নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে আলোচিত আনোয়ার হত্যা মামলায় মোঃ রাজা মিয়া (২২) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়রা জজ মোঃ হাফিজুর রহমান ৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে এ রায় দেন। এ সময় মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবুল হাসেম এবং আসামির পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট নজরুল ইসলাম খান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজা মিয়া মোহনগঞ্জ উপজেলার বানিয়াজুরা গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে। বেকসুর খালাস প্রাপ্তরা হলেন একই গ্রামের ইছব মিয়া, ফয়েজ উদ্দিন ও সফিকুল ইসলাম।
মামলার রায় সূত্রে জানাযায়, ২০০৯ সালের জুনের ২১ তারিখ বিকেলে বানিয়াজুরা গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে আনোয়ার আসরের নামাজের জন্য পুকুরের পাড়ে বসে বদনা দিয়ে অজু করছিল। এসময় রাজা মিয়া পিছন দিক থেকে এসে খুন করার উদ্দেশ্যে আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে আনোয়ার এর হাতে ও ঘাড়ে দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে আনোয়ারের ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আনোয়ারকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২২ তারিখ আনোয়ারুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। আনোয়ারের বাবা মোঃ ফজলুল করিম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে ১০৭/১১৭(সি) ধারা মতে মামলা হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সাক্ষীদের জবানবন্দীর সাথে মৃত্যুর আগে পুলিশ ও মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকের সামনেখুন হওয়া আনোয়ারে দেওয়া জবাবন্দীর মাধ্যমে মামলায় হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় রাজা মিয়াকে ২০৩/৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ড রায় দেয় এবং উক্ত ধারায় ৫০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। এছাড়া অন্য তিনজনের নামে আনিত অভিযোগ দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের উকিল আবুল হাসান জানান, হত্যা মামলার এই মৃত্যুদণ্ড রায়টি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যিনি হত্যার সাথে জড়িত তাকে যেমন ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তেমনি যারা জড়িত নয় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। এতে করে হত্যা হানাহানি কমবে বলে ধারণা করছি।
এসআর