বলাৎকারের ঘটনায় শাস্তির দাবিতে সাধারণ মানুষ মাদ্রাসায় গেলে ৯৯৯ এ ফোন করে ভাঙ্গচুরের অভিযোগ এনে সহযোগিতা চায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সামনে আসে বলাৎকারের ঘটনা। এমনই ঘটনা ঘটেছে জেলার দেবীগঞ্জ পৌরশহরের আলহেরা মাদ্রাসায়। অভিযোগ উঠেছে বলাৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষের এমন কাল্পনিক অভিযোগ।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাত পৌনে ৮টায় এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে বলাৎকারের শিকার ছয় ছাত্রকে হেফাজতে নেয়। একই সাথে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।
মিজানুর রহমানের বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ গোড়গ্ৰাম। সে একই এলাকার মোঃ লতিফুর রহমানের ছেলে।
দেবীগঞ্জ থানা ও ভুক্তভোগী ছাত্ররা জানায়, আলহেরা মাদ্রাসায় আবাসিক ও অনাবসিক ব্যবস্থায় পাঠদান চালু আছে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল বলাৎকারের অভিযোগ পায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে না জানিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করে। তবে চাকরিচ্যুত হলে জনরোষের ভয়ে ওই শিক্ষক মাদ্রাসা ত্যাগ করেনি। পরে বুধবার বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন। প্রায় একহাজারের বেশি অভিভাবক ও স্থানীয়রা মিলে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে রাত পৌনে ৮টায় মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকে। একপর্যায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসা ভাঙ্গচুরের অভিযোগ এনে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ বিষয়টি জানায় । যদিও মাদ্রাসায় ভাঙ্গচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও বেশ কয়েকবার একই অভিযোগ উঠলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই তা ধামাচাপা দিয়েছে। এমনকি ভুক্তভোগী ছয় ছাত্রের মধ্যে একজনকে দুই বছর আগে বলাৎকার করে একই শিক্ষক। ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও মারধর করে তিনি এই অপকর্ম করতেন।
আলহেরা মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই প্রধান বলেন, মিজানুর রহমান গত ৭/৮ বছর থেকে এখানে শিক্ষকতা করছেন। গতকাল এক অভিভাবক তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনলে, গতকালই তাকে জরুরি মিটিংয়ের মাধ্যমে বরখাস্ত করা হয়।
দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রুনা লায়লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেছি। এই ঘটনায় দ্রুত আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এমআর