এইমাত্র
  • না ফেরার দেশে চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান
  • এক মাহফিলে প্রখ্যাত ৬ আলেম
  • নতুন ভাইরাস এইচএমপিভি, মহামারীর আতঙ্ক
  • সাকিবকে ফেরাতে আরেকটা চেষ্টা করবে বিসিবি
  • ৫ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার ৯০ শতাংশ সফল : প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব
  • দেশে যেন কখনোই ফ্যাসিবাদ ফিরতে না পারে: গণপূর্ত উপদেষ্টা
  • ফটিকছড়ির সীমান্তে ৮টি ভারতীয় গরুসহ যুবক আটক
  • ভৈরবে গৃহবধূকে গণধর্ষনের অভিযোগে থানায় মামলা, গ্রেফতার ১
  • বিগত সরকার ভারতের স্বার্থরক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিল: চরমোনাই পীর
  • ফুলবাড়ীতে গাঁজাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেফতার
  • আজ শনিবার, ২০ পৌষ, ১৪৩১ | ৪ জানুয়ারি, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    ভেজাল গুড়ে বাড়াচ্ছে ক্যান্সার ঝুঁকি

    মো. আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
    মো. আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম

    ভেজাল গুড়ে বাড়াচ্ছে ক্যান্সার ঝুঁকি

    মো. আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম

    চাঁপাইনবাবগঞ্জে আখের রসে ভারতীয় আমদানিকৃত নিম্নমানের চিনি মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল গুড়। প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে না দেখায় ভেজাল গুড়ের জমজমাট ব্যবসা চলছেই। যা আবার যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতে। অধিক মুনাফার লোভে অসাধু ব্যবসায়ীরা এই কাজ করে আসছে অভিযোগ স্থানীয়দের।

    সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব গুড় খেলে হতে পারে কিডনী নষ্টসহ ক্যানসারের মত মরণব্যাধি রোগ। যদিও দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের।

    সরেজমিনে সড়কের দুইপাশে যত্রতত্র পাত্রে জ্বাল দেওয়া হচ্ছে আখের রস। রস লালচে হয়ে এলেই; তাতে মেশানো হচ্ছে ভারত থেকে আমদানিকৃত নিম্নমানের চিনি। শুধু তাই নয়; আখের রসে চিনির পাশাপাশি মেশানো হচ্ছে চুন, সোডা ও হাইড্রোজ এবং বিভিন্ন রং। আগুনের তাপে গলে গলে আখের রসে মিশে যাচ্ছে সেই চিনি। এভাবেই প্রকাশ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যত্রতত্র তৈরি হচ্ছে আখের রসের ভেজাল গুড়।চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পুটিমারি বিল, নাককাটিতলা, বিরামপুর, ধাইনগরসহ বিভিন্ন সড়কে ও আখক্ষেতের পাশে গুড় তৈরির এমন দৃশ্যের দেখা মেলে হর-হামেশায়।

    স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক বছর ধরে এভাবেই তৈরি হচ্ছে আখের রস থেকে ভেজাল গুড়। যা দেদারসে বিক্রি হচ্ছে হাট-বাজার ও কানসাটের বিভিন্ন আড়তে। পরবর্তীতে যা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও। আর বিষয়টি প্রশাসন খতিয়ে না দেখায় ভেজাল গুড়ের জমজমাট ব্যবসা চলছেই।

    কৃষি উদ্যোক্তা ইসমাইল খান শামীম রেজা বলেন, এটা আমরা বিগত কয়েকবছর ধরে দেখছি শিবগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ পুটিমারি বিলে আখ উৎপাদন হয়ে থাকে। আর আখের গুড় উৎপাদনের সময় এই চিনি ব্যবহার করে থাকে। তো এ চিনিটি আসলে কি তা আমরা বুঝতে পারছি না। এটাতো পাশ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। আমার মনে হয় প্রশাসনের যারা আছে এটার একটু তদারকি করা উচিত। কারণ প্রচুর পরিমাণে চাষিরা গুড়ে ভেজাল দেয়ার জন্য এই চিনিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এরকম ব্যাপক আকারে যদি ভেজাল গুড় তৈরি করা হয়। তাহলে ভোক্তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ তারা নিরাপদ খাবার থেকে বঞ্চিত হবে।

    চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েসনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, আামরা গুড় খায় বলতে পুরো আখের রস থেকে যেটা আসলে হয়। আর সেটাই শুদ্ধ। কিন্তু মানুষের মধ্যে ঢুকেিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা না মেশালে গুড় উৎপাদন হবে না। এভাবে কোন কিছু মেশালে সেটা আসলে বিশুদ্ধ গুড় হচ্ছে না। এবং এটা স্বাস্থ্যসম্মত কি না; সেটাও আমরা জানছি না।

    তিনি আরও বলেন,আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে চাই। জনস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে; এটা আসলে মাঠ পর্যায়ে কি হচ্ছে। সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

    আখচাষি আতাউর রহমান বলেন,গুড়ের দানা কম হওয়ার কারণে চিনিটি দিচ্ছি। চিনি দিলে গুড়টি টাইট হচ্ছে এবং জমছে, ভারিও হচ্ছে। এটা ক্ষতিকর কি পুষ্টিকর তা আমার জানা নেই। বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করছে। সেখান থেকে আমরা কিনে দুই বছর থেকে ব্যবহার করছি।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক চাষি বলেন,গাছ প্রপ্তবয়স্ক না হওয়ার কারণে গুড় মিষ্টি হচ্ছে না। জমাট বাধছে না। বিধেই এই চিনি ব্যবহার করছি। সেটা স্বাস্থ্যসম্মত কি না। আমরা তা জানি না। সবাই ব্যবহার করছে। আমিও করছি।

    তবে আখচাষি ও উৎপাদনকারীদের দাবি এ সময়ের অপরিপক্ক আখের রসের গুড় ঠিকমতো জমাট বাঁধে না। লাভের আশায় ও গুড় জমাতেই তাঁরা অপরিশোধিত এসব চিনি ব্যবহার করেন। তবে আমদানিকৃত এসব চিনি স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা জানেন না।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে আমদানির অনুমতি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। কিন্ত গত দুই বছর ধরে গুড়ের আড়ালে টিনভর্তি অপরিশোধিত এসব চিনি ভারত থেকে প্রতিদিন শত শত টন আমদানি করা হয় সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে।

    জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা, মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,ভারত থেকে আনা গুড়টি আমরা পরীক্ষা করার জন্য সেখানে একাধিকবার গিয়েছি। কিন্তু কাষ্টম কর্তৃপক্ষের কোন সহযোগিতা পায়নি। যার কারণে ল্যাবে সেই গুড়গুলো টেষ্ট করা যায়নি।

    তবে নিরাপাদ খাদ্যের এই কর্মকর্তা আখের গুড়ের সাথে ভারত থেকে আনা অপরিশোধিত চিনি মিক্স করাকে অপরাধ বলে স্বীকার করেছেন। এছাড়া আখের গুড়ে শুধুমাত্র আখের রস ছাড়া চুন,সোডা,হাইডোজ ও কাপড়ের রঙের মিশ্রন করলে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

    মানবদেহে এটি কতটা ঝঁুকিপূর্ণ তা নিয়ে জানতে চাইলে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের,সিভিল সার্জন,ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ সময়ের আলোকে বলেন,‘এসব গুড় খেলে হতে পারে কিডনী নষ্টসহ ক্যানসারের মত মরণব্যাধি রোগ। তাই গুড় খাওয়ার আগে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।তা না হলে,এসব রোগ আমাদের দেহে বাসা বাঁধবে।’

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…