এইমাত্র
  • মির্জাপুরে বৃষ্টি প্রার্থনায় অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা
  • এবার গাজায় তীব্র গরমে শিশুর মৃত্যু
  • শাহজাদপুরে গলায় ফাঁস নিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা
  • আবারও কমলো সোনার দাম
  • আবাসিক হোটেলে অভিযান, নারীসহ আটক ৭
  • মাদারীপুরে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
  • ভালুকায় খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে স্যালাইন ও পানি বিতরণ
  • রাবিতে জীববিজ্ঞানে ‘ট্রান্সলেশনাল’ গবেষণার ওপর সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • 'সংসদ সদস্যরা উপজেলা প্রার্থীর হয়ে প্রচারণা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে'
  • বেরোবিতে ‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
  • আজ শনিবার, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    ঈদে নিম্নআয়ের মানুষদের একমাত্র ভরসা 'ফুটপাত'

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম
    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম

    ঈদে নিম্নআয়ের মানুষদের একমাত্র ভরসা 'ফুটপাত'

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম

    দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর মাত্র ১২ দিন বাকী। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আর এই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ধনী দরিদ্র সবাই যার যার মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছোট-বড়বড়, ধনী-দরিদ্র সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ঈদ কেনা কাটায়। ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লায় সর্বত্রই জমে উঠেছে কেনাকাটা।

    সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ধনীদের পাশাপাশি নিম্ন আয়ের লোকজনরাও চায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এই ঈদে আনন্দ উপভোগ করতে। বিশেষ করে তুলনামূলক অল্প দামে পছন্দের পোশাক, এমিটিশন গয়না, জুতা, স্যান্ডেল, অন্য প্রসাধনীসহ পছন্দের পণ্য কিনতে তারা এখন ভিড় করছেন ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানগুলোতে।

    শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগরীর কান্দিরপাড়, টাউন হল গেইট, নিউ মার্কেট, রাজগঞ্জ, চকবাজার গিয়ে দেখা যায়, মূলত নিম্ন আয়ের লোকজনকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে প্রচুর দোকান খোলা হয়েছে।

    টাউন হলের দুই পাশে অস্থায়ীভাবে দোকান বসানো হয়েছে রাস্তার ওপরই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন।

    কম বাজেটের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দ হয় এমন বাহারি নকশা ও রঙের সব পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে ফুটপাতের দোকানেও। তাই ক্রেতাদের কোনো না কোনো জিনিস পছন্দ হচ্ছে আর কিনেও নিচ্ছেন।

    মেয়েদের পোশাক, শিশুদের পোশাক, প্রসাধনী, পুরুষদের পোশাক যেমন- জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ক্যাপ, লুঙ্গি, মানিব্যাগসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা।

    সেখানকার বেশিরভাগ গ্রাহকরা বলেছেন, তারা ফুটপাতের স্টলে কেনাকাটা করছেন। কারণ শপিংমলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি।

    নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকা থেকে ঈদ মার্কেট করতে আসা এক ক্রেতা জানান, টাউন হল থেকে ফুটপাতের দোকান থেকে কিছু প্রসাধনী ও জুতা কিনেছেন। তিনি বলেন, সাধ থাকলেও, সাধ্য নেই ভাই। মার্কেটের চওড়া দাম শুনে চলে আসলাম। মার্কেটে ঈদ উপলক্ষে প্রতিটা জিনিসের দাম একটু বেশি। তারপরও মার্কেটের তুলনায় এখানে জিনিসের দাম অনেক কম।

    এদিকে টাউনহলের সামনে বসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, তার পরিবারে ৬ জন সদস্য রয়েছে। নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। ভাড়া বাড়িতে তারা থাকছেন। কলা বিক্রির আয় দিয়ে চলে সংসার।

    ঈদে কি কেনা হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এমনিতেই সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ঈদে ছেলে ও মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে ফুটপাত থেকে শার্ট ও একটি জামা কেনা হয়। মনে চায় এই ঈদে পরিবারের সবাইকে কিছু দিতে। কিন্তু ইচ্ছে করলেই অর্থের অভাবে তা আর পারছি কোথায়! মার্কেটে যে দাম জিনিসের, তাই ফুটপাতই একমাত্র ভরসা।

    কুমিল্লা নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী দোকানগুলোতে কেউ চৌকি পেতে, কেউ কাঠের টেবিল বা ভ্যানের ওপর, কেউ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে, আবার কেউ চাদর বিছিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গে প্রসাধনী সামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন।

    ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বসা মিজান হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে বেচা-বিক্রি কম থাকলেও এখন বেশ বেড়েছে। ঈদের জন্য কালেকশন বাড়িয়েছে।

    নারীদের পোশাক নিয়ে বসা জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের তো এ সময়টাতেই একটু আয় বেশি হয়। কিন্তু, পুলিশ আসলে আমাদেরকে উঠে যেতে হয়। কি আর করবো। তাও শোকরিয়া, ভালোই বেচা কেনা হচ্ছে।

    ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বেচাকেনা চলে জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর ইসলামপুর, বঙ্গবাজার, সদরঘাটের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে পণ্য এনে এখানে ফুটপাতে বিক্রি করছেন।

    কোন পোশাকের দাম কত বিভিন্ন ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য ডেনিম (জিন্স) প্যান্ট ১০০ থেকে ২৫০ টাকা, অন্য প্যান্ট ৩০ থেকে ৬০, প্যান্ট ও গেঞ্জির সেট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শিশুদের ফ্রক ও টপস ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ওয়ান পিস ১৫০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

    মেয়েদের থ্রি-পিস ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টপস ও ওয়ান পিস ২৫০ থেকে ৩৫০, পার্টি ড্রেস ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০, স্যান্ডেল ও জুতা ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

    মুসমিল ধর্মাবলম্বীদের বছরের প্রধান উৎসব মাহে রমজানের শেষে আনন্দের ঈদকে বরণ করার জন্য ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে কারোরই আগ্রহ উৎসাহের কমতি থাকে না। স্বল্প আয়ের লোকদের মনে থাকে নানা দুশ্চিন্তা। তারপরও ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। তারা সাধ্যনুযায়ী চেষ্টা করছেন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটাতে।

    আর ঈদের আনন্দকে ভোগান্তিমুক্ত করতে কাজ করছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে এজন্য কুমিল্লা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্কতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি মার্কেটেই পর্যাপ্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে।

    জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, এবার ক্রেতারা নির্বিঘ্নে ঈদ শপিং করতে পারবে। আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। যানজট নিরসনে আমাদের ট্রাফিক বিভাগ সার্বক্ষণিক কাজ করছে।

    পিএম

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…