বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় নেশার টাকা না পেয়ে আপন নাতি মো. আশিক হোসেন ওরফে রানার লাঠির আঘাতে বৃদ্ধ দাদা শাবান উদ্দিন ফকির (৬৮) মৃত্যুবরণ করেছেন।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা। মৃত শাবান উদ্দিন ফকির একই গ্রামের মৃত নবির উদ্দিনের ছেলে।
এদিকে নাতি মো. আশিক হোসেন রানা (৩০) দাদাকে হত্যা করে এসে নিজেই শেরপুর থানায় আত্মসমর্পণ করে। সে মো. আবু সাঈদ ওরফে সাইফুল ইসলামের একমাত্র ছেলে।
তার মুখ থেকে শুনেই শেরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদকাসক্ত রানা ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে নেশা করার জন্য তার দাদার কাছে টাকা চায়। দাদা শাবান উদ্দিন তাকে টাকা না দেওয়ায় মাদকাসক্ত রানা তৎক্ষণাৎ তাকে মারধর করে। এতে বৃদ্ধের শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ফোলা জখম হয়।
এরপর দাদা শাবান উদ্দিন কিছু সময় পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য স্থানীয় ছোনকা বাজারের দিকে রওনা দিলে সকাল সাড়ে আটটার দিকে পথিমধ্য আবারো নাতি রানা গাছের শক্ত ডাল দিয়ে উপর্যুপরি মাথায় আঘাত করতে থাকে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
এ সময় আশেপাশের লোকজন চিৎকার দিয়ে এগিয়ে আসলে রানা দ্রুত পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে রানা শেরপুর থানায় এসে মার্ডার করেছে মর্মে পুলিশকে জানিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মইনুদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জয়নুল আবেদিন, উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম সহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হত্যাকান্ডের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ দুলাল হোসেন জানান, ‘রানা সকালে আমার বড় ভাই শাবান উদ্দিনের কাছে টাকা চায়। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় সকালে প্রথম দফা মারধর করে। এরপর বড় ভাই চিকিৎসার জন্য বাজারের দিকে যাচ্ছিল , এ সময় আবারও রানা শক্ত লাঠি দিয়ে উপুর্যপুরি আঘাত করে তাকে হত্যা করে।’
তাছাড়া এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মইনুদ্দিন জানান, ‘হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃতদেহ উদ্ধারপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে, রানা থানায় আত্মসমর্পণ করে এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে বলে দায় স্বীকার করেন।’
এসএম