পদ ছিল ২৩ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৬ টাকার। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ২৮৪ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ছিল ২২ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১০২ টাকা।
১৫ বছরে মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৭৪ টাকা। এর মধ্যে অস্থাবর ২৬ কোটি ৭৭ লাখ পাঁচ হাজার ৭৭৯ টাকা ও স্থাবর সম্পদ এক কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৭ টাকা। ২০০৮ সালে শেখ আফিল উদ্দিনের নামে কোনো কৃষি জমি ছিল না। তবে ২০২৩ সালের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন ৯৬ লাখ ৪৭ হাজার ৬০ টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৫৩৮ দশমিক ৭৫ শতক কৃষি জমি রয়েছে তার। নগদ আছে ৭০ লাখ ৫৮ হাজার ৮২৮ টাকা। তবে তার স্ত্রীর কাছে নগদ আছে এক কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৫১৭ টাকা।
শেখ আফিল উদ্দিনের স্ত্রীর বর্তমানে বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৯০ হাজার। যা ১৫ বছর আগে ছিল ৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। তার আয়ের উৎস ছিল চাকরি। ২০০৮ সালে শেখ আফিল উদ্দিনের স্ত্রীর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫ কোটি ২০ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ ছিল ৫৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ টাকার ও অস্থাবর সম্পদ ১৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫২ হাজার টাকার। ১৫ বছরে তার মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১১ লাখ এক হাজার ৮৬৩ টাকা।
এর মধ্যে অস্থাবর সম্পদ ১৬ কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার ৪৯৩ টাকা ও স্থাবর সম্পদ ৬১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ টাকা। ১৫ বছর আগে তার কোনো কৃষি জমি না থাকলেও বর্তমান তিন হাজার ২৩৫ শতক জমির মালিক। যার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ টাকা।
এমআর