খুলনার খালিশপুরের হাজী মুহাম্মদ মুহসিন কলেজের আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলায় ২১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রোমানা তানহা।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— সৈকত, মো. মেহেদী হাসান রাব্বি, অন্তু, মো. সাজ্জাত হোসেন, ইমদাদুল ইসলাম হৃদয়, মো. আরিফ ওরফে চোরা আরিফ, মো. মুন্না, রফিকুল হাসান শাওন ওরফে আতাং বাবু, মো. সাইফুল, মো. মোস্তাক আহমেদ, মিঠাই হৃদয়, মো. ফাহিম ওরফে কালা ফাহিম, রুবেল, মো. মিজানুর রহমান, সবুজ, মো. ফয়েজুর রহমান আরাফাত, তুষার আশিকুর রহমান মোল্লা, রাব্বি ওরফে নাটা রাব্বি, নাইম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু, ইয়াছির রাব্বি ওরফে জুয়েল ওরফে নাটা জুয়েল, সাকিব শেখ ও নাঈমুর রহমান ফাহিম।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. তুষার, রায়হান, রুনু হওলাদার, নাইম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু ও সালমান।
জানা যায়, চলতি বছরের ৭ মার্চ থেকে নগরীর খালিশপুরে আলোচিত কলেজ ছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করেন। জীবনের নিরাপত্তার অভাবে মামলার বাদী ও নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান শিকদার একাধিকবার বিভিন্ন থানায় জিডি করেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর ওই একই আদালতে চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাত আনুমানিক সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর খালিশপুর ক্রিয়েটিভ কার্টস এ্যান্ড কফি হাউজের মধ্যে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে তোয়াবা কলোনীর মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে হাসিবুর রহমানকে। এ সময় তাকে বাঁচানোর জন্য দুই যুবক যোবায়ের ও রানা এগিয়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজটি ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান ঘটনার পরের দিন বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।