পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ‘অনুমোদনবিহীন’ স্কয়ার ক্লিনিকে অপারেশনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে কৃষ্ণা রানী নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুনানি গ্রহণ ও লিখিত বক্তব্য সংগ্রহের মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে নীলফামারীতে কৃষ্ণা রানীর মৃত্যু হয়। দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার করতোয়া সেতু টোল পয়েন্ট সংলগ্ন দেবীগঞ্জ স্কয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশনের মাধ্যমে তার কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। অপারেশনের পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও সময়মতো চিকিৎসক উপস্থিত না থাকা, পর্যাপ্ত জরুরি সেবা না পাওয়া এবং দ্রুত রেফার না করার অভিযোগ ওঠে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সে সময় সময়ের কণ্ঠস্বরসহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
ঘটনার পর প্রশাসন দেবীগঞ্জ স্কয়ার ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। পরে লাইসেন্স পাওয়ায় কিছুদিন পর সেখানে পুনরায় সিজার কার্যক্রম শুরু হয়, যা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে স্থানীয়দের মধ্যে। এর আগেও ওই ক্লিনিকে অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পর অন্তত তিন নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ছিল।
পরবর্তীতে প্রকাশিত সংবাদগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টার দপ্তরের দৃষ্টিগোচর হলে বিষয়টি তদন্তের জন্য সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. মো. আমীর হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো: লুৎফুল কবির এবং সদস্য হিসেবে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. আফিফা জিন্নাত আফি দায়িত্ব পান।
পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শুনানিতে ক্লিনিকের মালিক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. শিখা মনি ও ডা. রুহুল আমিন রুপু, তৎকালীন নার্সবৃন্দ, নিহত প্রসূতির স্বামী দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দেবীডুবা এলাকার ধর্ম নারায়ণ এবং সময়ের কণ্ঠস্বরের পঞ্চগড় প্রতিনিধি নাজমুস সাকিব মুন উপস্থিত থেকে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন।
তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাখিলকৃত বক্তব্য ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে দ্রুত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
ইখা