জুন মাসে খুব ছোট্ট পরিসরে শুরু করা কোটা সংস্কার আন্দোলনের অগ্নিশিখা নিভাতে দেরী করায় তা রুপ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। তারপর ছাত্রের সাথে যোগ হয় জনতা। জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সেই আগুনে ঝাঁপ দেয় দেশের আপামর ছাত্র-জনতা। বছরের পর বছর বুকের ভেতর আটকে রাখা ক্ষোভ নিয়ে যে বিক্ষোভের মিছিলটি গিয়ে ঠেকে গণভবনে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা এটাকে আরো পাকাপোক্ত করে। তারপরই আসে ৫ই আগস্ট।
জীবন উৎসর্গ করা রংপুরের আবু সাঈদ এই বিপ্লবের প্রতীক। তিনিসহ অন্যান্য মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্র শোক পালনের ঘোষণা দিলেও শোকের কালো ব্যাজ প্রত্যাখ্যান করে বুলেটের সামনে আবু সাঈদের বুক পেতে দেওয়া সেই ছবি ফেসবুকে আসে লাল হয়ে। শোভা পায় ফেসবুকের প্রোফাইলে প্রোফাইলে। স্বৈরতন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার লাল করাটা আমার কাছে এই বিপ্লবের প্রথম সম্মিলিত ঘোষণা বলে মনে হয়েছে। ব্যাপারটা সহজ ছিলোনা। যারা ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছিলেন তারা জানে।
৮ই আগস্ট ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১০ই আগস্ট রংপুরের পীড়গঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে ছুটে যান তিনি। কিন্তু এই বিপ্লবে কত আবু সাঈদের প্রাণ গিয়েছে, কত আবু সাঈদ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে তা রাষ্ট্রের চোখে দেখতে হবে, পাশে থাকতে হবে। অবশ্য ইতোমধ্যে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে প্রশাসনের সহায়তায় এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে দ্রুত বেগে। ‘কেউ এলোনা’, ‘কেউ খবর নিলোনা’ এমন কথা মুখ দিয়ে বের হওয়ার আগে।
একতাকে উজ্জীবিত রাখতে হবে, প্রোফাইল পিকচার লাল করাদের বেহাত করা যাবেনা।
লেখকঃ মো. জোবায়ের হোসেন।
সদস্য প্রেসক্লাব মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।