বর্তমানে আমাদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে ওজন বাড়ছে খুব ছোট থেকেই। যার ফলে স্থূলতায় ভুগছে শিশুরাও। আর শিশুদের এই স্থূলতা ক্রমেই চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে বাবা-মায়ের জন্য।
বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক, শারীরিক কার্যক্রমের অভাব শিশুদের স্থূলতার অন্যতম কারণ। সন্তানের জেদের কারণে বাবা-মায়েরা বাইরের খাবার কিনে দিচ্ছেন। এদিকে শিশুর হাতে মোবাইল, ট্যাবের কারণে ছোটরা এখন বাইরে বেরিয়ে খেলাধূলার বদলে ঘরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে।
যার ফলে শিশুদের মধ্যে আলস্য এবং স্থূলতা বাড়ছে। এতে করে অল্প বয়স থেকেই ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরচর্চা বা শারীরিক কার্যক্রম না করার কারণে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’ হানা দিচ্ছে ছোট থেকেই।
মেটাবলিক সিনড্রোমের লক্ষণ
১. চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের মধ্যে মেটাবলিক সিনড্রোম দেখা দিলে হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যায়, পেট-কোমরে চর্বি জমে।
২. রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় এমনকি রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে।
৩. শিশুদের মধ্যে মেটাবলিক সিনড্রোমের কারণে অল্প বয়সেই পাল্লা দিয়ে বাড়বে রক্তচাপ।
৪. এছাড়া মেটাবলিক সিনড্রোমের কারণে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যায়, ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। আর এর প্রভাব পড়ে হার্টের উপরে।
বাবা-মায়েরা কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?
শিশুদের স্থূলতা এবং মেটাবলিক সিনড্রোম থেকে দূরে রাখতে ছোটবেলা থেকেই শিশুকে নির্দিষ্ট নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। মা-বাবাকেও মানতে হবে কিছু নিয়ম।
১. রান্না করতে ইচ্ছে করছে না বলে শিশুকে যখন তখন বাইরের খাবার বা ‘হেলথ ড্রিঙ্ক’ খাওয়ানো, কিংবা যখন তখন বায়না করলেই চকোলেট দিয়ে বায়না মেটানো এ সব অভ্যাস বদলাতে হবে। শিশুকে সবসময় ঘরের স্বাস্থ্যকর রান্না করা খাবার খাওয়াতে হবে।
২. ছোট থেকে শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি হলে মেদ জমার প্রবণতা কমে। শিশুকে নিয়ম করে হালকা শরীরচর্চার অভ্যাস করাতে হবে।
৩. প্যাকেটজাত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই দেওয়া উচিত নয় শিশুকে। ঝালমশলার খাবারের বদলে শিশুর নিয়মিত খাবারে ডাল, মাছ, মুরগির মাংস, সবুজ শাকসবজি, ফল আর সয়া প্রোটিন।
৪. সব রকম খাবারই রাখতে হবে শিশুর খাদ্যতালিকায়। তাতে যেমন প্রোটিন থাকবে, তেমনই ফ্যাট ও শর্করাও। সবই রাখতে হবে পরিমাণ মতো। সে ক্ষেত্রে ফ্যাট নিতে হবে প্রয়োজনীয় মাছ-মাংস বা রান্নায় যেটুকু তেল লাগছে তা থেকেই। বাড়তি ফ্যাটযুক্ত খাবার তালিকায় না রাখাই ভাল।
এবি