এইমাত্র
  • হাদিকে গুলি করা অভিযুক্ত মাসুদের ভারতে গিয়ে সেলফি
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আরও ২ জন আটক
  • প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু
  • সাবেক বিচারপতি মেজবাহ উদ্দিন মারা গেছেন
  • বাসভবন-কার্যালয় প্রস্তুত, সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
  • ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ
  • আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
  • মেসি-শচীনের ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ, উপহার বিনিময়
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা
  • হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    অতিঝুঁকিপূর্ণ ১৫০ রোহিঙ্গা পরিবারকে সরিয়ে নিতে সেড নির্মাণে ব্যস্ত ছওয়াব

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৮ এএম
    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৮ এএম

    অতিঝুঁকিপূর্ণ ১৫০ রোহিঙ্গা পরিবারকে সরিয়ে নিতে সেড নির্মাণে ব্যস্ত ছওয়াব

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৮ এএম

    কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৪ তে বর্ষাকালে সম্ভাব্য পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা ১৫০ পরিবারের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে সেড নির্মাণ শুরু করেছে বেসরকারি সংস্থা ছওয়াব। প্রকল্পটি চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন পায়।

    ছওয়াব জানায়, ক্যাম্প ১৪-এর বিভিন্ন ব্লকে বসবাসরত ৩২২টি অতিঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৫০ পরিবারকে বর্ষার আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। গত বছর একই ক্যাম্পে পাহাড়ধসে প্রাণ হারান ৭ জন রোহিঙ্গা, নিখোঁজ হন আরও একজন। সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে এটি একটি জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    সম্প্রতি একটি সংবাদে দাবি করা হয়, ক্যাম্প-১৪–তে নতুন করে আগত রোহিঙ্গাদের জন্য সেড নির্মাণের নামে বনভূমি উজাড় করে, গাছ কেটে এবং পাহাড় কেটে জায়গা তৈরি করা হচ্ছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এতে আরাকান থেকে নতুন রোহিঙ্গারা আসতে উৎসাহিত হবে।

    তবে সরেজমিনে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। নতুন সেড নির্মাণকাজ চলছে ক্যাম্প-১৪ এর ই-৩ ব্লকে, যা আগে একটি খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। স্থানীয় রোহিঙ্গা অধিবাসীরা জানান, এটি একসময় হাতির চলাচলের জায়গা ছিল, পরে স্থানীয় যুবকরা গর্ত ভরাট করে এটি খেলাধুলার উপযোগী মাঠে রূপান্তর করে।

    থাইংখালীর বিট কর্মকর্তা বিকাশ দাশ বলেন, “এটি বন বিভাগের আওতাধীন জায়গা হলেও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে এটি কাঁটাতারের ভেতরে পড়েছে এবং পরিচালনার দায়িত্বে সিআইসি আছেন। আমি শেল্টার নির্মাণকাজ চলাকালীন সময়ে পরিদর্শন করেছি, গাছ কাটা বা পাহাড় কাটা কিছুই দেখিনি।”

    ছওয়াবের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা:

    ছওয়াবের জেনারেল ম্যানেজার লোকমান হোসেন তালুকদার এক লিখিত বিবৃতিতে জানান, “সংবাদে বলা হয় নতুন রোহিঙ্গাদের জন্য সেড তৈরি করা হচ্ছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে আমরা ক্যাম্প-১৪ এর পাহাড়ধসে ঝুঁকিতে থাকা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করা ১৫০টি রোহিঙ্গা পরিবারকে সরিয়ে নিতে এ উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন কোনো রোহিঙ্গার জন্য এটি করা হয়নি। বরং প্রকল্পের কাজ শুরুর বহু পরে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগের ঘোষণা আসে, যেটিকে ছওয়াব স্বাগত জানিয়েছে।”

    তিনি আরও জানান, সেড নির্মাণস্থলটি আগে থেকেই একটি খেলার মাঠ ছিল। সেখানে কোনো বন, গাছপালা বা পাহাড় ছিল না। এমনকি রোহিঙ্গাদের খেলাধুলার জন্য বিকল্প একটি মাঠও তৈরি করে দিয়েছে ছওয়াব। ফলে বন কাটা বা পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

    সেড নির্মাণস্থলের আশপাশের রোহিঙ্গারা জানান, “এই জায়গাটা আগে হাতির ডেরা ছিল, পরে যুবকরা ভরাট করে খেলার মাঠ বানায়। এখানে কোনো গাছ ছিল না। এখন পাহাড়ধসে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলো এখানে আসছে, আমরা তাদের পাশে আছি।”

    ছওয়াবের জেলা কো-অর্ডিনেটর আবু সাদাত আহমেদ নোহ বলেন, “২০১৭ সাল থেকে আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছি। ক্যাম্প-১৪ এর ৫টি ব্লকের ৩২২টি অতিঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের মধ্যে ১৫০টি পরিবারকে বর্ষার আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ব্লক ই-৩ তে সেড নির্মাণ করা হচ্ছে, যেখানে পানি, স্যানিটেশন ও অন্যান্য সুবিধাও নিশ্চিত করা হবে।”

    ক্যাম্প-১৪-এর ইনচার্জ ফারুক আল মাসুম বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের সরানো এখন খুব জরুরি। এনজিও ছওয়াব এই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে, যা বর্ষার আগে বাস্তবায়িত হলে প্রাণহানি কমবে। অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে কিছু মহল থেকে।”

    ছওয়াব জানিয়েছে, প্রকল্পটি এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, শেল্টার সেক্টর এবং ক্যাম্প ইনচার্জের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের ভিত্তিতেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি জেআরপি (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান)–এর আওতায়ও এসেছে।

    প্রতিষ্ঠানটির দাবি, “মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা আশা করি, পত্রিকা সংশোধনী প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দূর করবে এবং প্রকৃত তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরবে।

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…