এইমাত্র
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আরও ২ জন আটক
  • প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু
  • সাবেক বিচারপতি মেজবাহ উদ্দিন মারা গেছেন
  • বাসভবন-কার্যালয় প্রস্তুত, সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
  • ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ
  • আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
  • মেসি-শচীনের ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ, উপহার বিনিময়
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা
  • হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
  • বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    ধর্ম ও জীবন

    শবে কদরের রাতে বেশি সওয়াব পেতে যেসব আমল করতে পারেন

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৮ পিএম
    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৮ পিএম

    শবে কদরের রাতে বেশি সওয়াব পেতে যেসব আমল করতে পারেন

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৮ পিএম

    মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল কদর। পবিত্র কোরআনে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত ঘোষণা করা হয়েছে। রমজান মাসের শেষ দশকের যেকোনো বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের কথা থাকলেও বেশিরভাগ ইসলামি গবেষকদের মতে ২৭ রমজানেই ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময় রাত।

    সেই হিসেবে আজ শনিবার (০৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত পবিত্র শবে কদর বা লাইলাতুল কদর। এদিন সন্ধ্যার পর থেকেই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিশেষ ইবাদতের মাধ্যমে রাতটি অতিবাহিত করবে।

    দেশের পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় রাতটি কাটাবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

    মাহে রমজানের এ রাতেই মানবজাতির জন্য সার্বিক দিকনির্দেশনা, কল্যাণ ও তাদের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন মাজিদ নাজিল করেন। তাই এই রাতে কোরআন তেলওয়াতকে সর্বোত্তম ইবাদাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া অনেকেই নফল নামাজ, জিকির ও দরুদ পাঠের মাধ্যমে রাতটি অতিবাহিত করেন। দোয়াকেও এই রাতের বিশেষ প্রার্থনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

    মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “তিন ব্যক্তির দোয়া অগ্রাহ্য করা হয় না (বরং কবুল করা হয়); পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।” (বায়হাকি, হাদিস: ৩/৩৪৫; সিলসিলাতুস সহিহা, আল বানি: ১৭৯৭)

    এ বিষয়ে হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মহানবীর কাছে যখন জানতে চান, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর— তাহলে তখন কোন দোয়াটি পড়বো? তখন তিনি বললেন, তুমি বলো-

    اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي

    উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি।

    অর্থ- হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)

    এছাড়াও, কদরের পবিত্র রাতে আরও কয়েকটি দোয়া বারবার পড়লে বেশি বেশি সওয়াব হাসিল করা সম্ভব।

    ১. رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

    উচ্চারণ- রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।

    অর্থ- হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করো ও আমাদের প্রতি রহম করো। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সুরা মুমিনুন: আয়াত ১০৯)

    ২. رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ

    উচ্চারণ- রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।

    অর্থ- হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষম করুন। আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন। (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ১৯৩)

    ৩. رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ

    উচ্চারণ- রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।

    অর্থ- হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা করুন। (সুরা হাশর: আয়াত ১০)

    ৪. رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا

    উচ্চারণ- ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।

    অর্থ- হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু। (সুরা বাকারাহ: আয়াত ২৮৬)

    ৫. رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ

    উচ্চারণ- রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।

    অর্থ- হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন। (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ১৪৭)

    ৬. رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ

    উচ্চারণ- রাব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।

    অর্থ- হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর। (সুরা ইবরাহিম: আয়াত ৪১)

    ৭. رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

    উচ্চারণ- রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।

    অর্থ- হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো। (সুরা আরাফ: আয়াত ২৩)

    ৮. رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

    উচ্চারণ- রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।

    অর্থ- হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর। (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ১৬)

    ৯. رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

    উচ্চারণ- রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।

    অর্থ- (হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। (সুরা কাসাস: আয়াত ১৬)

    ১০. سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ

    উচ্চারণ- সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।

    অর্থ- আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে। (সুরা আল-বাকারাহ: আয়াত ২৮৫)

    ১১. > رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

    উচ্চারণ- রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।

    অর্থ- হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী। (সুরা মুমিনুন: আয়াত ১১৮)

    কোরআনে উল্লেখিত এসকল ক্ষমা প্রার্থনা দোয়াগুলো নামাজের সেজদায় গিয়ে তাসবিহ পড়ে কিংবা শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ ও দরূদ পড়ার পর বেশি বেশি পড়ে তওবা করতে পারেন।

    শবে কদরের রাতে বিশেষ সওয়াব পেতে মাগরিব ও এশার নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা উচিত।

    শবেকদরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল ও জিকির করা যেতে পারে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো-

    ১। অনর্থক কাজ পরিহার করা (টিভি, মোবাইল ইত্যাদিতে সময় নষ্ট না করা)। (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৩)

    ২। ইবাদতে প্রফুল্লতার জন্য আরামদায়ক পোশাক পরা।

    ৩। দান-সদকা করা।

    ৪। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা। (বুখারি, হাদিস : ৪৯৯৭)

    ৫। বেশি বেশি নফল ও হাজতের নামাজ পড়া। (বুখারি, হাদিস : ১৯০১)

    ৬। দোয়া ও জিকিরে মগ্ন থাকা। নবীজি (সা.) আয়েশাকে (রা.) কদরের রাতে নামাজ পড়ার জন্য একটি দোয়া শিখিয়েছেন। তা হলো- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩)

    এ ছাড়া নিম্নবর্ণিত জিকিরগুলো করা যেতে পারে।

    (১) সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার। (১০০ বার)

    (২) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। (২০০ বার)

    (৩) আস্তাগফিরুল্লাহ (কমপক্ষে ৫০০ বার, যত বেশি সম্ভব হয়)

    (৪) বেশি বেশি দরুদ পড়া।

    (৫) সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি (কমপক্ষে ১০০ বার)

    (৬) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কদির।’ (কমপক্ষে ১০০ বার)

    ৭) দোয়া ইউনুস। (যত পারা যায়)

    (৮) ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম।’ (কমপক্ষে ১০০ বার)।

    (৯) ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ বেশি বেশি পড়তে পারেন।

    (১০) সুরা ইখলাস যত বেশি পড়া যায়।

    (১১) সাইয়েদুল ইসতিগফার পাঠ করা। ইসতিগফার জাতীয় আমলগুলো রাতের শেষ ভাগে করা যেতে পারে। (সুরা : জারিয়াত, আয়াত : ১৮)

    (১২) লম্বা রুকু-সিজদাসহ তাহাজ্জুদ পড়া। সম্ভব হলে সিজদায় কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো পড়া। (সুরা : জুমার, আয়াত : ৯; নাসায়ি, হাদিস : ২২০২)

    (১৩) সাহরি খাওয়ার আগে মহান আল্লাহর কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে দোয়া করা। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৬৭; নাসায়ি, হাদিস : ৩১০৮)

    (১৪) সাহরি খাওয়া। (নাসায়ি, হাদিস : ২১৪৮)

    (১৫) ফজরের নামাজ পড়া।

    বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করা উচিত। তবে কত রাকাত আদায় করতে হবে বা কোনো সুরা দিয়ে সালাত আদায় করতে হবে তার কোনো নির্দিষ্ট দলিল নেই। যত রাকাত ইচ্ছা এবং যে কোনো সুরা দিয়ে ইচ্ছা পড়া যায়। এমনকি নফল নামাজের জন্য কোনো নিয়তও নেই।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…