এইমাত্র
  • নেপালে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ১৭০
  • জনগণের কাছে যেতে বললেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
  • লেবাননে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা ইসরাইলের
  • ফের মাশরাফীর বিরুদ্ধে মামলা
  • ইউক্রেনে সব লক্ষ্য পূরণ করা হবে: পুতিন
  • স্বামীসহ গ্রেফতার সাবেক এমপি হেনরি
  • ফেরত আনা হচ্ছে রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনাকে
  • প্রথম ভাষণে যা বললেন হিজবুল্লাহর উপপ্রধান
  • এবার চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে রাস্তায় ইলিয়াস কাঞ্চন
  • ৫ দিনের রিমান্ডে সুলতান মনসুর
  • আজ সোমবার, ১৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    একটি নতুন ঘরের স্বপ্ন পারভিনের

    জাবেদুল ইসলাম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম
    জাবেদুল ইসলাম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম

    একটি নতুন ঘরের স্বপ্ন পারভিনের

    জাবেদুল ইসলাম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম

    দীর্ঘ সংগ্রাম আর দুর্ভোগে ভরা যুদ্ধে চলছে পারভীন আক্তারে সংসার। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে কোনো মতে অন্যের দেয়া ছোট্টা কুটিরে বসবাস করছেন। সংসারে এই আছে তো এই নেই, নানান টানাপোড়া। স্বামীর খোঁজ নেই বহু বছর। কোথায় আছে? কি করছে? কিংবা কেমন আছে? কিছুই জানা নেই! এই টানা-পোড়ার সংসারে একটি নতুন ঘর নিজের পক্ষে করা দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়।

    বলছিলাম মিরসরাই উপজেলার খইয়াছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম খইয়াছড়া এলাকার মিরাজ উদ্দিন প্রধানের বাড়ির মৃত মনির আহমদের কন্যা পারভিন আক্তারের কথা। এযেন জীবন যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়ে টিকে থাকার এক লড়াই।

    জানা গেছে, দুই ভাই ঢাকা চাকরি করার সুবাদে আসাযাওয়া ছিলো পারভিনের। এরি মাঝে তাকে দেখে পছন্দ হয় ওয়াসিম রানা (৪২) নামের এক যুবকের। ঢাকায় তার নিজস্ব ব্যবসা ছিলো। তবে তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুদারগঞ্জ থানার প্রতাপপুর গ্রামে। খুবই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। পারভিনকে পছন্দ হওয়ায় দুপক্ষের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। বেশ ভালোই কাটছিলো তাদের সংসার। তবে হঠাৎ ওয়াসিমের মাথায় ব্রেন্ড টিউমারসহ শরীরে নানান জটিলতা দেখা দিলে সুখের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। শত চেষ্টায়ও কোন ফল মিলছিলো না।

    এদিকে, সময়টা ২০১৪। একদিন ব্যবসার জন্য মালামাল নিতে বের হন ওয়াসিম, তবে আর বাসায় ফিরলেন না। সেসময় দীর্ঘ ৬ মাস ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় শত খোঁজাখুঁজি করেও ওয়াসিমকে না পাওয়াতে দুই সন্তান নিয়ে তার ভাইয়েরা বোনকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই যে স্বামী হারালেন আজও কোনো খোঁজ পাননি। শুরু হয় পারভীনের নতুন সংগ্রামী জীবন। বর্তমানে একভাইয়ের দেয়া ছোট একটি কামরায় দুই সন্তানকে নিয়ে কোন ভাবে জীবনযাপন করছেন। মানুষের কাছে চেয়ে কিংবা অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া এবং সংসারের খরচ বহন করছেন। বাবার বাড়িতে ঘর করার জায়গায় থাকলেও টাকার অভাবে ঘর বাঁধা হচ্ছে না।

    আক্ষেপ জানিয়ে পারভিন আক্তার বলেন, মনে করেছিলাম আমার ছেলে বড় হলে আমার দুঃখ গুজবে। তবে সেটিও হলো না, কারণ ছেলের চলাফেরা স্বাভাবিক নয়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। এখন যদি মেয়ে কিছু করতে পারে তাহলে আমার জীবনের দুঃখ গুজবে।

    তিনি আরও বলেন, ভাইয়ের ঘরের ছোট এক রুমে খাটের উপরে আর নিচে করে ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোন রকম বসবাস করছি। আমার একটি ঘরের খুবই দরকার। সরকারি কিংবা সমাজপতিদের নিকট এই আবেদন। যাতে আমাকে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেন।

    পারভিনের ভাই শাহজাহান জানান, পারভিন ছোটঅবস্থায় আমার বাবা মারা যায়। অল্প বয়সে বোনকে বিয়ে দিই। সুখের সংসার মুহূর্তে শেষ হয়ে গেছে। ভালো পরিবারে বোনের বিয়ে হয়েছিলো। এখনতো আমাদের সংসার বড় হয়ে গেছে, তাই বোনকে ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও একটা ঘর করে দিতে পারছি না। কেউ যদি একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে অবশ্যই আমরা ঘর করার জন্য জায়গা দিব।

    সমাজকর্মী আউয়াল জানান, বন্যার সময় আমাদের সংগঠন থেকে পারভিন আক্তারকে সহযোগিতা করা হয়েছিলো। তিনি খুবই কষ্টে জীবনযাপন করছেন। ত্রাণ সহায়তা দিতে গিয়ে তার জীবনের গল্প শুনে আমরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।

    সামাজিক সংগঠন হিতকরী'র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শহিদুল ইসলাম রয়েল বলেন, মহিলাটি একদিন হিতকরীর মিটিংয়ে এসে তার অসহায়ত্ব তুলে ধরলে আমরা সরেজমিনে তদন্তের জন্য যাই।পুরো উঠান খাল হয়ে আছে।রাস্তা ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য। এরমধ্যে দুই সন্তানকে নিয়ে আরেকজনের জায়গায় করা ছোট্ট একটা রূমে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মহিলাটি। পিতৃসুত্রে জায়গা নেই। যাও দেখালো একটা পুকুরের পাড়ের ছোট্ট অংশ।

    এখন আমরা হিতকরীর ফান্ডে জমা হওয়া অর্থে একটা ঘর করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। যেহেতু পুকুরের মাটি ভরাট করে ভিটে করতে হবে সেজন্য এটা একদিকে যেমন সময়সাপেক্ষ অন্যদিকে ব্যয়বহুল হবে।

    জামায়াতে ইসলামী খইয়াছড়া ইউনিয়নের আমীর হাফেজ একরামুল হক জানান, পুরো ঘর করার মতো আমাদের এই মুহুর্তে ফান্ড নেই। তবে ঘরের কাজের জন্য যতটুকু সম্ভব আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

    মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করবো।

    এইচএ

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…