২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদর দফতর পিলখানায় ঘটে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন কোনো তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে না, কারণ এ বিষয়ে দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন না করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গড়িমসি করছে।
তদন্ত কমিশনের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলনের চাপে সেদিনই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার পর পিলখানা সদর দফতরে গুলির শব্দ শোনা যায়। বিডিআর সপ্তাহের কর্মসূচি চলায় প্রথমে এটি রুটিন অনুশীলন মনে হলেও কিছু সময়ের মধ্যেই বিদ্রোহের খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্রোহীরা পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে।
সরকার বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম, এবং সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
বিদ্রোহ দমনে প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পিলখানার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিদ্রোহ শেষ হয়। পিলখানা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ বহু মানুষের লাশ।
এই বর্বর হত্যাকাণ্ড পুরো জাতিকে হতবাক করে দেয়। ঘটনাটি সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়। ঘটনার পর বাংলাদেশ রাইফেলসের নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়।
এসএফ