১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
ড্রামের তালে তালে সারিবদ্ধ পদচারণা, শৃঙ্খলাপূর্ণ কদম আর লাল-সবুজ পতাকার উড়াউড়িতে পুরো মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কেউই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা সরাসরি না দেখলেও ইতিহাস পড়েই শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল বিজয়ের গর্ব ও দেশপ্রেমের দৃঢ়তা।
কুচকাওয়াজ পর্বে অংশগ্রহন করতে আসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দল গুলো বিধি মোতাবেকভাবে তাদের কুচকাওয়াজ শেষ করে। প্রতিবারের মত এবারো ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ বিএনসিসি শাখা ও ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বিএনসিসি শাখা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ছোট্ট সোনামনিরাও এতে অংশ নেয়। এরপরই শুরু হয় ডিসপ্লে পর্ব। এই পর্বে শিক্ষার্থীরা আবহমান গ্রাম বাংলার চিত্র তুলে ধরে। নাচ ও গানের মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষতার সাক্ষ্য দেন। বিভিন্নভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ তুলে ধরেন তারা। সেই সাথে নাটকের মাধ্যমে প্রতিবছরই সেই ১৯৭১ সালের ভয়াল দিনগুলোর কথা মনেও করিয়ে দিলেও এবার এসেছে ভিন্নতা। রাজাকার আলবদরদের নিপিড়ন ও পাকিস্তানি বাহিনীর নির্বিচারে মানুষ হত্যার চিত্র দেখাতে ব্যার্থ হয়েছেন।
কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, “আজ কুচকাওয়াজে অংশ নিতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
অনুষ্ঠান উপভোগ করতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান, সহকারী কমিশনার ভূমি মো রাজিব হোসেন, অফিসার ইনচার্জ সাব্বির রহমান, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্বের বিচারকের দ্বায়িত্ব পালন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান, উপজেলা মৎস কর্মকর্তা, রিমা আক্তার,। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বলেন, বিজয় দিবসের এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে শৃঙ্খলা, দেশপ্রেম ও জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাংলার দামাল সন্তানেরা। সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের স্মৃতিকে ধারণ করতেই প্রতিবছর রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বিজয়ের ৫৩ বছরে দাঁড়িয়ে ভূঞাপুরের এই স্কুল মাঠের কুচকাওয়াজ যেন কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার এক নীরব প্রস্তুতি।
এসআর